পতঞ্জলির ওষুধ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে অ্যালোপাথি ওষুধের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করায় পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেডে এবং সংস্থার অধিকর্তা আচার্য বালাকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশও জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লা বলেন, 'আপনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি সবকিছু করে দিতে পারেন - এইসব বিজ্ঞাপন দেখে সেটাই মনে হচ্ছে। বিষয়টা হল যে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসেবে আপনি আপনার দ্রব্য বিক্রি করছেন। এটা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর এবং আইন বিরোধী।'
যে মামলার প্রেক্ষিতে সেই মন্তব্য করেছে বিচারপতি কোহলি এবং বিচারপতি আমানুল্লা, তা দায়ের করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। প্রতিষ্ঠানের তরফে অভিযোগ করা হয়, অ্যালোপাথি ওষুধের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছে পতঞ্জলি। শুধু তাই নয়, রোগ সারিয়ে দেওয়া নিয়ে আইন লঙ্ঘন করে ভিত্তিহীন দাবি করা হচ্ছেও বলে অভিযোগ করা হয়। সেই সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ এবং নথি জমা দেয় ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুন: SC on Patanjali: ‘বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা’ বিজ্ঞাপন বন্ধ না হলে কোটি টাকার জরিমানা দিতে হবে, পতঞ্জলিকে 'সুপ্রিম' ভর্ৎসনা
২০২৩ সালের ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কাগজে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন এবং ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর বাবা রামদেব ও পতঞ্জলির অধিকর্তা যে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন, সেটার নথিও ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জমা দেয়। যে সাংবাদিক বৈঠক হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ঠিক পরদিনই। সেদিন আইনজীবীর মাধ্যমে পতঞ্জলির তরফে জানানো হয়েছিল যে অ্যালোপাথি বা অন্য কোনও ওষুধের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করা হবে না।
শুধু তাই নয়, ১৫ জানুয়ারি অজ্ঞাত সূত্র থেকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে দুটি ভিডিয়ো ছিল। ৭ জানুয়ারির সেই ভিডিয়ো ক্লিপে পতঞ্জলি দাবি করেছিল যে ‘রাসায়নিক-ভিত্তিক সিন্থেথিক অ্যালোপাথির থেকে তাদের দ্রব্য বেশি কার্যকরী’।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পতঞ্জলিকে তুমুল ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে ১৯৫৪ সালের ড্রাগ অ্যান্ড ম্যাজিক রেমিডিস (অবজেকশনাল অ্যাডভারটাইজমেন্ট)-এ উল্লেখ থাকা অসুস্থতা বা রোগের জন্য যে দ্রব্য তৈরি করা হয় বা বাজারে বিক্রি করা হয়, সেগুলির বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিতে হবে। অর্থাৎ বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেডের আচার্য বালাকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। তবে রামদেবের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়নি। কারণ পতঞ্জলির তরফে সওয়াল করা হয় যে সংস্থার কোনও পদে নেই রামদেব।
আরও পড়ুন: Ramdev Comparison with Adani-Ambani: 'আদানি, আম্বানিদের থেকেও...', তাবড় শিল্পপতিদের সঙ্গে নিজের তুলনা টানলেন রামদেব