'ইয়ার নেহি লুট লিয়া!' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এবং স্টারলিঙ্ক নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চাড্ডা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরই বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ‘ছাড় যুক্ত পারস্পরিক শুল্ক’ নীতি মেনে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ কর চাপানোর কথা ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, দেশের বাজারে পা রাখাতে চলেছে বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের তথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘কিচেন ক্যাবিনেট’-এর সদস্য ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্ক। ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন পরিষেবা প্রদানকারী দু’টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে তাঁর এই কোম্পানি। ভারতীয় সংস্থা দু’টি হল ভারতী এয়ারটেল এবং জিয়ো।এই আবহে দুটি বিষয় নিয়ে রাজ্যসভায় সরব হয়েছেন রাঘব চাড্ডা। (আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটের আগে জোর ধাক্কা, ওয়াকফ ইস্যুতে শাসক দল ছাড়লেন ২ নেতা)
আরও পড়ুন-'অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে।' ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে কী ব্যবস্থা কেন্দ্রের? প্রশ্ন রাহুলের
কেন্দ্রকে নিশানা করে আপ সাংসদ বলেন, 'আমার ভালবাসার জন্য তুমি আমাকে ভাল প্রতিদান দিয়েছো। এক বন্ধু আরেক বন্ধুর বাড়ি ডাকাতি করেছে।' তিনি বলেন, ভারত মার্কিন কোম্পানিগুলিকে বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত ক্ষেত্র দিয়েছে, কিন্তু বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে।ভারত সম্প্রতি 'গুগল ট্যাক্স' অর্থাৎ ইক্যুয়ালাইজেশন লেভি অপসারণ করেছে, যার কারণে গুগল, মেটা এবং অ্যামাজনের মতো মার্কিন সংস্থাগুলি হাজার হাজার কোটি টাকা লাভবান হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক বাড়িয়েছে, যার ফলে ভারত ৫০-১০০ বেসিস পয়েন্টের জিডিপি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।রাঘবের দাবি, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অটল আনুগত্য এবং বন্ধুত্ব দেখিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে যা ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাঁর কথায়, 'ভারত মার্কেজিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রেড কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে, কিন্তু বিনিময়ে আমরা শুল্ক পেয়েছি।'এরপরেই তিনি বলিউডের গান 'আচ্ছা সিলা দিয়া তুনে মেরে প্যার কা, ইয়ার নে হি লুট লিয়া ঘর ইয়ার কা...' এর কয়েকটি লাইন গান। (আরও পড়ুন: দিনহাটায় বিএসএফের গুলিতে নিহত ১ পাচারকারী, উদয়নের 'অন্য দাবি' ঘিরে বিতর্ক)
আরও পড়ুন: শুল্ক ছুরিতে রক্তাক্ত US শেয়ার বাজার, কেন নাসডাক পড়ল ৬%, ডাও জোনস ১৬৭৯ পয়েন্ট?
আপ নেতা আরও বলেন, ভারতে ব্রডব্যান্ড পরিষেবার জন্য ইলন মাস্কের সংস্থা স্টারলিঙ্ককে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হতে পারে। সরকারের উচিত এটি বন্ধ করা এবং শুল্ক নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করা।তিনি বলেন, স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে ভারতের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের সময়, ইলন মাস্ক নিজেই বলেছিলেন যে স্টারলিঙ্ক ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর মেরুদণ্ড। ভবিষ্যতে যদি ভারত কোনও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে কি স্টারলিঙ্ককে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না? রাঘব চাড্ডা বলেন, আন্দামানে সম্প্রতি ৬০০০ কেজি মাদক বাজেয়াপ্তের সময় দেখা গেছে যে, মায়ানমারের পাচারকারীরা স্টারলিঙ্ক ব্যবহার করেছিল। তিনি বলেন, ভারত সরকার যখন এই বিষয়ে স্টারলিঙ্কের কাছে তথ্য চেয়েছিল, তখন সংস্থাটি 'ডেটা গোপনীয়তা আইন' উল্লেখ করে তথ্য দিতে অস্বীকার করে। তিনি আরও বলেন, ভারতের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সরকারের উচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি করা এবং স্টারলিঙ্কের অনুমোদন পুনর্বিবেচনা করা।