সদ্য সেপ্টেম্বর মাসেই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের গদিতে বসেছেন অনুরা কুমারা দিশানায়েকে। এরপর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হয়ে প্রথম বিদেশ সফরে তিনি এসেছেন দিল্লি। তাঁর এই দিল্লি সফর, দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে বেশ তাৎপর্যের বার্তা রাখে। এদিকে, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চিন সাগরে যখন বেজিং ক্রমাগত নিজের দাপট বাড়াচ্ছে, তখনই শ্রীলঙ্কা থেকে এল আশ্বাসবাণী। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে সাফ জানিয়েছেন, সেদেশের মাটি ভারত বিরোধী কাজে ব্যবহার হতে দেওয়া হবে না।
নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে এদিন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন অনুরা দিশানায়েকে। এরপর মোদীর সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে দিশানায়েকে বলেন,'আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছি যে, ভারতের স্বার্থ বিরোধী কোনও কাজে আমরা আমাদের জমি ব্যবহার হতে দেব না। ভারতের সঙ্গে আমরা আমাদের সহযোগিতা আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাব, আর আমি ফের আশ্বাস দিতে চাই ভারতের প্রতি আমাদের ক্রমাগত সমর্থন নিয়ে।' উল্লেখ্য, তিনদিনের সফরে ভারতে আসা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে বলেন,' শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটা আমার প্রথম সফর। প্রথম বিদেশ সফরে ভারত আসতে পেরে আমি খুব খুশি। আমাকে আমন্ত্রণের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ। আমাকে ও আমাদের প্রতিনিধি দলের প্রতি তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ।' দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুকেও তিনি ধন্যবাদ জানান।
শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকটের সময় ভারতের পাশে থাকার দিনগুলির কথা স্মরণ করে দিশানায়েকে বলেন,' ২ বছর আগে আমরা অভূতপূর্ব আর্থিক সংকট দেখেছি। সেই বদ্ধ পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে ভারত আমাদের ভীষণভাবে সাহায্য করেছে। তারা আমাদের খুব সাহায্য করেছ, বিশেষত ঋণের বোঝা থেকে বেরিয়ে আসতে।' তিনি বলেন,'আমি জানি ভারতের বিদেশ নীতিতে শ্রীলঙ্কার একটি তাৎপর্যপূর্ণ জায়গা রয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন তাঁর সমস্তরকমের সমর্থনের।'
( কারা মুক্তিযোদ্ধা? লিস্ট যাচাই করবে ইউনুস সরকার, ‘অমুক্তিযোদ্ধাদের' স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের ডাক অন্তর্বর্তী সরকারের)
উল্লেখ্য, কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত চিনের আনাগোনা বেড়েছে শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দরে। এদিকে, শ্রীলঙ্কার বাম নেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠা দিশানায়েকে এর মাঝেই দিল্লিকে সাফ আশ্বাস দিয়ে দিয়েছেন যে, শ্রীলঙ্কার মাটি ভারত বিরোধী কাজে ব্যবহার হবে না। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার ঋণের বোঝার সুযোগ নিয়ে সেদেশের হামবানতোতা বন্দরে দাপট দেখাচ্ছে চিন। এই বন্দরে চিনের জাহাজের নোঙর করা ভারতের প্রতিরক্ষার জন্য খুব একটা সুখের বার্তা নয়। চিনা জাহাজকে সেখানে নোঙর করতে দেওয়া নিয়ে দিল্লির আপত্তির তোয়াক্কা না করেই ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা ওই অনুমতি দিয়েছিল। এদিকে, চিনা নজরদারি জাহাজ ওই হামবানতোতা বন্দর ব্যবহার করেই পেট্রোলিং চালাচ্ছে ভারত মহাসাগরে, যা দিল্লির জন্য অস্বস্তির খবর। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার দেনার দায়ের সুযোগ নিয়ে হামবানতোতা বন্দরকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে চিন।