মোহনবাগান দলের সর্বকালের সেরা নায়ক কে? কেউ বলবেন সুব্রত ভট্টাচার্য। আবার বর্তমান সময়ের যারা উঠতি মোহনবাগান সমর্থক তাঁদেরকে বলতে শোনা যায় পেত্রাতোস বা সনি নর্দির কথা। কিন্তু মোহনবাগানের যারা সাচ্চা সমর্থক, তাঁরা আজ আইএসএলের ব্যাক টু ব্যাক শিল্ড জয়ের আনন্দের মাঝেও ভোলেননি এই ব্রাজিলিয়ানের কথা, তিনি জোসে রামিরেস ব্যারেটো।
সোনালি যুগ বাগানকে দিয়েছেন ব্যারেটো
মোহনবাগান দলের সর্বকালের সেরা তারকাদের মধ্যে অন্যতম ব্রাজিলিয়ান ব্যারেটো। যখন তিনি ১৯৯৯ সাল নাগাদ মোহনবাগানে ট্রায়ালে এসেছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গেই ট্রায়ালে ছিলেন আফ্রিকান অ্যালেক্সরা। যদিও শেষ পর্যন্ত মোহনবাগান সমর্থকরা সৌভাগ্যবশত পেয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ব্যারেটোকে, এরপর আসতে আসতে তিনি হয়ে উঠলেন মোহনবাগান জনতার আশা ভরসা।
ভরসার নাম, ভালোবাসার নাম ব্যারেটো
কেউ ব্যারেটোকে ডাকতেন সবুজ তোতা বলে, কারোর কাছে তিনি ব্রাজিলিয়ান জেসাস। আবার কেউ তাঁকে ভালোবেসে বলতেন বাগানের নয়নের মণি, কোনও কোনও মোহনবাগানির কাছে তিনিই ছিলেন প্রাণভোমরার মতো। কিন্তু সেই ব্যারোটাই হঠাৎ করে মোহনবাগান ছেড়েছিলেন ২০০৪ সালে। কর্তাদের সঙ্গে বিবাদে নিজের প্রিয় দলকে ছেড়ে যেতে কষ্টটা কম হয়নি তাঁরও। সেই স্মৃতি আজও মনে টাটকা এই ব্রাজিলিয়ানের।
প্রাক্তন শাসক গোষ্ঠির ওপর এখনও ক্ষুব্ধ ব্যারেটো?
সম্প্রতি রেভ স্পোর্টসের এক পডকাস্টে উপস্থিত হয়েছিলেন জোসে রামিরেস ব্যারেটো। সেখানে তিনি নাম না করলেও আঙুল তুললেন বাগানের আগের শাসক গোষ্ঠি বলরাম চৌধুরিদের দিকেই। ব্যারেটো বলছিলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে। আমার সঙ্গে সমর্থকদের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করার চেষ্টা চলছিল। যদিও আমি সেই সময়ের কথা খুব বেশি বলতে চাই না, তবে আমার মনে হয় ওই সময় আমার ক্লাব ছাড়াটাই ঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ কর্তারা আমার ভালো চাইছিল না। আর আমায় সমর্থকরা ভালোবাসা সত্ত্বেও একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছিল ’। এরপর চুক্তিভঙ্গের কারণ দেখিয়ে মোহনবাগান সাসপেন্ডও করেছিল ব্যারেটোকে।
বাগানে প্রত্যাবর্তন ব্যারেটোর
২০০৫ সাল নাগাদ টুটু বসু গোষ্ঠি ক্ষমতায় আসে, পালাবদল হয় মোহনবাগানের শাসক গোষ্ঠির। আর তাতেই বাগান সভাপতি জানিয়ে দেন ব্যারেটোও খেলবেন, ভাইচুংও খেলবেন একই সঙ্গে। এরপরই ২০০৬ সাল থেকে শুরু ব্যারেটো-ভাইচুং জুটির মোহনবাগানে পথ চলা। এরপর ফেডারেশন কাপ, সুপার কাপ, কলকাতা লিগ জিতেছেন মোহনবাগানের হয়ে। যখন একে একে বিদেশিরাও ফ্লপ হয়েছেন, তখনও বাগান জনতার শীত গ্রীষ্ম বর্ষার রক্ষারক্তা হিসেবে বছরের পর বছর হাল ধরে গেছেন সবুজ তোতাই।
ভালো ড্রেসিংরুমের জন্যই সাফল্য-
বর্তমানে ব্যারেটো কাজ করেন মুম্বইয়ের রিলায়েন্স অ্যাকাডেমির সঙ্গে। মুম্বইতেই থাকেন স্ত্রী ভেরোনিকা, কন্যা নাতালিয়া, ইসাবেলা, পুত্র জনরা। তবুও মোহনবাগানের খেলা হলেই তিনি টিভির সামনে বসে পড়েন। শিল্ড জয়ী দলের সমস্ত তথ্যই তাঁর ঠোটস্থ। বাগানের সাম্প্রতিক সাফল্যের জন্য মোলিনা বা হাবাসের কোচিং শুধু নয়, ড্রেসিংরুমের খোলামেলা পরিবেশকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন সবুজ তোতা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।