'কমেডির অর্থ যা খুশি বলা নয়।' উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে আপত্তিকর মন্তব্য ইস্যুতে কমেডিয়ান কুণাল কামরার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে শিবসেনার কর্মী-সমর্থকদের রোষের মুখে পড়েছেন কুণাল। মুম্বইয়ের যে হোটেলে কৌতুক অনুষ্ঠান করে কুণাল ওই ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করেছেন, সেটিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন উত্তেজিত শিবসৈনিকেরা। আর এই ঘটনায় কুণাল কামরার ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, কমেডিয়ানের মন্তব্যে অসম্মানিত হয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। (আরও পড়ুন: সেই ক্যান্টনমন্টেই দীর্ঘ বৈঠক বাংলাদেশ সেনার, গল্প বানিয়ে এবার চাপে পড়বে 'বাচ্চারা'?)
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস বলেন, ‘আইনি পথে পদক্ষেপ করা হবে। কুণাল কামরার ক্ষমা চাওয়া উচিত। একনাথ শিন্ডেজিকে অসম্মান করা হয়েছে। এ জিনিস সহ্য করা হবে না। গদ্দার কে, তা সকলেই জানে। এমন উচ্চমানের নেতাকে গদ্দার বলার কোনও অধিকার নেই একজন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানের।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডি করার অধিকার সকলেরই রয়েছে। তার অর্থ এই নয়, যে যা খুশি বলে যাবে। কমেডি করুন, আমাদের নিয়ে মস্করা করুন। কিন্তু অবমাননাকর মন্তব্য মেনে নেওয়া হবে না। ইচ্ছাকৃত ভাবে যদি উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে অসম্মান করা হয়ে থাকে তা কাম্য নয়।’ লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর হাতে লাল রঙের সংবিধানের ছোট সংস্করণ নিয়ে ছবি পোস্ট করেছেন কুণাল কামরা। বিতর্কের মুখে তাঁর এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট রাজনৈতিক তরজা আরও উস্কে দিয়েছে। সেই ছবিতে নজর পড়েছে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসেরও। তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধী যে লাল সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে ঘোরেন, সীমারেখা রয়েছে। ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। যারা গদ্দার তাদের ভাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাবাসাহেব ঠাকরের ঐতিহ্যকে যারা অসম্মানিত করেছে তাদের সঠিক জবাব দিয়েছে মানুষ।’
আরও পড়ুন-Constitution Change Controversy: 'মুসলিম সংরক্ষণের জন্য সংবিধানও বদলাব', কংগ্রেস নেতা শিবকুমারের মন্তব্যে তুলকালাম সংসদ
মহারাষ্ট্রের আরেক উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারও কুণাল কামরার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেইয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘আইনিরে ঊর্ধ্বে কেউ নয়। সংবিধান এবং আইন মেনে চলা আমাদের কর্তব্য। সেই গণ্ডির মধ্যে থেকে মন্তব্য করা উচিত। মতবিরোধ হতেই পারে তবে কখনওই এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে পুলিশি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়ে পড়ে।’
অন্যদিকে, শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার নেতা-কর্মীদের এই আচরণের নিন্দা করেছে বিরোধী কংগ্রেস, উদ্ধবসেনা। কুণালের পাশে দাঁড়িয়েছেন আদিত্য ঠাকরে, সঞ্জয় রাউতেরা। কংগ্রেস নেতা নানা পাটোলে এই ঘটনাকে মহারাষ্ট্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। মানুষ ভয়ে মহারাষ্ট্র ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে শিল্প কারখানা চলে যাচ্ছে। সরকার রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু তারা এভাবে ভাঙচুরে লিপ্ত হচ্ছে। তারা মহারাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চায়। এছাড়াও এনসিপি নেতা রোহিত পাওয়ার কুণাল কামরাকে সমর্থন করে বলেন, ‘এই ধরণের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য বালাসাহেব ঠাকরের মতো নেতার জন্য শক্তি ছিল। একনাথ শিন্ডে তার কর্মী। ২০০৩ সালে, ছগন ভুজবল, যিনি এখন মহাযুতিতে আছেন, তার উপর এই ধরণের মন্তব্য করা হয়েছিল। সেই সময়, তার কর্মীরা একটি অফিস ভাঙচুর করেছিল।তখন দায় স্বীকার করে ছগন ভুজবল পদত্যাগ করেছিলেন।’