পরাধীনতার গ্লানি মুছে ব্রিটেনে 'মোদী ম্যাজিক' দেখিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আর সেই 'ঐতিহাসিক ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি'-কে 'গেম চেঞ্জার' বলে আখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তিনি জানিয়েছেন, এই চুক্তিটি ভারতের শর্তেই স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বহু প্রতীক্ষিত 'ঐতিহাসিক ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস, দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই প্রসঙ্গে পীযূষ গোয়েল বলেন, 'দুই দশক ধরে দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষরিত হয়েছে ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। এই চুক্তিটি আমাদের নিজস্ব শর্তে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং সংবেদনশীল ক্ষেত্রগুলিকে রক্ষা করা হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঐতিহাসিক ভারত-ব্রিটেন সর্বাঙ্গীণ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তির জেরে ভারতের কৃষক-মৎস্যজীবী, হস্তশিল্পী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে যাওয়া আরও সহজ হতে চলেছে।
আরও পড়ুন-মার্কিন মুলুকে ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন! H1B-তে লটারি বন্ধের পথে ট্রাম্প
কংগ্রেসকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ইউপিএ সরকারের সময়কালে উন্নত রাষ্ট্রগুলি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা করতে আগ্রহী ছিল না। তারা বিশ্বের ভঙ্গুর অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে বিবেচনা করতো। কিন্তু বর্তমান সরকার নিশ্চিত করে যে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তাঁর কথায়, 'আমরা এখন একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি না বরং পরিপূরকে পরিণত হয়েছি। আমাদের ৯৯ শতাংশ রপ্তানি পণ্য শুল্ক ছাড়াই অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে এবং আমাদের যা প্রয়োজন তা ভারতীয় বাজারে আসবে। তবুও আমরা দুগ্ধ এবং কৃষির মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রের জন্য সুরক্ষা বজায় রেখেছি।' তিনি বলেন, ভারতীয় অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। ২২-২৩ বছরের সংগ্রামের পর স্বাক্ষরিত এই চুক্তি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন-মার্কিন মুলুকে ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন! H1B-তে লটারি বন্ধের পথে ট্রাম্প
মন্ত্রী আরও বলেন, 'আমাদের মশলা ব্রিটেনে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। ৫০ লক্ষেরও বেশি দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকরা ব্রিটেনে বসবাস করেন। এরমধ্যে ১৮ লক্ষ ভারতীয় রয়েছেন। ফলে ব্রিটেনে বড় মশলার বাজার রয়েছে। এছাড়াও, ৯৯ শতাংশ মৎস্য পণ্য সেখানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। চামড়াজাত পণ্য, আসবাবপত্র এবং ওষুধের ক্ষেত্রেও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার থাকবে। যখন জিআই পণ্য রপ্তানি করা হবে, তখন ভারত অনেক সুবিধা পাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা সঠিক গতিতে, সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে এবং সঠিক পথে কাজ করছি।'