জার্মানির ভোটে চ্যান্সেলারের গদিতে বসতে চলেছেন কনজারভেটিভদের ফ্রেডরিক মের্জ। রবিবারের ভোটে জার্মানি কার্যত পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। মসনদ খোয়াচ্ছেন ওলাফ শোলজ। জার্মানিতে মধ্য ডানপন্থী দল হিসাবে পরিচিতি রয়েছে ‘ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের’। এই দলের সেনাপতিই হলেন মের্জ। আর ভোটে কার্যত বাজিমাত করে দেখিয়েছে তাঁর দল। এদিকে, জার্মানির ভোটে অন্যতম চমকপ্রদ বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী কট্টর ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’ বা ‘এএফডি’। ভোটে কট্টর ডানপন্থী এই দলের ঐতিহাসিক জয় নিঃসন্দেহে জার্মানির রাজনীতিতে নয়া সমীকরণের মাইলস্টোন তৈরি করছে বলে মত অনেকের।
জার্মানির ভোটের ইস্যু:-
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে জার্মানিতে ভোটের ইস্যু হিসাবে অভিবাসন একটি বড় জায়গা দখল করে ছিল। সেই জায়গা থেকে উদ্বাস্তু ইস্যু একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে জার্মানির ভোটে। ‘ফার্স্ট পোস্ট’র তথ্য বলছে, রবিবারের ভোটে জার্মানিতে প্রায় ৫ লাখ ভোটারই হলেন অভিবাসী। তথ্য বলছে, ২০১৫-১৬ সালের মধ্যেই শুধু জার্মানিতে এসেছেন ১ মিলিয়ন অভিবাসী। সবচেয়ে বেশি অভিবাসী সেখানে রয়েছেন সিরিয়া থেকে। এরপরই রয়েছেন আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে আসা অভিবাসীরা। এছাড়াও এবারের ভোটে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিও ছিল একটি ইস্যু। এছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছে সেদেশে বাড়ি ভাড়ার খরচের অঙ্কও বেশ ভাবনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সেই দিক থেকে এই জার্মানির অর্থনীতি একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় ভোটে।
( Jamaat-e-Islami: নজরে আগামী ভোট! কাশ্মীরে নিষিদ্ধ জামাতের প্রাক্তনীদের একাংশ আনছে নয়া রাজনৈতিক দল, আবেদন ECকে)
( New York-Delhi Flight in Rome:নিউ ইয়র্ক থেকে দিল্লিগামী বিমানের 'দিক' ঘুরিয়ে হঠাৎ অবতরণ রোমে! নজরে নিরাপত্তা, কী ঘটেছে?)
ভোট ঘিরে তথ্য:-
জার্মানির বুকে উদ্বাস্তু বিরোধী দল হিসাবে পরিচিতি রয়েছে এডিএফ বা অতি ডানপন্থী ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’ পার্টির। তারা প্রায় ২০ শতাংশ আসন দখলে রেখে ১৫১ টি সিটে এগিয়ে। কনজারভেটিভদের দল মার্তজের সিডিইউ/সিএসইউ ২৮.৫ শতাংশ আসন দখলে রেখে ২০৮ আসনে দাপট দেখিয়েছে জার্মানিতে। কার্যত এই দলের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ফলে জার্মানির চ্যান্সেলারের মসনদে এবার শোলজের জায়গায় আসছেন মের্জ। পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন ‘সেন্টার লেফ্ট সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস’ পার্টির ওলাফ শোলজ। জার্মানির ভোটে বামেদের পরাজয় সেদেশের রাজনীতিতে বেশ প্রাসঙ্গিক।
মের্জ কে?
এদিকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে উচ্ছ্বসিত মের্জ বলেন,' আজ রাতে উদযাপন করি, কাল সকালে কাজ করতে হবে… দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা সজাগ'। আইনজীবী পরিবারের সন্তান মের্জের জন্ম ১৯৫৫ সালের জার্মানিতে। তিনিও ১৯৭৬ সালে উচ্চশিক্ষায় আইনের পাঠ শুরু করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে তিনি নির্বাচিত হন ইউরপিয়ান পার্লামেন্টে। ২০০০ সালে তিনি সিডিইউ পার্টির নেতা হন। ২০০৯ সালে ছেড়েছেন সক্রিয় রাজনীতি। পরে ফের প্রায় ১০ বছর পর তিনি রাজনীতিতে কামব্যাক করেন মার্কেলের অবসরের পর।