বাংলাদেশের সুন্দরবনের ফের ঘন জঙ্গলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে পুড়ে ছাই হচ্ছে গাছ-পালা। জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর টহল ফাঁড়ির ২৩ শের সিলার শাপলার বিল এলাকায় জঙ্গলে আগুন দেখতে পায় বন বিভাগ। এই অগ্নিকাণ্ডে আশেপাশে জলের উৎস না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না এই আগুন আয়ত্বে আনার। আগুন দেখা যেতেই বন বিভাগ ড্রোন দিয়ে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করছে। আগুন যাতে বনের বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই জন্য আগুনের চারপাশে ফায়ার লাইন কাটা শুরু করেছেন সেখানকার বনরক্ষীরা।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিল এলাকায় নতুন করে আগুনের খবর পাওয়ার পরেই বন বিভাগের স্টাফ এবং ফায়ার স্টেশন কর্মীরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। বন বিভাগের স্টাফরা ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়। ৩-৪ জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া গেছে।বাগেরহাটের শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলম জানান, সুন্দরবনের নতুন স্থানে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত ২২ বছরে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে আগুন লেগেছে অন্তত ২৬ বার। অন্যদিকে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ওই কমিটিকে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও বনভূমির ক্ষয় নিরূপণ করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
শনিবারই পূর্ব সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকার ঘন জঙ্গলে আগুনে পুড়ে গিয়েছে একাধিক গাছ-পালা। পরে দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। বাংলাদেশের বন দফতরের কর্মীরা জানান, সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকার গহীনে এই আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে শনিবার সকালে। খবর শুনে বাংলাদেশের শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ ফায়ার স্টেশন এবং রামপাল ও কচুয়া থেকে শক্তিশালী চারটে ইউনিট দুপুরের পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু আশেপাশে জলের অভাব থাকায় তারা কোনও পদক্ষেপ করতে পারেননি। পরে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়।এদিকে, সুন্দরবনে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বন বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।