ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা চম্পাই সোরেন রবিবার বলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি ‘তিক্ত অপমান' অনুভব করেছেন, যা তাকে বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য করেছে।
বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই দিল্লি পৌঁছনোর পরেই তিনি এই মন্তব্য করেন।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে চম্পাই লেখেন, 'এত অপমানের পর আমি বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হলাম।
তাঁর অভিযোগ, তাঁর অজান্তেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তাঁর সমস্ত সরকারি কর্মসূচি আচমকাই বাতিল করে দেন দলীয় নেতৃত্ব।
তিনি বলেন, 'যখন আমি ভোট বাতিলের কারণ জানতে চাইলাম, তখন আমাকে জানানো হয় যে ৩ জুলাই দলের বিধায়কদের একটি বৈঠক রয়েছে এবং আমি তার আগে কোনও সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারব না।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান অন্য ব্যক্তির দ্বারা বাতিল করার চেয়ে অপমানজনক আর কিছু হতে পারে গণতন্ত্রে?
হেমন্ত সোরেনের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার থাকলেও তাঁকে বৈঠকের আলোচ্যসূচি সম্পর্কেও জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, 'বৈঠকে আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। আমি অবাক হয়ে গেলাম। যেহেতু আমার ক্ষমতার কোনো আকাঙ্ক্ষা ছিল না, তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগ করলাম। তবে আমার আত্মসম্মানে গভীরভাবে আঘাত লেগেছে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি আবেগপ্রবণ ছিলেন এবং তার কান্না চাপার নানা চেষ্টা করেন।
কিন্তু তার আগ্রহ ছিল চেয়ারের প্রতি। আমার মনে হচ্ছিল, যে দলের জন্য আমি সারা জীবন উৎসর্গ করেছি, সেই দলে আমার কোনো অস্তিত্ব নেই, কোনো উপস্থিতি নেই।
সোরেন উল্লেখ করেছেন যে তিনি এমন অনেক অপমানের মুখোমুখি হয়েছেন, যা তিনি এই মুহুর্তে বিশদ বিবরণ দিতে পছন্দ করেন না।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিষদীয় দলের বৈঠকে তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘আজ থেকে আমার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।’
সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত এবং আসন্ন ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমার এই যাত্রায় সমস্ত বিকল্প খোলা রয়েছে।
সোরেন জোর দিয়েছিলেন যে এটি তাঁর ব্যক্তিগত লড়াই এবং তিনি কোনও দলের সদস্যদের জড়িত করতে বা সংগঠনের ক্ষতি করতে চান না।
তিনি বলেন, 'যে দলকে আমরা রক্ত ও ঘাম দিয়ে লালন করেছি, তার ক্ষতি করার কথা আমি ভাবতে পারি না। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে..." ' যোগ করেন তিনি।
দলের সুপ্রিমো শিবু সোরেন স্বাস্থ্যগত কারণে রাজনীতিতে সক্রিয় নন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। হেমন্ত সোরেন বলেন, 'ও যদি সক্রিয় থাকত, তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি জনস্বার্থে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রবীণ, মহিলা, যুবক, ছাত্রছাত্রী এবং সমাজের প্রতিটি অংশের কথা বিবেচনা করে আমি আমার আমলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা রাজ্যের মানুষ মূল্যায়ন করবেন।
আর্থিক তছরুপের মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার ঠিক আগে পূর্বসূরি হেমন্ত সোরেন পদত্যাগ করার পরপরই ২ ফেব্রুয়ারি ঝাড়খণ্ডের দ্বাদশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন হেমন্ত সোরেন।
হেমন্ত সোরেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরে ২৮ শে জুন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। ৩ জুলাই তিনি দলের আইনসভা দলের নেতা নির্বাচিত হন।
এরপরই হেমন্ত সোরেন রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন, যার ফলে হেমন্ত সোরেনের তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পথ প্রশস্ত হয়।
পিটিআই ইনপুট সহ