সম্প্রতি সাতপীর দরগার বিরুদ্ধে নাসিক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নোটিশ জারি করেছিল। সেই আবহে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছিল বম্বে হাইকোর্টে। যদিও মামলাটির দ্রুত শুনানি হয়নি। এই আবহে গত ১৬ এপ্রিল বম্বে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন দরগাহ ভাঙার নোটিশ সংক্রন্ত আবেদনটি জরুরি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়নি, তার ব্যাখ্যা চেয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি পিএস নরসিমা ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ জানিয়েছে, ধর্মীয় কাঠামো ভেঙে ফেলার আশঙ্কায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই আবহে হাইকোর্টের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
সাতপীর দরগাহ নাসিকের কাথে গলি অঞ্চলে অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই দরগাহটি। নাসিক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল এটি ভাঙার নোটিশ জারি করে। ধর্মীয় কাঠামোটিকে অননুমোদিত ঘোষণা করা হয়েছিল। দরগাহের দুই পক্ষ ৮ এপ্রিল বম্বে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করে এবং ৯ এপ্রিল থেকে জরুরি শুনানির জন্য তা তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা করে। তবে আবেদনকারীদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে জানান, হাইকোর্ট বিষয়টি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেনি, যার পরে তাদের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়।
মামলা শোনার ক্ষেত্রে বম্বে হাইকোর্টের বিলম্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত বলেছে, '৯ এপ্রিলের পর থেকে কী হয়েছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। আবেদনকারীর আইনজীবী বলেছেন যে তারা প্রতিদিন মামলাটি তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এই আবহে রিট আবেদনের তালিকা নিয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মামলার পরবর্তী শুনানি ২১ এপ্রিল। উল্লেখ্য, গত ১৬ এপ্রিল ভোরে নাসিক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সাতপীর দরগাহ ভেঙে দেয়। কাথে গলি এলাকায় এর জেরে সহিংস সংঘর্ষ শুরু হয়, যাতে ২১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং তিনটি পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নাসিকের পুলিশ কমিশনার সন্দীপ কার্নিকের মতে, দরগাহের ট্রাস্টিরা ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কাঠামোটি সরানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, তবে ওসমানিয়া চক থেকে একদল লোক পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে হয়। পুলিশ সহিংসতার সাথে জড়িত ১৫ জনকে আটক করেছে এবং এফআইআর নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
সাতপীর দরগাহ নিয়ে অতীতেও বিতর্ক হয়েছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নাসিক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন দরগার চারপাশে অননুমোদিত কাঠামো অপসারণের জন্য অভিযান শুরু করেছিল, কিন্তু তখন মূল কাঠামোটি স্পর্শ করা হয়নি। স্থানীয় হিন্দু সংগঠন এবং কিছু বাসিন্দা দাবি করেছিলেন যে দরগাহটি নিজেই অননুমোদিত এবং এটি পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা উচিত। নাসিক সেন্ট্রালের বিধায়ক দেবযানী ফারান্দেও বিষয়টি উত্থাপন করে বলেছিলেন যে ফেব্রুয়ারির অভিযান অসম্পূর্ণ ছিল এবং পুরো অঞ্চলটি পরিষ্কার করা উচিত।