বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদত্র 'প্রথম আলো'র অফিসের সামবে বিক্ষোভ। প্রথম আলো বন্ধের দাবিতেই এই বিক্ষোভ হয় ঢাকায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারী প্রথম আলোর অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ দেখান গতকাল। এই আবহে প্রথম আলোর ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পরে বিক্ষোভকারী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। (আরও পড়ুন: খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথি, আদানি ঘুষ কাণ্ডে এবার বড় পদক্ষেপের পথে NDA সরকার?)
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়ার জন্যে শেখ হাসিনার রোষের মুখে পড়তে হয়েছে প্রথম আলোকে। এরপর গত জুলাই মাসের 'গণঅভ্যুত্থানে'র সময় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকার জেরে প্রথম আলোর অনলাইন পোর্টালও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এই বের মাঝেও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা বর্তমানে হাসিনার প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। এই আবহে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র বন্ধের দাবি তুলেছে বাংলাদেশের একটা অংশ। যদিও হাসিনাকে সমর্থন করার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন সংবাদপত্রের এক্সিকিউটিভ এডিটর সজ্জদ শরিফ।
বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে বাতাসংস্থা এএফপি-কে সজ্জদ শরিফ বলেন, 'আমরা ধারাবাহিকভাবে আমাদের কাজের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছি। এবং ভবিষ্যতেও তা করতে থাকব।' এদিকে শুধু ঢাকায় নয়, রাজশাহি এবং চট্টগ্রামেও প্রথম আলোর অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রতিবাদীরা। তাঁদের দাবি, প্রথম আলো 'ভারতের বিষয়ে পক্ষপাতদুষ্ট' এবং তারা 'ইসলাম বিরোধী'। তবে একটা সময় এই প্রথম আলোকেই 'দেশের শত্রু' আখ্যা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, 'অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলছি যে প্রথম আলো এই দেশে কখনোই স্থিতিশীলতা থাকতে দিতে চায় না। যাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে তাঁরা এখন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষে কথা বলছে। আওয়ামি লিগ, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের জনগণের শত্রু এই দৈনিক পত্রিকা।'
এদিকে প্রথম আলোর অফিসের সামনে বিক্ষোভের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, 'কোনও পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর করা বা পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগকে সমর্থন করে না সরকার।' তাঁর কথায়, 'প্রথম আলো নিয়ে একটি উত্তেজনা দেখতে পাচ্ছি কয়েক দিন ধরে। গতকালও এ রকম উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল অফিসের সামনে। আজকে রাজশাহিতে তাদের অফিসে ভাঙচুর হয়েছে এবং চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। কোনও পত্রিকার বিরুদ্ধে যদি জনগণের কোনও অংশের অভিযোগ থাকে, ক্ষোভ থাকে, তারা সেটা প্রকাশ করতেই পারে। তবে সেটি অবশ্যই শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে।'