বিগত পাঁচ বছরে আইআইটি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ কেন্দ্রের অধীনস্থ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া। সংসদে পেশ করার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ এবং ২০২৩ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনও পর্যন্ত সংরক্ষিত বিভাগের ১৭,৫৪৫ পড়ুয়া পড়াশোনা ছেড়ে দেন মাঝপথেই। এদিকে ৮ হাজার ১৩৯ জন তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি পড়ুয়া আইআইটি থেকে পড়াশোনা ছেড়েছেন।
এদিকে কী কারণে এত সংখ্যক তফসিলি বা ওবিসি পড়ুয়া মাঝপথে ছাড়ছেন পড়াশোনা? পিএইচডি পড়ুয়াদের মধ্যে যে পড়ুয়ারা পড়াশোনা ছেড়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই চাকরি পেয়ে পড়াশোনা ছেড়েছেন বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এদিকে স্নানত স্তরে এই 'কারণ' হল - ভুল বিষয় চয়ন, বাজে রেজাল্ট, ব্যক্তিগত সমস্যা বা শারীরিক অসুস্থা।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রকের জমা দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, এনআইটি এবং আইআইএম সহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মোট ৯৮ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন। তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত আত্মঘাতী হয়েছেন ২০ জন পড়ুয়া। ২০২২ সালে মোট সংখ্যাটা ছিল ২৪। এর আগে ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন ৭ জন পড়ুয়া। ২০২০ সালেও আত্মঘাতী পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৭। ২০১৯ সালে আত্মত্যা করেছিলেন ১৯ জন পড়ুয় এবং ২০১৮ সালে আত্মঘাতী পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২১।
এদিকে তথ্য অনুসারে, আত্মঘাতী এই ৯৮ জন পড়ুয়াদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক আত্মহত্যা হয়েছে আইআইটি-র ক্যাম্পাসগুলিতে। দেশের বিভিন্ন আইআইটি-তে মোট ৩৯ জন আত্মঘাতী হয়েছেন গত পাঁচ বছরে। তারপরেই তালিকায় আছে এনআইটি। সেখানে আত্মহত্যা করেছেন ২৫ জন পড়ুয়া। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও আত্মঘাতী হয়েছেন ২৫ জন। এছাড়া আইআইএম-এ আত্মহত্যা করেছেন ৪, আইসার-এ ৩, আইআইআইটি-র ২ পড়ুয়া।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার জানান, কোভিডের সময় এবং তারপরে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টির ওপর খেয়াল রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের শারীরিক সুস্থতা, খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, মানসিক সুস্থতার প্রচারের জন্য নির্দেশিকাও জারি করেছে ইউজিসি। তিনি আরও জানান, শিক্ষাগত চাপ কমানোর জন্য মন্ত্রণালয় পিয়ার অ্যাসিস্টেড লার্নিং, শিক্ষার্থীদের জন্য আঞ্চলিক ভাষায় কারিগরি শিক্ষা প্রবর্তনের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলির সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক।