ইউরোপের ছ'টি দেশ থেকে তাদের বিভিন্ন ব্র্য়ান্ডের পণ্য়ের একাধিক ব্যাচ প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফে এই বিষয়ে যে খবর সামনে আসছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের।
শোনা যাচ্ছে, কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষের ধারণা, সংশ্লিষ্ট নরম পানীয়ের ব্যাচগুলিতে রাসায়নিক দূষণ ঘটতে পারে! এই কারণেই ইউরোপের ছ'টি দেশ থেকে কোক, স্প্রাইট, ফ্যান্টা প্রভৃতির একাধিক ব্যাচ তুলে নেওয়া হচ্ছে।
সংস্থার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট নরম পানীয়গুলির নমুনা পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, তাতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে 'ক্লোরেট' রয়েছে। যার ফলে তা রাসায়নিক দূষণ ঘটাতে পারে। এবং তাতে মানুষের স্বাস্থ্যহানি হতে পারে।
এক্ষেত্রে ক্য়ান এবং কাচের বোতল - দুই ধরনের পাত্রে সরবরাহ করা পানীয়ই তুলে নেওয়া হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ওই পানীয়গুলি ইউরোপের মোট ছ'টি দেশে সরবরাহ করা হয়েছিল। দেশগুলি হল - ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম এবং নেদারল্য়ান্ডস। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে এগুলি সরবরাহ করা হয়েছিল।
তবে, চিন্তার বিষয় অন্য। বিবিসি-র তরফে এই সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ ও সম্প্রচার করা হয়েছে, তাতে দাবি করা হচ্ছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই দূষিত পণ্যের পাঁচটি প্রোডাক্ট লাইন ব্রিটেনে পৌঁছে গিয়েছিল এবং সেগুলি বিক্রিও হয়ে গিয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে, কোকা-কোলা সংস্থার তৈরি কোক, স্প্রাইট, ফ্যান্টা, মিনিট মেড এবং ট্রপিকো ব্র্যান্ডগুলিতে এই দূষণ ঘটেছে। সংস্থার আন্তর্জাতিক বটলিং এবং বণ্টন ব্যবস্থাপনার হয়ে বেলজিয়াম শাখার পক্ষ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে।
যদিও সংস্থার বক্তব্য, এই ঘটনা 'খুবই কম সংখ্যক আমদানিকৃত ক্যান'-এর ক্ষেত্রে ঘটেছে। তার মধ্য়ে রয়েছে - 'অ্যাপলেটাইজার, কোকা-কোলা জিরো সুগার, ডায়েট কোক, কোকা-কোলা ওরিজিন্যাল টেস্ট এবং স্প্রাইট জিরো'।
এই পণ্যগুলির প্রোডাক্ট কোড ৩২৮ জিই থেকে ৩৩৮ জিই-র মধ্য়ে রয়েছে বলেও সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ক্যানের নীচের অংশের বাইরের দিকে দেখলেই এই কোড দেখতে পাওয়া যাবে। এবং এভাবে দূষিত (বা সম্ভাব্য দূষিত) পণ্য চিহ্নিত করা যাবে।
প্রসঙ্গত, যেকোনও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের ক্ষেত্রে ক্লোরিন ভিত্তিক জীবানুনাশক ব্যবহার করা হয়। মূলত, ওয়াটার ট্রিটমেন্টের সময় তাতে এই ক্লোরিন ভিত্তিক জীবানুনাশক মেশানো হয়। কিন্তু, এই জীবানুনাশক থেকেই ক্লোরেট উৎপন্ন হতে পারে এবং তা যদি নির্দিষ্ট মাত্রার তুলনায় বেশি হয়, তাহলে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা থাকে।
যদিও সংস্থার এক মুখপাত্রের দাবি, এই ধরনের রাসায়নিক দূষণ ঘটলেও সেই পানীয় যদি কেউ পান করেন, তাহলে তার থেকে বিরাট কোনও ক্ষতি হয় না। এবং এখনও পর্যন্ত ব্রিটেনে অন্তত এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ কোনও ক্রেতার তরফে আসেনি বলেই দাবি করা হচ্ছে।