ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে তাঁকে 'কোলহান টাইগার' বলা হয়। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও জেএমএমের তাবড় নেতা চম্পাই সোরেন সদ্য যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে কার্যত ঝাড়খণ্ডে জেএমএম সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। চম্পাইয়ের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে হেমন্ত সোরেনের সরকার গুপ্তচরবৃত্তি করেছে। এলাকায় তাবড় উপজাতি নেতা তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত চম্পাইয়ের এই দাবি বেশ তাৎপর্যমূলক।
শুক্রবার এক বর্ণাঢ্য সমাবেশে চম্পাই সোরেন যোগ দেন বিজেপিতে। তিনি সাফ জানান, এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের জন্য এলাকার উপজাতি সংকটে রয়েছে। শুধু চম্পাই নন। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁর পুত্র বাবুলাল সোরেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের উপস্থিতিতে ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে চম্পাই ও তাঁর পুত্র যোগ দেন বিজেপিতে। এই অনুষ্ঠানে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি প্রধান বাবুলাল মারান্ডিকে দেখা যায়, চম্পাইকে মালা পরিয়ে গ্রহণ করতে। কোলহান এলাকায় বিপুল জনতার সামনে এই যোগদান হয় চম্পাইয়ের। চম্পাই জানিয়েছেন, তাঁর জেএমএম ছাড়া ও বিজেপিতে যোগদান করা একটি ঠান্ডা মাথায় নেওয়া সিদ্ধান্ত।
চম্পাইয়ের বিস্ফোরক অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডের জেএমএম সরকার গুপ্তচরবৃত্তি করেছে। তিনি বলেন, ‘ আমি পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ। আমি কখনো ভাবিনি যে তারা আমার পিছনে গুপ্তচর লাগাবে। আমি এটি জানতে পেরেছিলাম কলকাতায়, এবং এটি দিল্লি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম—যে যিনি নিজের পরিবারকে ত্যাগ করে ঝাড়খণ্ডের জন্য লড়াই করছে, তাঁকে কীভাবে গুপ্তচরবৃত্তি করা যায়? এটা কি শুধুমাত্র গুপ্তচরবৃত্তি ছিল, নাকি অন্য কিছু ছিল? এটা তদন্তের বিষয়।’ ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই বলেন, ঝাড়খণ্ড সরকারের ওই নজরদারির পর্বের পরে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার তাঁর সংকল্প আরও শক্তিশালী হয়েছিল। এদিকে, চম্পাইয়ের ওই বিস্ফোরক দাবির পর ঝাড়খণ্ডের জেএমএম সরকার ও রাজ্যের পুলিশ স্পষ্ট করেছে যে, দুজন স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সদস্য চম্পাইকে অনুসরণ করছিলেন, চম্পাইয়েরই নিরাপত্তার জন্য। এদিকে, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরা ধীরে ধীরে এলাকার উপজাতিদের জন্য হুমকি হয়ে উঠছেন বলে দাবি চম্পাইয়ের। তিনি বলেন,'সাঁওতাল পরগণায় আদিবাসীদের বহু গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কোনও কোনও গ্রামে কোনও আদিবাসীও পাওয়া যায় না।' তিনি একইসঙ্গে দাবি করেন,' অনুপ্রবেশকারীদের রুখবে বিজেপি। আমার জীবন সংগ্রামে পরিপূর্ণ। সেই কন্ঠ আজও বেঁচে আছে। আমি কখনই আদিবাসীদের উপর অত্যাচার হতে দেব না।'