ড্র করলেই চলত। তবে ঘরের মাঠে দাপুটে জয় দিয়ে প্রিমিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করল লিভারপুল। রবিবার অ্যানফিল্ডে টটেনহ্যামকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রিমিয়র লিগের খেতাব ঘরে তুলল তারা। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ মরশুমে প্রথমবার প্রিমিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল। এবার ২০২৪-২৫ মরশুমের ট্রফি ঢুকল লিভারপুলের ঘরে।
উল্লেখ্য, চারটি ম্যাচ বাকি থাকতেই প্রিমিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করল লিভারপুল। ২০ দলের টুর্নামেন্টে প্রতিটি দল হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ৩৮টি করে ম্যাচ খেলে। ৩৪ ম্যাচের শেষে লিভারপুলের সংগ্রহে রয়েছে ৮২ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের সংগ্রহে রয়েছে ৩৪ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট। সুতরাং, শেষ ৪টি ম্যাচ জিতে ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করলে অর্সেনাল পৌঁছবে ৭৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ, লিভারপুলকে ছোঁয়া সম্ভব হবে না তাদের পক্ষে। বাকিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায় লিভারপুলের লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা নিশ্চিত হয়ে যায় এবং তাদের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হয় প্রিমিয়র লিগ কর্তৃপক্ষের তরফে।
প্রিমিয়র লিগের প্রাইজ মানি
এই অবস্থায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে আগ্রহ জন্মানো স্বাভাবিক যে, প্রিমিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কত টাকা পুরস্কার পাবে লিভারপুল? এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে, প্রিমিয়র লিগের চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি ও মেডেল পায় নিয়ম মতো। তবে আলাদা করে চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য কোনও পুরস্কার মূল্য নেই প্রিমিয়র লিগে।
তবে কি চ্যাম্পিয়ন হয়ে লিভারপুল কোনও টাকা পাবে না? তেমনটা নয় মোটেও। প্রিমিয়র লিগের পুরস্কার মূল্য নির্ধারিত হয় একটু জটিলভাবে। মোট ৬টি ভাগে প্রিমিয়র লিগে অংশ নেওয়া দলগুলিকে অর্থ দেওয়া হয়। ৩টি বিভাগ সবার জন্য সমান। ১টি বিভাগ নির্ভর করে বিভিন্ন শর্তের উপর। বাকি ২টি মেরিট অনুযায়ী। অর্থাৎ, লিগ টেবিলের কত নম্বরে থাকে, সেই অনুযায়ী সমান হারে বাড়ে টাকার অঙ্ক।
খুব সহজে বোঝাতে হলে আনুমানিক একটা অঙ্ককে একক করা যায়। ধরে নেওয়া যাক লিগ টেবিলের প্রতিটি ধাপের জন্য যদি ১ টাকা করে বরাদ্দ থাকে, তাহলে একেবারে শেষে ২০ নম্বরে থাকা দল পাবে ১ টাকা। ১৯ নম্বরে থাকা দল পাবে (১+১) ২ টাকা। ১৮ নম্বরে থাকা দল পাবে (১+১+১) ৩ টাকা। সেই নিরিখে ২০ দলের লিগ টেবিলের এক নম্বরে থাকে দল পাবে ২০ টাকা।
কোন কোন বিভাগে অর্থ দেওয়া হয় ক্লাবগুলিকে
প্রথমত, ঘরোয়া (ইংল্যান্ডে) ব্রডকাস্টিং রাইটস থেকে পাওয়া অর্থের সমান লভ্যাংশ পায় ২০টি দল। এক্ষেত্রে টাকার অঙ্কের কোনও হেরফের হয় না। গত বছর এই নিরিখে প্রতিটি দলকে দেওয়া হয়েছিল ৩১.২ মিলিয়ন পাউন্ড বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৫৫ কোটি টাকা করে।
দ্বিতীয়ত, ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং রাইটস থেকে পাওয়া অর্থের সমান লভ্যাংশ পায় ২০টি দল। এক্ষেত্রেও টাকার অঙ্কের কোনও হেরফের হয় না। গত বছর এই নিরিখে প্রতিটি দলকে দেওয়া হয়েছিল ৫৫.৭ মিলিয়ন পাউন্ড বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৩৩ কোটি টাকা করে।
তৃতীয়ত, লিগের বিজ্ঞাপণী আয়ের সমান লভ্যাংশ পায় ২০টি দল। এক্ষেত্রেও টাকার অঙ্কের কোনও হেরফের হয় না। গত বছর এই নিরিখে প্রতিটি দলকে দেওয়া হয়েছিল ৮.২ মিলিয়ন পাউন্ড বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৩ কোটি টাকা করে।
চতুর্থত, দলগুলির ক'টি করে ম্যাচ ইংল্যান্ডে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে, সেই অনুযায়ী আলাদা টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার অঙ্ক বিভিন্ন দলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হয়ে থাকে। যাদের ম্যাচ বেশি দেখানো হয়, তারা বেশি অর্থ পায়।
পঞ্চমত, ইউকের সম্প্রচার স্বত্ব থেকে লিগ টেবিলের অবস্থানের নিরিখে অর্থ দেওয়া হয় দলগুলিকে। গত বছর প্রতিটি স্থানের জন্য ১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, শেষে থাকা দল পায় ১৯ কোটি টাকা ও শীর্ষে থাকা দল পায় এর ২০ গুণ অর্থ।
ষষ্ঠত, আন্তর্জাতিক সম্প্রচার স্বত্ব থেকে লিগ টেবিলের অবস্থানের নিরিখে অর্থ দেওয়া হয় দলগুলিকে। গত বছর প্রতিটি স্থানের জন্য ১.১ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, শেষে থাকা দল পায় প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ও শীর্ষে থাকা দল পায় এর ২০ গুণ অর্থ।
পঞ্চম ও ষষ্ঠ বিভাগ মিলিয়ে লিগ টেবিলে প্রতিটি ধাপের জন্য ২.৮ মিলিয়ন পাউন্ড করে তফাৎ হয় পুরস্কার মূল্যে। এবছর যদি সেই একই হারে পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে লিভারপুল পাবে ৫৬.৪ মিলিয়ন পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৪১ কোটি টাকা।
গতবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি সব বিভাগ মিলিয়ে মোট ১৭৫.৯ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থ ঘরে তোলে। লিভারপুল যদি এবছর সেরকমই অর্থ পায়, তবে তারা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা পকেটে পুরবে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।