উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড়ের আকস্মিক পদত্যাগে দেশের রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তাঁর এই অনভিপ্রেত সিদ্ধান্তে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএও বিস্মিত। জগদীপ ধনখড় অবশ্য ইস্তফার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন শারীরিক অসুস্থতা। কিন্তু তা আদৌ ‘আসল’ কারণ কিনা তা নিয়ে চলছে জল্পনা। সূত্রের খবর, এনডিএ জোট আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন উপরাষ্ট্রপতির জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে আলোচনা শুরু করবে। এরইমাঝে জল্পনা শুরু হয়েছে, কে বসবেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে। তালিকায় উঠে আসছে একাধিক নাম।ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, যদি উপরাষ্ট্রপতি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তাহলে তাঁর পদ পূরণের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।নির্বাচন শূন্য হওয়ার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এই নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব, বিশেষ করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান অথবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত রাজ্যসভার অন্য কোনও সদস্য দ্বারা পালন করা হয়। জানা যাচ্ছে, ধনখড়ের মতোই কোনও বর্তমান রাজ্যপাল, অথবা সংগঠনের অভিজ্ঞ নেতা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাউকে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিজেপির হাতে বিকল্পের অভাব নেই।নীতীশ কুমার জগদীপ ধনখড়ের আচমকা পদত্যাগের পর এখন পরবর্তী প্রার্থীর সন্ধান শুরু। জল্পনায় উঠে আসছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নাম। চলতি বছরের শেষেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তাই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে তাঁকে সরাসরি উপরাষ্ট্রপতি পদে এনে, বিহারে বিজেপির মুখ বসাতে তৎপর গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান এনডিএ ছাড়ার জল্পনায় শিলমোহর দিয়েছেন। সো প্রতি চিরাগ বলেন, 'বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে আমি লড়ব। আমি লড়ব কথাটা বলার অর্থ হল রাজ্যের ২৪৩ আসনেই আমি প্রার্থী দেব।' অবশ্য নীতীশের নাম উঠে আসলেও তিনি উপরাষ্ট্রপতির পদ নিতে রাজি হবেন কিনা তা নিয়েও উঠে যাচ্ছে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। কারণ ওয়াকিবহাল মহল বলছে, তিনি বিহার থেকে সরে দাঁড়ালে রাজ্যের রাজনীতিতে তাঁর ছেলে নিশান্ত কুমারের জমি শক্ত করার লড়াই কঠিন হয়ে যাবে।ভি কে সাক্সেনা উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে উঠে আসছে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয়কুমার সাক্সেনার নামও। কিছুদিন ধরেই তাঁকে 'বড় দায়িত্ব' পালনের জন্য সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ভি কে সাক্সেনা দিল্লির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তৎকালীন আপ সরকারের একাধিক পদক্ষেপে বাধা দিয়েছিলেন তিনি। নিয়োগ থেকে শুরু করে দিল্লি জল বোর্ড, সাক্সেনা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ান। মনে করা হয়, এই লড়াই দিল্লির নির্বাচনে কেজরিওয়ালের পরাজয়ের অন্যতম কারণ।মনোজ সিনহা ধনখড়ের জায়গায় পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে জল্পনা। সম্ভাব্য নাম হিসেবে উঠে আসছে জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর , মনোজ সিনহার নাম।অনেকেই মনে করছেন যে উত্তরপ্রদেশের বিষয়টি বিবেচনা করে মনোজ সিনহাকে বিজেপি এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারে। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের প্রবীণ বিজেপি নেতা সিনহার ৩৭০ ধারা বাতিলের পর উপত্যকায় স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অবদান রয়েছে। তবে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার দায় কিছুটা হলে তাঁর উপরেই গিয়েছে।