নিট পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার। কোটাতে ট্রেনিংও নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গত ৬ মে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। অবশেষে তার খোঁজ মিলেছে। গোয়ার একটি রেলস্টেশনে খোঁজ মিলেছে তার। তার পকেটে ছিল ১১,০০০ টাকা। ১৯ বছর বয়সি ওই যুবকের খোঁজ মিলেছে অবশেষে। কিন্তু এতদিন কাটালেন কোথায়?
আসলে ট্রেনে ট্রেনেই কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে তিনি বিনা টিকিটেই ঘুরে বেড়িয়েছেন।
কোথা থেকে তিনি টাকা জোগাড় করলেন?
সূত্রের খবর, ওই ছাত্র তার বই, মোবাইল ফোন, দুটো সাইকেল সব বিক্রি করে দিয়েছেন। আর সেগুলি বিক্রি করে তিনি টাকা জোগাড় করেছিলেন। আর সেই টাকা দিয়েই তিনি ঘুরছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্র নিটের মেডিক্যাল পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরপর রবীন্দ্র প্রসাদ মীনা নামে ওই ছাত্র তার পরিবারকে একটা মেসেজ পাঠান। সেখানে লেখা ছিল ৫ বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে গেলাম। সেই সঙ্গেই জানিয়ে দেন, আর পড়াশোনা করব না।
সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছিলেন, সঙ্গে ৮ হাজার টাকা আছে। বাকি টাকা লাগলে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করব। এদিকে ওই ছাত্রের পরিবারের দাবি, কোটা পুলিশ তাদের অভিযোগের কোনও গুরুত্ব দেয়নি।
এদিকে পরিবারের লোকজনই চারটি টিম তৈরি করে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। যেদিন থেকে সে নিখোঁজ হয়েছিল তার পর থেকে শুরু হয় খোঁজা। পরিবারের দাবি, নিট পরীক্ষায় ভালো করতে পারেননি। এরপরই ৬ মে বেরিয়ে পড়ে সোজা পুনে। সেখানে দুদিন ছিলেন। সেখানে সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনেন ১৫০০ টাকা দিয়ে। আধার কার্ড দেখিয়ে সিম নেন। এরপর অমৃতসর। সেখানে স্বর্ণ মন্দির দেখে সোজা জম্মু।
জম্মু থেকে আগ্রা। সেখান থেকে পুরীতে জগন্নাথ মন্দির দর্শন। এরপর রামেশ্বরম। সেখান থেকে কন্যাকুমারী আর থিরুবনন্তপুরম। সেখান থেকে গোয়া। কিন্তু সেখানেই বাবার সঙ্গে তার দেখা হয়ে যায়। মাদগাঁও স্টেশনে সবে ট্রেনে উঠতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বাবার সঙ্গে দেখা। তিনি এতদিন ধরে জেনারেলে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতেন। সব মিলিয়ে ৬০০০ টাকা বাঁচিয়েও ফেলেছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশের টিম বিভিন্ন এলাকায় পরিবারের সঙ্গে যেতেন।
পুলিশ জানিয়েছেন, ছেলেটির বাবার সঙ্গে পুলিশ টিম মুম্বইতে ছিল। পরে তার বাবা ও অন্য এক আত্মীয় যায় গোয়াতে। মূলত বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ছেলের সম্পর্কে তারা জানতে পারেন। তার কাকা জানিয়েছে, মীনাকে প্রথমে চেনা যাচ্ছিল না। কিন্তু ডাকতেই সে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া দেয়।