মঙ্গলে মঙ্গলময় বার্তা! পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করছেন ভারতীয় নভচর শুভাংশু শুক্লা। ১৮ দিন কাটানোর পরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর পথে ফিরছেন অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের চার মহাকাশচারী। সোমবার ভারতীয় সময় দুপুর ২টো নাগাদ তাঁরা ড্রাগন মহাকাশযানে উঠবেন। বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিট নাগাদ মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা রয়েছে ড্রাগনের, জানিয়েছে অ্যাক্সিয়ম স্পেস।
অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের অংশ হিসেবে, শুভাংশু এবং তাঁর তিন সহযাত্রী স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে চড়ে ফিরবেন পৃথিবীতে। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় দুপুর ৩টে নাগাদ ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে তাঁদের জলে নামার কথা।এই ১৮ দিনের অভিযানে অ্যাক্সিয়ম-৪ দলের বিজ্ঞানীরা ৬০টিরও বেশি উন্নত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। জানা যাচ্ছে, জীববিদ্যা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, উপকরণ বিজ্ঞান এবং মানব স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা গবেষণা হয়েছে এই সময়।আড়াই সপ্তাহ ধরে মহাকাশ কেন্দ্রে অবস্থানের সময় শুক্লা এবং তাঁর তিন আন্তর্জাতিক সহকর্মী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ‘আউটরিচ’ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। ভারতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রস্তাবিত গবেষণার ভিত্তিতে তিনি বিভিন্ন মাইক্রোগ্র্যাভিটি এক্সপেরিমেন্ট পরিচালনা করেন। স্পেসএক্স জানিয়েছে, শুভাংশুদের পৃথিবীতে ফেরার এই যাত্রা প্রায় ২২.৫ ঘণ্টার হবে।
আরও পড়ুন-আমদাবাদ দুর্ঘটনা: বিমানের ফুয়েল সুইচ ‘নিরাপদ’, দাবি বোয়িংয়ের
এই ঐতিহাসিক যাত্রার অন্যতম নায়ক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা রবিবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পৃথিবীতে ফেরার আগে এক আবেগঘন ভাষণে বললেন, 'আজকের ভারতকে মহাকাশ থেকে দেখে মনে হয়, এ দেশ আগ্রাসী নয়, বরং আত্মবিশ্বাসী, নির্ভীক, স্বপ্নময়। কারণ এই দেশ আজ কেবলই উন্নয়নশীল নয়, এটা স্বপ্নপূরণের পথে চলেছে। আজও আমি গর্ব করে বলতে পারি,‘আজকের ভারত এখনও সারে জাঁহাঁ সে আচ্ছা দিখতা হ্যায়।' উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম একজন ভারতীয় আবার মহাকাশে গেলেন। তবে প্রযুক্তির দিক থেকে, এই মিশন অতীতের তুলনায় অনেক অগ্রসর ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে নির্মিত।
আরও পড়ুন-আমদাবাদ দুর্ঘটনা: বিমানের ফুয়েল সুইচ ‘নিরাপদ’, দাবি বোয়িংয়ের
স্পেসএক্স জানিয়েছে, শুভাংশু শুক্লাদের পৃথিবীতে ফেরার যাত্রা প্রায় ২২.৫ ঘণ্টার হবে, এবং ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টায় 'স্প্ল্যাশডাউন' হবে। এর আগে ড্রাগন যানটি একাধিক কক্ষপথ হ্রাসকারী কৌশল, ট্রাঙ্ক জেটিসন এবং বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের মতো জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে।স্পেসএক্স ড্রাগন কক্ষপথে প্রায় এক দিন সময় কাটায়। কারণ প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে চলা এই মহাকাশ স্টেশন ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সেখান থেকে তার কক্ষপথ কমানোর জন্য একাধিক কৌশল পরিচালনা করে। মহাকাশ থেকে ফিরে, শুভাংশু শুক্লাকে এক সপ্তাহের জন্য পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা হবে, যেখানে তিনি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে দেহকে মানিয়ে নিতে বিশেষ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকবেন। এই রিহ্যাব প্রোগ্রাম মহাকাশ অভিযানের পরে শরীরের ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঐতিহাসিক মিশন শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার গর্ব।