সারা জীবনের জন্য এক অধ্যাপিকাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত 'ডিউটি' থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁকে পরীক্ষা ক্ষেত্রে 'নিষিদ্ধ' ঘোষণা করা হল। কারণ? সম্প্রতি তিনি একটি পরীক্ষা চলাকালীন পলিটিক্যাল সায়েন্সের প্রশ্নপত্র তৈরি করেছিলেন। তাতে নাকি এমন প্রশ্ন ছিল, যা 'আপত্তিকর'। এমনটাই মনে হয়েছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও আরএসএস-পন্থী পড়ুয়াদের! আর শুধুমাত্র সেই কারণেই তাঁর উপর এহেন শাস্তির খাঁড়া নেমে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মিরাট কলেজে।
যে অধ্যাপিকা এই শাস্তির কোপে পড়েছেন, তাঁর নাম - সীমা পনওয়ার। তিনি ওই সরকারি কলেজের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। তাঁর তৈরি করা প্রশ্নপত্রের প্রতিবাদে আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি বিক্ষোভও দেখিয়েছে। সেই বিক্ষোভ ঘিরে শুক্রবার (৪ এপ্রিল, ২০২৫) কলেজ চত্বরে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, এই বিক্ষোভ প্রদর্শনের ঠিক দু'দিন আগেই সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাটি নেওয়া হয়েছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া অনুসারে - গত ২ এপ্রিল কলেজে পলিটিক্যাল সায়েন্সের সেকেন্ড সেমিস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হয়। অভিযোগ হল, সেখানে এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে ভারতে জাতপাতের রাজনীতি শুরু করার জন্য আরএসএস-কেই পরোক্ষে দায়ী করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়। প্রতিবাদীদের আরও অভিযোগ, ওই একই প্রশ্নে আরএসএস-এর সঙ্গেই মাওবাদী এবং জেকেএলএফ-এর মতো সংগঠনকেও একই সারিতে রাখা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ধীরেন্দ্র কুমার ভার্মা জানান, 'সারা জীবনের জন্য ওই অধ্য়াপিকাকে পরীক্ষার সমস্ত ধরনের ডিউটি, পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন-সহ সমস্ত কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।' তিনি আরও জানিয়েছেন, একটি অভ্যন্তরীণ কমিটির তদন্তে এটা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে ওই অধ্যাপিকাই ওই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছিলেন।
যদিও সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, ওই অধ্যাপিকা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি এই কাজ করেনি। এবং তিনি কারও ভাবাবেগে আঘাতও হানতে চাননি।
অন্যদিকে, এবিভিপি সদস্যরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন। তাঁদের দাবি, যেভাবে এই ঘটনায় আরএসএস-কে টানা হয়েছে, তার জন্য 'দোষী'র বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে।