সাধারণ বাজেটে নয়া কর কাঠামোর কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একই সঙ্গে পুরনো কর কাঠামোও বহাল থাকবে। এবার কোন কর কাঠামো ব্যবহার করা উচিত, সেই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। এপ্রিল শেষ হতে চলল। অনেক অফিসেই এবার বলছে একটি কর কাঠামো বেছে নিতে। যারা স্বনিযুক্ত, তাদেরও কর দিতে হবে। কোন নিয়মে টিডিএস কাটাবেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে অনেকের মনে। আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে তার আগে দেখে নেওয়া যাক প্রস্তাবিত কর কাঠামোটি কি।
এবারের নয়া কর কাঠামোয় প্রায় ৭০টি ছাড় লুপ্ত করা হয়েছে। ইনকাম ট্যাক্সের ৮০ সি ও ৮০ ডি ধারায় ১৫০০০০ টাকা অবধি যে ছাড় পাওয়া যায় আয়ের ওপর, সেটি মিলবে না। তবে প্রত্যেক স্ল্যাবে আগের থেকে কম কর দিতে হবে।
বাজেটে নির্মলা সীতারামন জানান যে যারা আড়াই লক্ষ অবধি বছরে আয় করেন, তাদের কর দিতে হবে না। যারা ছাড় নেবেন না,. তাদের জন্য নয়া করের হার- ৫-৭.৫ লক্ষ অবিধি ১০ শতাংশ, যেটা আগে ছিল ২০ শতাংশ। ৭.৫-১০ শতাংশ অবধি করের হার ১৫ শতাংশ, যা আগে ছিল ২০ শতাংশ।
১০-১২.৫ লক্ষ আয়ের ওপর ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে, যা আগে ছিল ২৫ শতাংশ। ১২.৫ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষের অবধি করের হার হবে ২৫ শতাংশ। ১৫ লক্ষের ওপর আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
কিন্তু এখনও দশ রকমের আয় আছে, যার ওপর আয়কর ছাড় পাওয়া যাবে আগামী অর্থবর্ষ থেকে । সেগুলির সম্বন্ধে জেনে নিন-
১. টানা পাঁচ বছর চাকরি করার পর, কেউ চাইলে যদি Employees' Provident Fund (EPF) থেকে টাকা তোলেন, তাহলে সেই অর্থের ওপর এখনও ছাড় মিলবে।
২. PPF (Public Provident Fund)-এর ম্যাচুরিটিতে যে টাকা পাওয়া যাবে ও সেই অ্যাকাউন্টে যে বাত্সরিক সুদ জমা পড়ে, তার ওপর আয়কর ছাড় মিলবে।
৩. National Pension Scheme (NPS)-এ ম্যাচুরিটিতে বা আগে বন্ধ করলেও কম করে ৪০ শতাংশ টাকার ওপর কর দিতে হবে না। NPS থেকে আংশিক টাকা তুললে, ২৫ শতাংশ অবধি অর্থের ওপর কর ছাড় মেলে।
৪. ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্টের ধারা ১০ (১০D) অনুযায়ী লাইফ ইনস্যুরেন্স প্ল্যানের ম্যাচুরিটি বা সারেন্ডার করে দিলে, যে টাকা পাওয়া যায়, এর ওপর করছাড় মিলবে। বোনাসের ওপরেও ট্যাক্স দিতে হবে না।
৫. সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় ম্যাচুরিটির পর সুদ সহ যে টাকা মিলবে, তার ওপর আয়কর পাওয়া যাবে।
৬. অফিস থেকে বিভিন্ন কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য যে যাতায়াতের টাকা দেয়, সেটিতেও আয়কর ছাড় মিলবে। কনভেয়েন্স অ্যালোয়েন্স, রিলোকেশন চার্জ ইত্যাদি আয়কর মুক্ত।
৭. যে সব পোস্ট অফিস সেভিংস অ্যাকাউন্টে ৩৫০০ টাকা অবধি আছে, তার ওপর সুদের ওপর কোনও কর লাগবে না।
৮. পড়াশুনোর জন্য কোনও স্কলারশিপ পেলে সেটিতে কর ছাড় মিলবে আইটি অ্যাক্টের ১০ (১৬) ধারা অনুযায়ী।
৯. লাগাতার পাঁচ বছর কাজ করার পর কুড়ি লক্ষ টাকার কম গ্র্যাচুইটির ওপর আয়কর ছাড় মিলবে।
১০. চাকরির মেয়াদকালের শেষে বা ইস্তফা দিলে ৩ লক্ষ টাকা অবধি লিভ এনক্যাশমেন্টের ওপর কোনও আয়কর দিতে হবে না।
এবার তাহলে কোনটা ব্যবহার করবেন জেনে নিন।
হিন্দুস্তান টাইমসের হিসাব অনুযায়ী কত টাকা উপার্জন করলে আপনার কোন কর কাঠামো নেওয়া উচিত-


এছাড়াও ট্যাক্স ক্যালকুলেটরটি ব্যবহার করতে পারেন কত টাকা কর দিতে হবে সেটি জানার জন্য।