এবার থেকে ফিটনেস টেস্টের সময়ে সকলে পুলিশমন্ত্রীরই উদাহরণ দেবেন। মাদাগাস্কারের পুলিশ মহলে এখন এমনটাই শোনা যাচ্ছে। আর তা হবে না-ই বা কেন। এক অনন্য বেঁচে থাকার কাহিনির সাক্ষী হল গোটা বিশ্ব। সৌজন্যে মাদাগাস্কারের পুলিশমন্ত্রী সার্জ গেল(৫৭)। হেলিকপ্টার ক্র্যাশের পর প্রায় ১২ ঘণ্টা সমুদ্রে সাঁতার কেটে স্থলভাগে পৌঁছালেন তিনি।ঘটনার সূত্রপাত একটি ছোটো কার্গো শিপের ডুবে যাওয়া কেন্দ্র করে। সোমবার ভারত মহাসাগরে একটি ছোটো কার্গো জাহাজে ১৩৮ জনকে অবৈধভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময়ে সেটি ডুবতে শুরু করে। খবর পেয়ে উদ্ধারকাজে পৌঁছায় মাদাগাস্কারের উদ্ধারকারী দল। তা সত্ত্বেও সেই জাহাজের প্রায় ৮৩ জনের খোঁজ মেলেনি। সোমবার সন্ধ্যায় সেই পরিস্থিতি পরিদর্শনেই সরকারি প্রতিনিধিদের ২টি হেলিকপ্টার গিয়েছিল। সেই সময়েই যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয় একটি হেলিকপ্টারে। 'হেলিকপ্টারটায় আমরা চারজন ছিলাম। আমি পাইলটের পিছনেই বসেছিলাম,' বলেন সার্জ। সমুদ্রের উপরেই ছিটকে পড়ে কপ্টার। 'লাইফ জ্যাকেট না থাকায়, আমি সিট খুলে সেটা বয়া হিসেবে ব্যবহার করেছি। ঘাবড়ে না গিয়ে আমি পুরো সময়টাই শান্ত ছিলাম। বুট এবং বেল্টের মতো ভারী সবকিছু খুলে ফেললাম। বেঁচে থাকার জন্য যা যা করণীয় তার সবকিছুই করেছি,' বললেন পুলিশমন্ত্রী। তখনও তাঁর হাত-পা নোনাজল আর ঠান্ডায় ফ্যাকাশে।এভাবেই ধীরে ধীরে সাঁতার কাটতে থাকেন। সারারাত এভাবেই কেটে যায়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সৌভাগ্যক্রমে মত্সজীবীদের একটি নৌকার নজরে আসেন তিনি। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করেন। এরপর তাঁকে সেন্ট মেরি আইল্যান্ডে আনেন তাঁরা। রাজনীতিতে আসার আগে সার্জ মাদাগাস্কারের বায়ুসেনার একজন মেকানিক ছিলেন। ফলে তাঁর শারীরিক সক্ষমতা যে সাধারণ মানুষের থেকে অনেকটাই বেশি, তা বলাই বাহুল্য। তবে ৫৭ বছর বয়সে ঠান্ডা সমুদ্রের জলে ১২ ঘণ্টা সাঁতার কাটা কি মুখের কথা! শুধু তিনিই নন। আরও একজন যাত্রী, চিফ ওয়ারেন্ট অফিসার জিমি লাইটসারাও একইভাবে সাঁতার কাটতে থাকেন। মহাম্বোর সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কেটে এসে ওঠেন তিনি। বুধবার বিকেলে উদ্ধারকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার পরিচালক কর্নেল অলিভিয়ের আন্দ্রিয়ানবিনিনার দেহ উদ্ধার করেন। কপ্টারের পাইলট নিখোঁজ রয়েছেন।