শুক্রবারের নামাজের জন্য পড়ুয়াদের অর্ধ দিবস ছুটি দেওয়ায় বরখাস্ত করা হল এক শিক্ষককে। ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের খারাডিতে। একটি সরকারি আন্তঃকলেজের ওই শিক্ষকের নাম তিলক যোশী। কলেজের বিশেষ বিভাগের পড়ুয়াদের শুক্রবার অর্ধ দিবসের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছিলেন যাতে তারা নামাজ পড়তে পারেন। একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে যেখানে দেখা গিয়েছে, অষ্টম পিরিয়ডের পরিবর্তে পঞ্চম পিরিয়ডের পরে তিনি পড়ুয়াদের চলে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিচ্ছেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান।
আরও পড়ুন: ‘কুৎসিত’ বোঝাতে পাঠ্যবইয়ে কৃষ্ণাঙ্গের ছবি, বরখাস্ত সরকারি স্কুলের দুই শিক্ষক
ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক জানান, স্কুলে একটি বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। লক্ষ্য করা যাচ্ছিল যে পড়ুয়ারা প্রায়ই শুক্রবার পুরো ক্লাস করছেন না বা আসছেন না। এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল যাতে তারা অন্তত কলেজে আসে। উল্লেখ্য, ওই ক্লাসে ৭৫ শতাংশ পড়ুয়া মুসলিম বলে জানান শিক্ষক।
জানা যাচ্ছে, শিক্ষকের এই পদক্ষেপের পরেই গত ২০ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা যোশীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ব্লক শিক্ষা অফিসারের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, যে এমন কোনও শিক্ষাগত নিয়ম নেই যা শুক্রবারে অর্ধ দিবসের ছুটির অনুমতি দেয়। এই ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষার অখণ্ডতাতে ব্যাহত করছে।
যদিও তিলককে বরখাস্ত করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সরকারি শিক্ষক সমিতি এবং অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনগুলি। তারা সাময়িক বরখাস্তকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছে। যথাযথ তদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিভাগের আধিকারিকদের অভিযুক্ত করেছে। তারা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে পরিষদের সদস্যের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, প্রতিবাদের সময় পরিষদের সদস্যরা শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পাশাপাশি এবং ছাত্রদের হুমকি দিয়েছে। শিক্ষকরা এই ঘটনায় পালটা আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
যদিও পরিষদের এক নেতা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি শুক্রবারের নামাজের অনুমতি দেওয়া হয় তবে আমরা মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে বজরং দলের মাধ্যমে হনুমান চালিসা প্রার্থনার অনুমতি চাইব। এই ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষাকে ব্যাহত করবে।’
স্কুল শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক (মাধ্যমিক শিক্ষা) মুকুল কুমার সতী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি এবং শিক্ষককে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। তদন্ত চলছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’