হায়দরাবাদ পুলিশকে দেখে অনুপ্রেরিত হওয়া উচিত উত্তরপ্রদেশ পুলিশের। শুক্রবার ভোরে পুলিশি সংঘর্ষে হায়দরাবাদ ধর্ষণকাণ্ডে ৪ অভিযুক্তর মৃত্যুতে এমনই প্রতিক্রিয়া জানালেন বহুজন সমাজ পার্টি প্রধান মায়াবতী।এ দিন সংবাদসংস্থা এএনআই-কে তিনি জানান, ‘উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়ে চলেছে, অথচ রাজ্য সরকার এখনও ঘুমোচ্ছে। এখানে এবং দিল্লিতেও পুলিশের উচিত হায়দরাবাদ পুলিশের থেকে শিক্ষা নেওয়া। দুঃখের বিষয়, এখানে অপরাধীদের সরকারি অতিথির মর্যাদা দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশে এখন জঙ্গলরাজ চলছে।’হায়দরাবাদের শামশাবাদে বছর ছাব্বিশের তরুণী পশুচিকিত্সককে গণধর্ষণের পরে হত্যার ঠিক এক সপ্তাহ পরে এ দিন শাদনগেরর চাতানপল্লীতে চার অভিযুক্তকে অপরাধের ঘটনাপঞ্জী পুনর্নির্মাণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে পুলিশের অস্ত্র কে়ড়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। আত্মরক্ষায় পুলিশ পালটা গুলি চালালে ওই চার জন মারা যায়।ঘটনায় হায়দরাবাদ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসায় মুখর হয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজন। সংঘর্ষের পরে হায়দরাবাদ পুলিশের কর্মীদের এ দিন বীরের সংবর্ধনা দিয়েছেন জনসাধারণ। মায়াবতীর মতোই হায়দরাবাদ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের মৃত্যুতে পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী। একাধিক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, ‘চলতি শতকের উনিশতম বছরে নারী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই হল বৃহত্তম ঘটনা। এবার বিশ্বাস করতে পারি যে, অন্যান্য রাজ্যে শাসনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাও অপরাধীদের দ্রুত শিক্ষা দেওয়ার উপায় খুঁজে পাবেন। নিগৃহীতার পরিবারের শোক কখনও দূর করা সম্ভব নয়, কিন্তু তাঁর আত্মা এবার শান্তি পাবে এবং সারাদেশে মেয়েদের আতঙ্ক কমবে। জয় তেলেঙ্গানা পুলিশ।’হায়দরাবাদ পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোরও। তাঁর দাবি, এই ঘটনা উদাহরণ হিসেবে সারাদেশে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে হায়দরাবাদ পুলিশের পদক্ষেপের সমালোচনাও করেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী যেমন বলেছেন, ‘যা-ই ঘটে থাকুক, তা দেশের জন্য অত্যন্ত ভয়ানক হয়েছে। চাইলেই কাউকে খুন করা যায় না। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যায় না। আদালত চার অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজাই দিত।’ কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও সংবাদসংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, ‘বিশদ তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার আগে কখনই শাস্তি দেওয়া যায় না।’ হায়দরাবাদ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেন, দোষীদের ‘যথাযথ প্রক্রিয়ায়’ শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল। তাঁর দাবি, ‘আমরা বরাবরই অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছি, আর এখানে পুলিশই শ্রেষ্ঠ বিচারক, জানি না কী পরিস্থিতে এমন ঘটনা ঘটেছে।’ হায়দরাবাদকাণ্ডের জেরে সংসদীয় ভাষণে ‘ধর্ষণে অভিযুক্তদের গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা উচিত’ বলে বিতর্কের ঝড় তুলেছিলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন। এ দিন সকালে এএনআই-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেরিতে হল, যথাযথ হল। দেরিতে হল, অনেক দেরিতে হল।’