দোষ করলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে পাকিস্তান। বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তাদের মধ্যে পাকিস্তানই অন্যতম। লাহোর-ভিত্তিক এনজিও জাস্টিস প্রজেক্ট পাকিস্তানের (জেপিপি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই বিস্ফোরক তথ্য। প্রকাশ করা হয়েছে যে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ডের কোপে পড়া বন্দীদের ২৬ শতাংশই পাকিস্তানে।
আরও পড়ুন: (Jamsetji Tata: রতন টাটা থেকে বিল গেটস, আজও কেউ অতিক্রম করতে পারেননি জামশেদজিকে! কীভাবে?)
১০ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে মোট ৬,২৬১ জন বন্দী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। যেখানে ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬,০৩৯। আবার ২০২২ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীর সংখ্যা ছিল ৩,২২৬। দেখাই যাচ্ছে যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, যা আগের বছরের প্রবণতা থেকে অনেক বেশি। এখন তো দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীর সংখ্যাও ভিন্ন। পঞ্জাব প্রদেশে সর্বোচ্চ ২,৫০৫ জন বন্দী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, যেখানে ২,৩১১ জন বন্দী খাইবার পাখতুনখোয়ায় মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় রয়েছেন।
প্রতিদিন একজনের মৃত্যুদণ্ড
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী ১৩ শতাংশ। আর, এটি এই উন্নত বিশ্বের কাছে অন্যতম উদ্বেগজনক একটি বিষয়। কারণ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত প্রত্যেক সপ্তম বন্দীই পাকিস্তানি এবং এমনকি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া প্রত্যেক অষ্টম ব্যক্তিও পাকিস্তানি। এনজিওর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিগত ২০০৪ সাল থেকে পাকিস্তানে অন্তত ৪৫০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হিসাব করলে, যা প্রতিদিন গড়ে একজনকে সাজা দেওয়ার সমান।
এই দেশে ৩১টির বেশি অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে যদিও ২০১৯ সাল থেকে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। তবে তা সত্ত্বেও, জেপিপি ডেটা এটা স্পষ্ট করেছে যে পাকিস্তান হল এমনই একটি দেশ যারা দোষ করলেই শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ডকেই বেশি বেছে নেয়।
আরও পড়ুন: (Dounble Murder: দুই সন্তানকে খুন করে শেষরক্ষা হল না, শ্মশানকর্মীর তৎপরতায় গ্রেফতার মহিলা ও তার প্রেমিক)
বলা বাহুল্য, জেপিপি রিপোর্ট পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যান নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেশী এই দেশকে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া দেশগুলির মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত করেছে, না বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলির জন্য একটি প্রধান সমস্যাই হয়ে দাঁড়িয়েছে।