২৬/১১ মুম্বই হামলায় সন্ত্রাসবাদীদের ভুয়ো হিন্দু পরিচয়পত্র তৈরি করে দিয়েছিল পাকিস্তান। সেখানে আজমল কাসভের নাম ভাঁড়িয়ে সমীর চৌধুরী করা হয়েছিল। এমনই চমকপ্রদ তথ্য জানিয়েছেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়া তাঁর সদ্য প্রকাশিত ‘লেট মি সে ইট নাও’ বইয়ে।মুম্বই শহরের একাধিক স্থানে ১০ পাক সন্ত্রাসবাদী যে দিন হামলা চালিয়েছিল, অভিশপ্ত সেই দিনে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে তাঁর ডিউটি পড়েছিল বলে জানিয়েছেন মারিয়া। ঘটনায় একমাত্র জীবিত সন্ত্রাসবাদী আজমল কাসভকে জেরা করে কী ভাবে লস্কর-ই-তৈবা ও আইএসআই-এর ভারতে হামলার ছক তৈরি হয়েছিল, তা বিশদে বর্ণনা করেছেন মারিয়া তাঁর বইয়ে।তিনি জানিয়েছেন, ভারতে পাঠানোর আগে ১০ সন্ত্রাসবাদীর মগজধোলাই করে বোঝানো হয়েছিল, এ দেশে মুসলিমদের নমাজ পড়তে দেওয়া হয় না এবং সমস্ত মসজিদের দরজায় তালা বন্ধ করে রাখা থাকে। এই কারণে, বন্দি অবস্থায় আজানের সুর শুনে কাসভ প্রথমে মনে করত, তার মনের বিভ্রান্তি। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় জেলের বাইরে নিয়ে গিয়ে মসজিদে প্রার্থনারত মুসলিমদের দেখানো হলে তার বিশ্বাস হয়।মারিয়া জানিয়েছেন, কাসভ দরা পড়ার কারণেই পাকিস্তানের চক্রান্ত ফাঁস করা সম্ভব হয়েছিল। সেি জন্যই বিচারপর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকে বাঁচিয়ে রাখাও জরুরি ছিল বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্মা। অভিযোগ, ভুয়ো পরিচয়পত্র ও বেশভূষার সুবাদে সন্ত্রাসবাদীদের হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের সদস্য বসে চালানোর চেষ্টা করেছিল ইসলামাবাদ। পরিচয় গোপন করার উদ্দেশে তাদের কব্জিতে পরার জন্য লাল ও কমলা রঙের সুতো দেওয়া হয়েছিল বলেও মারিয়ার দাবি।উল্লেখ্য, মুম্বই হামলার কয়েক মাস পরে ২০১০ সালে হামলার উপরে একটি বই প্রকাশ করেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং, পরিচালক মহেশ ভাট এবং অন্যান্য কয়েক জন। ‘২৬/১১ আরএসএস কি সাজিশ’ অর্থাত্, ২৬/১১ আরএসএস-এর ষড়যন্ত্র নামে বইটির লেখক ছিলেন উর্দু সাহারা সংবাদপত্রের মুখ্য সম্পাদক আজিজ বার্নি। ওই বইতে মুম্বই হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রী হিসেবে আরএসএস-কে কাঠগড়ায় তোলা হয়।শুধু তাই নয়, দিব্বিজয় দাবি করেছিলেন, হামলার মাত্র ২ ঘণ্টা আগে তাঁকে ফোন করেন এটিএস প্রধান হেমন্ত করকরে। মালেগাঁও বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্তদের সমর্থনে করকরেকে প্রায়ই আরএসএস ও হিন্দু উগ্রবাদীরা হুমকি দিত বলে অভিযোগ করেন দিগ্বিজয়। মারিয়ার বই সেই সমস্ত তত্ত্ব হাস্যকর প্রতিপন্ন করেছে।