দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি ক্ষমতায় ফিরলেই অনুপ্রবেশকারী ও বেআইনিভাবে আমেরিকায় বসবাসকারী বিদেশিদের তাঁদের দেশে ফেরত পাঠাবেন। ইতিমধ্য়েই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটেই সামনে এল একটি ছবি। যা প্রকাশ করা হয়েছে হোয়াইট হাউসের তরফে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু মানুষকে সারিবদ্ধ করে বিমানে তোলা হচ্ছে। তাঁদের সকলের কোমরে বাঁধা রয়েছে চেন। ছবির ক্যাপশনে উপরের অংশে লেখা রয়েছে - 'প্রতিশ্রুতি করা হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি রাখা হল।' এবং নীচের অংশে লেখা রয়েছে - 'ফেরত পাঠানোর বিমানের যাত্রা শুরু'।
এর থেকেই স্পষ্ট ছবিতে যে মানুষগুলিকে কোমরে চেন বাঁধা অবস্থায় বিমানের দিকে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা সকলেই আদতে বেআইনিভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছিলেন বা সেখানে অবৈধভাবে থাকছিলেন। এই ছবি নিয়ে ইতিমধ্য়েই নানা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার মসনদে ফিরেছেন গত ২০ জানুয়ারি। তারপর কেটে গিয়েছে আরও তিনটি দিন। আর তারপরই শুক্রবার গণহারে অনুপ্রবেশকারী এবং বেআইনিভাবে আমেরিকায় বসবাসকারী বিদেশিদের গ্রেফতার করে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় মার্কিন প্রশাসন।
বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া পোস্ট ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এখনও পর্যন্ত এভাবে অন্তত ৫৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং তাঁদের সকলকেই স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে।
পরবর্তীতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট জানান, মোট ৫৩৮ জন বেআইনি অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কয়েকশো অনুপ্রবেশকারীকে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে ক্যারোলিন বলেন, 'ট্রাম্প প্রশাসন ৫৩৮ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে অপরাধীরা রয়েছে। এমনকী, একজন সম্ভাব্য জঙ্গিও রয়েছে। ট্রেন দে আরাগুআয়া গ্যাংয়ের চারজন সদস্য রয়েছে। এবং এমন আরও বহু ব্যক্তি রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে নাবালক ও নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।'
ক্যারোলিন বলেন, ইতিমধ্য়েই ট্রাম্প প্রশাসন কয়েকশো অনুপ্রবেশকারী অপরাধীকে সেনাবাহিনীর বিমানে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। তাঁর দাবি, আমেরিকার 'ইতিহাসে এটিই সবথেকে বড় ডিপোর্টেশন অপারেশন। যা ইতিমধ্য়েই শুরু হয়ে গিয়েছে। যে প্রতিশ্রুতি করা হয়েছিল, তা পালন করা হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, গত সোমবার ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পরই আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।