উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ভাটওয়াড়ি রোডে অবস্থিত সুন্নি সম্প্রদায়ের ‘জামে’ মসজিদ ভেঙে দেওয়ার হুমকি মামলায় বড় নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনোজ কুমার তিওয়ারি এবং বিচারপতি রাকেশ থাপলিয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে। উত্তরকাশীর জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছে হাইকোর্ট। এই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ভারত ধর্মতান্ত্রিক দেশ নয়।
আরও পড়ুন: 'কোন ধর্ম মানুষ মারার কথা বলে?' এক মসজিদের দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাঁধে চাপাল হাই কোর্ট
আদালতের আরও নির্দেশ, ডিজিপিকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পর্কে আদালতকে জানাতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৭ নভেম্বর।উত্তরকাশীর মসজিদের নিরাপত্তা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ‘অল্প সংখ্যক সেবা সমিতি’ নামে একটি সংখ্যালঘু সংগঠন। তাদের অভিযোগ, ছিল এই মসজিদকে বেআইনি নির্মাণ দাবি করে কিছু সংগঠন গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এর জেরে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই মসজিদ রক্ষায় রাজ্য সরকারের নির্দেশ দেওয়া উচিত।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই মসজিদটি বৈধ, এটি ১৯৬৯ সালে জমি ক্রয় করে নির্মাণ করা হয়েছিল। তাদের বক্তব্য, ওয়াকফ কমিশনার ১৯৮৬ সালে মসজিদ পরিদর্শন করেছিলেন। এরপরের বছর এই মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছিল। তবে গত সেপ্টেম্বরে জিতেন্দ্র সিং চৌহান, স্বামী দর্শন ভারতী, সোনু সিং নেগি, লখপত সিং ভান্ডারি এবং অনুজ ওয়ালিয়া নামে কিছু হিন্দু নেতা নিজেদেরকে সংযুক্ত সনাতন ধর্ম রক্ষা সংঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-এর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে মসজিদ ভেঙে ফেলার হুমকি দিতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ।
আবেদনকারীদের আইনজীবী ডঃ কার্তিকেয় হরি গুপ্ত আদালতকে বলেছেন, যে এই ধরনের বক্তব্য দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আদেশের লঙ্ঘন করা। সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে যে যদি কোনও জাতি, ধর্ম বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উত্তেজনামূলক বিবৃতি অবলম্বন করা হয় তবে রাজ্য সরকারকে সরাসরি মামলা দায়ের করতে হবে। তা করতে ব্যর্থ হলে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ লঙ্ঘন হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও এই বিষয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে।এই মামলায় মৌখিক পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছে, ‘আমরা একটি ধর্মতন্ত্র নই, আইনের শাসন দ্বারা পরিচালিত একটি দেশ এবং কাউকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং ধ্বংসের হুমকিতে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।’