বিগত কয়েক মাসে বাংলাদেশি হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ক্রমেই বেড়েছে। মহম্মদ ইউনুসের জমানায় বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়েছে উঠেছে মৌলবাদী শক্তি। এহেন পরিস্থিতিতে বারংবার দিল্লির তরফ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এস জয়শংকর ফের একবার বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তিনি বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এবার সেই উদ্বেগের জবাব দিল ঢাকা। বাংলাদেশি বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এই নিয়ে বললেন, 'বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়টি ভারতের জন্যে কোনও ইস্যু হতে পারে না।' তিনি আরও বলেন, 'ভারতে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন আচরণ হচ্ছে, সেটা দিল্লির অভ্যন্তরীণ ইস্যু।' (আরও পড়ুন: চালু হবে 'গোল্ড কার্ড', মার্কিন নাগরিত্বের টিকিট বিক্রির ঘোষণা ট্রাম্পের)
আরও পড়ুন: ইউনুসের বাংলাদেশকে কাছে টানতে নয়া ছক, 'রেড কার্পেট' বিছিয়ে দিল চিন
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এস জয়শংকর বলেছিলেন, 'বাংলাদেশের দু'টি বিষয় ভারতের জন্যে বেশ উদ্বেগের। যেভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে, তার জেরে ভারতের মনোভাবে প্রভাব পড়ছে। আমরা সেটা নিয়ে কথাও বলেছি। দ্বিতীয় বিষয় হল, তাদের নিজেদের রাজনীতি আছে। তবে দিনের শেষে প্রতিবেশী হিসেবে তারা আমাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়, সেটা নিয়ে তাদের মনস্থির করতে হবে।' (আরও পড়ুন: 'নয়া সূচনা' নিয়ে বড় দাবি চিনা রাষ্ট্রদূতের, বেজিংয়ে মোদীকে চাইছে চিন)
আরও পড়ুন: 'বকুনি' হজম করে আমেরিকার সঙ্গে নয়া চুক্তির পথে ইউক্রেন, কী চাইছেন ট্রাম্প?
জয়শংকরের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রশ্ন করা হয়েছিল তৌহিদ হোসেনকে। এর জবাবে তৌহিদ বলেছিলেন, 'নিশ্চিত ভাবে বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান ঠিক করবে। একই সময়ে ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটা পারস্পরিক বিষয়। আমরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে অবস্থান নিয়ে নিশ্চিত। আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে একটি সম্পর্ক চাই। আমেদর অবস্থানে কোনও দোনামোনা নেই।' এরই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশি সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়া অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এই আবহে তিনি বলেন, 'আমার বিশ্বাস, আমাদের একে অপরের বিষয়ে নাক গলানো উচিত না।' (আরও পড়ুন: ফ্রেশার ছাঁটাই বিতর্কের মাঝে কর্মীদের বেতন বাড়াল ইনফোসিস, কত হল 'হাইক'?)
আরও পড়ুন: কলকাতায় শুরু হবে রান্নার গ্যাসের পাইপ বসানোর কাজ, কোথায় বসবে প্রথম লাইন?
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাসকটে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী মুখোমুখি হয়েছিলেন। এই বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, তৌহিদ হোসেন ও জয়শঙ্কর দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুজনের আলোচনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। ২০২৪-এর ডিসেম্বরে ঢাকায় দুই দেশের বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের উল্লেখও করা হয়। এছাড়া গত ১০-১১ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি উপদেষ্টার দিল্লিতে একটি সম্মেলনের যোগদানের বিষয়টিও উঠে আসে। এছাড়া দুই দেশের মধ্য়ে সম্পাদিত গঙ্গার জল বন্টনে চুক্তি ফের পুনর্নবীকরণের আলোচনা শুরুর উপর জোর দিয়েছিলেন তৌহিদ হোসেন। জয়শংকরের কাছে তৌহিদ হোসেন আবেদন জানান যাতে সার্ক স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করে ভারত।