হাতে আর একদিন বাকি। তারপরই শুরু হয়ে যাবে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বুকে টানটান স্নায়ুর লড়াইয়ে ভোটগ্রহণ হবে। সেক্ষেত্রে আজ, সোমবার প্রচারের শেষ দিন। দিল্লিতে ভোট প্রচারের এই শেষ দিনে কার্যত স্লগ ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারকে কড়া ভাষায় নিশানা করলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সরাসরি বিজেপির সঙ্গে আঁতাত রয়েছে নির্বাচন কমিশনারের বলে আক্রমণ করলেন আপের আহ্বায়ক। কেজরিওয়ালের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে বিজেপিকে নির্বাটনে জেতাতে সক্রিয় হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে না নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি বিরোধী অন্য দলগুলি। এবার তা সরাসরি সামনে নিয়ে এলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আজ সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে অরবিন্দ বলেন, ‘আজ নির্বাচন কমিশন যেভাবে বিজেপির সামনে আত্মসমর্পণ করেছে সেটাতে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের অস্তিত্ব বলে কিছুই নেই। এই উদাসীন মনোভাব খুব বড় প্রশ্ন প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে। জনগণের মনে এখন যুক্তিপূর্ণভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই মাসের শেষে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরে রাজীব কুমারজি কোন পদ পেতে চলেছেন? তাঁকে কী ধরনের পদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে?’
আরও পড়ুন: বানতলা কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার ঠিকাদার, তিনজন শ্রমিকের মৃত্যুর জের
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পর মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও লোভনীয় পদে আসীন হবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই কথা বলার পর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে একদফায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। এখানের ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে। এখানে মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আপ, বিজেপি এবং কংগ্রেস। তবে মূল লড়াই আপ–বিজেপির মধ্যেই হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশের মদতে বিজেপি হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে আম আদমি পার্টি।
চলতি মাসের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সুতরাং অবসর নেবেন তিনি। তারপর তাঁকে বড় পদে নিয়ে আসবে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই অভিযোগ প্রাক্তন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। কেজরিওয়াল আজ অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন কমিশনের একাংশ অফিসারের মদতে ‘হোম ভোটিং’–এর নামে কারচুপি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজেপি। দিল্লির বিভিন্ন বস্তির গরিব ভোটারদের কাছে নির্বাচন কমিশনের নাম করে বিজেপির কর্মীরা নকল ইভিএম নিয়ে হাজির হবে। আর ওই নকল ইভিএমের বোতাম টিপিয়ে আঙুলে ‘আসল’ কালি লাগিয়ে দেবে। আর বুধবার কারচুপির ঘটনা জানতে পারলেও তখন ওই ভোটারদের ভোটদানে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না। তাই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশ্ন রাজীব কুমারের উদ্দেশে, ‘আপনাকে কি রাজ্যপাল পদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে? নাকি রাষ্ট্রপতির?’