২৫ বছর আগে নব্বইয়ের দশকের সন্ত্রাসবাদী কাজে লিপ্ত থাকার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং শ্রীনগরের কেন্দ্রীয় কারাগারে বেশ কয়েক বছর সে কাটায়।
আফগানিস্তানে ধরা পড়ল নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর ছেড়ে পালানো সন্ত্রাসবাদী এজাজআহমেদ আহানগর (ইনসেটে)।
আফগানিস্তানে গত ৪ এপ্রিল গ্রেফতার হয়েছে ২৫ মার্চ কাবুলের গুরুদোয়ারা হামলায় জড়িত সন্ত্রাসবাদী এজাজ আহমেদ আহানগর। জেরায় নিজেকে পাক নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিলেও ক্রমে জানা যায়, আদতে সে কাশ্মীরের নাওয়া কাদালের বাসিন্দা। আর এই অসঙ্গতি থেকেই জানা গিয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীর অভিনব জীবনকথা।
প্রায় ২৫ বছর আগে নব্বইয়ের দশকের সন্ত্রাসবাদী কাজে লিপ্ত থাকার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং শ্রীনগরের কেন্দ্রীয় কারাগারে বেশ কয়েক বছর সে কাটায়।
ছাড়া পাওয়ার পরে এজাজ সটান পৌঁছয় বাংলাদেশে। সেখান থেকে পাড়ি দেয় পাকিস্তানে। পঁচিশ বছর পরে কাবুল গুরুদোয়ারা হামলায় প্রধান অভিযুক্ত খোরাসানে ইসলামিক স্টেট-এর আঞ্চলিক প্রধান আসলাম ফারুকির সঙ্গে সে ধরা পড়ে।
গোড়ায় ফারুকিকে নিয়ে ব্যস্ত আফগান গোয়েন্দাদের সে নিজেকে পাকিস্তানি পরিচয় দিয়ে বোকা বানায়। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে তার আসল পরিচয় পরে জানা যায়। দিল্লির গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে এরপর কাবুলের যোগাযোগ হলে ফাঁস হয় তার আসল পরিচয়।
ক্রমশ প্রকাশ্যে আসে ৫৫ বছর বয়েসি এই সন্ত্রাসবাদী আসলে জম্মু ও কাশ্মীরে আইএস-এর সদস্য সংগ্রহ করার মূল মাথা। তার সম্পর্কে সবিস্তারে জানার পরে বিস্মিত কাবুল গোয়েন্দা দফতর।
জানা গিয়েছে, শ্রীনগর শহরতলির বুলগাম অঞ্চলে জন্ম এজাজ আহনগরের। তার শ্বশুর আবদুল্লা ঘাজালি ওরফে আবদুল গনি দার ছিল লস্কর-ই-তৈবার কম্যান্ডার। ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে তেহরিক-ই-মুজাহিদিন সংগঠন তৈরিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বহু ভাড়াটে যোদ্ধাই এই সংগঠনে নাম লেখায়।
ঘাজালির মেয়ে রুখসানার সঙ্গে বিয়ে হয় এজাজের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রীগরের লাল চৌকে জামিয়া মসজিদ আহল-এ-হাদিথের ভিতরে খুন হয় বছর আশির ঘাজালি। জানা যায়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই তাকে হত্যা করা হয়।
পাকিস্তানে পৌঁছানোর পরে এজাজকে ইসলামাবাদে আশ্রয় দেয় পাক গুপ্তচর বাহিনী আইএসআই। ২-০০৮ সালে নাশকতার ছক সাজানোর কৌশল হিসবে সে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মেয়ে আয়েশাকে বিয়ে করে।
এর কয়েক বছর পরে আফগান সীমানাঘেঁযা পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে সপরিবারে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরেই সে খোরাসানের আইএস বাহিনীতে যোগ দেয়।