লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে ক্ষতির অঙ্কটা পাঁচ লাখ কোটি টাকার মতো হতে পারে। একটি বিমা সংস্থার প্রাথমিক রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এমনই জানানো হল সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাবানলের জেরে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি এবং আর্থিক লোকসান হয়েছে, সেটা অর্থের নিরিখে হিসাব করলে অঙ্কটা ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫৭ মিলিয়ন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ লাখ কোটি টাকা) মধ্যে হতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে ভয়ংকরতম দাবানল?
বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা অ্যাকুওয়েদারের প্রধান আবহাওয়াবিদ জোনাথন পোর্টার বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার (ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের শহর হল লস অ্যাঞ্জেলেস) ইতিহাসে অন্যতম ভয়ংকর দাবানল হয়ে উঠেছে এটা। আগামিদিনে যদি আরও বাড়ি-সহ অন্যান্য কাঠামো পুড়ে যায়, তাহলে (কাঠামো পুড়ে যাওয়া এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে) আধুনিক ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে এটিই হয়তো সবথেকে ভয়ংকর দাবানল হয়ে উঠবে।’
দাবানল ছড়ানোর নেপথ্যে শক্তিশালী হাওয়া
আর যেদিকে পরিস্থিতি এগোচ্ছে, তাতে সেই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পুড়ে গিয়েছে বাড়ি-সহ অনেক কাঠামো। শক্তিশালী 'সান্তা এনা' বায়ুর দাপটে মারাত্মক দ্রুত হারে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি এলাকায় তো হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটারের মতো ছিল। সেই পরিস্থিতিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।
আর সেই বিধ্বংসী আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে একাধিক হলিউড তারকার প্রাসাদও। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিনেমা, টেলিভিশন এবং সংগীত জগতে বিশ্বের অনেক প্রথমসারির তারকারা যেখানে থাকেন, সেই স্যান্টা মনিকা এবং মালিবুর মধ্যবর্তী অংশের প্রায় ১২,০০০ একর জমি আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে।
লাইভ টিভিতে নিজের প্রাসাদ পুড়তে দেখলেন প্যারিস হিলটন
আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে 'গসিপ গার্ল'-র তারকার ৬.৫ মিলিয়ন ডলারের বাড়ি। লাইভ টিভিতে প্যারিস হিলটনকে দেখতে হয়েছে যে মালিবু বিচে তাঁর প্রাসাদ পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'আমার পরিবারের সঙ্গে বসে মালিবুতে আমাদের বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার দৃশ্যটা লাইভ টিভিতে দেখেছি। এরকম অভিজ্ঞতা যেন কখনও কারও না হয়।' তারইমধ্যে জেমস উডস, ম্যান্ডি মুরের মতো একাধিক তারকাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মূলত মঙ্গলবার থেকে বিধ্বংসী আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরে সেই বাতাসের দাপটে বুধবারও দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে লস অ্যাঞ্জেলেসে। আকাশপথে আগুন নেভানোর কাজটা কঠিন করে দেয় হাওয়ার তীব্রতা। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেই কাজটা। বুধবার সকাল থেকে ফের আকাশপথে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। যা এখনও চলছে।