রেজাউল এইচ লস্কর
সংসদে প্রণীত ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে ইসলামাবাদের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে ভারত বলেছে, এ বিষয়ে মন্তব্য করার অধিকার পাকিস্তানের নেই এবং এর পরিবর্তে প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।
কয়েকদিন আগে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের নতুন আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের ইসলামিক দাতব্য সংস্থাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করবে এবং এই সম্প্রদায়কে 'আরও কোণঠাসা' করে তুলবে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'ভারতের সংসদ কর্তৃক প্রণীত ওয়াকফ সংশোধনী আইন সম্পর্কে পাকিস্তান যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছে তা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি বলেন, 'ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করার কোনও অধিকার পাকিস্তানের নেই। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে অন্যদের কাছে প্রচার না করে পাকিস্তান নিজের খারাপ রেকর্ডের দিকে তাকানোই ভাল।
পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র শাফকাত খানকে সাংবাদিক সম্মেলনে এই আইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এটি ‘ভারতীয় মুসলমানদের ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন’।
শাফখাত খান বলেছিলেন, এই আইনটি ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্পত্তির অধিকার হরণ করে এবং সম্ভাব্যভাবে তাদের বেশ কয়েকটি মসজিদ, মাজার এবং অন্যান্য পবিত্র স্থান থেকে সরিয়ে দিতে পারে’ এবং'"বিভিন্ন ধর্মীয় ও দাতব্য উদ্দেশ্যে অর্পিত সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণে মুসলমানদের ব্যবস্থাপনাকে অবশ্যই ক্ষুণ্ন করবে'।
তিনি বলেন, আইনটি পাস হওয়ার ফলে 'ভারতে ক্রমবর্ধমান সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদের' প্রতিফলন ঘটেছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এটি 'ভারতীয় মুসলমানদের আরও প্রান্তিক করতে ভূমিকা নেবে।'।
প্রসঙ্গত ম্যারাথন বিতর্কের পর ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনটি সংসদে অনুমোদিত হয় এবং ৮ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। বিরোধী দলগুলি আইনটির সমালোচনা করে এটিকে 'মুসলিম-বিরোধী' এবং ‘অসাংবিধানিক’ বলে অভিহিত করেছে, অন্যদিকে সরকার মুসলমানদের সুবিধার লক্ষ্যে এটিকে ‘ঐতিহাসিক সংস্কার’ হিসাবে রক্ষা করেছে।
ওয়াকফ (সংশোধন) আইনটি কেন্দ্রীয় আইনে মৌলিক পরিবর্তন করে যা ইসলামিক দাতব্য সংস্থাগুলি পরিচালনা করে, একটি নতুন কাঠামো তৈরি করে যা অমুসলিমদের ওয়াকফ সংস্থার অংশ হওয়ার অনুমতি দেয় এবং সরকারী কর্মকর্তাদের ওয়াকফ সম্পত্তির সমীক্ষা পরিচালনা করার অনুমতি দেয়। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে। কার্যত ভারতের ওয়াকফ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে নাক গলাতে এসেছিল পাকিস্তান। কিন্তু তার পালটা জবাব দিল ভারত।