বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এই আবহে বেঙ্গালুরু পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অতুলের বাবা। এরই সঙ্গে তিনি পুলিশকে অনুরোধ করলেন, তাঁরা যেন নাতিকে হাতে পান। বর্তমানে অতুল সুভাষের ছেলে সিংহানিয়া পরিবারের সাথে রয়েছে। নিকিতার গ্রেফতারির পর পবন কুমার বলেন, 'নিকিতা সিংহানিয়ার পরিবারকে গ্রেফতার করার জন্য আমি পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের নাতি বেঁচে আছে কিনা বা সে কোথায় আছে তাও আমরা জানি না। আমরা পুলিশকে অনুরোধ করছি আমাদের নাতির বিবরণ দিতে এবং তাকে আমাদের হাতে তুলে দিতে। আমরা চাই আমাদের নাতি আমাদের সঙ্গে থাকুক।' (আরও পড়ুন: সম্পত্তি কর বাবদ বকেয়া ১৪ কোটি, কাজ থমকাতেই আদালতে কলকাতার ট্রাম্প টাওয়ার)
আরও পড়ুন: এখনও বকেয়া ৮৪.৩ কোটি ডলার, আদানির দেনার দায়ে হাবুডুবু খাচ্ছে ইউনুসের সরকার
এদিকে বেঙ্গালুরু পুলিশ রবিবার ঘোষণা করেছে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অতুল সুভাসের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিকিতা সিংহানিয়াকে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে এবং তার মা নিশা সিংহানিয়া এবং ভাই অনুরাগ সিংহানিয়াকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানিয়েছেন, পুলিশ বিভাগ এই মামলায় অভিযুক্তদের তদন্ত করবে। তিনি বলেন, 'এই ঘটনা পুরুষের অধিকার এবং এই ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করছে তা নিয়ে দেশে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে। কী কারণে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করলেন এবং তার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার সত্যতা যাচাই করে দেখছে পুলিশ বিভাগ।' (আরও পড়ুন: 'আরজি কর মামলায় আরও জোরালো তথ্যপ্রমাণ সহ সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেবে CBI')
আরও পড়ুন: 'যতদিন আন্দোলনের চাপ ছিল, তদন্ত সঠিক পথে চলেছিল', বললেন আরজি করের নির্যাতিতার মা
উল্লেখ্য, মৃত ইঞ্জিনিয়ার অতুলের ভাই বিকাশের করা এফআইআর অনুযায়ী, নিকিতা তাঁর স্বামীর থেকে ৩ কোটি টাকা চেয়েছিল মামলা তুলে নেওয়ার শর্তে। এছাড়া নিজের ছেলে দেখার জন্যে অতুলের থেকে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন নিকিতা। এই আবহে নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। (আরও পড়ুন: বিচারে বিলম্বের জন্য এবার আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মাকেই দায়ী করলেন কুণাল ঘোষ!)
আরও পড়ুন: গলফগ্রিনে কাটা মুন্ডু কাণ্ডে মিলল বাকি দেহ, কেন শ্যালিকাকে খুন জামাইবাবুর?
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া। সেখানে নিকিতা অভিযোগ করেছিলেন, পণ চেয়ে তাঁকে হেনস্থা করতেন অতুল। সেই অভিযোগে নাম ছিল অতুলের ভাই, বাবা-মায়ের নামও। এছাড়াও সেই অভিযোগে আইপিসির বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা হয়েছিল অতুলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ পত্রেই নিকিতা অভিযোগ করেছিলেন, অতুল মদ্যপান করে তাঁর সঙ্গে 'জানোয়ারের মতো আচরণ' করত এবং ১০ লাখ টাকা পণ চেয়ে নাকি মারধর করত। এমনকী স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে নাকি পুরো বেতন নিজের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতেন অতুল। তবে নিজের ২৪ পাতার সুইসাইড নোটে এই অভিযোগের জবাব দিয়ে গিয়েছেন অতুল। (আরও পড়ুন: আরজি করের আটতলার ঘর কেন সিল করা হয়েছে? ফের মিলছে রহস্যের গন্ধ)
আত্মহত্যার আগে অতুল প্রায় দেড় ঘণ্টার যে ভিডিয়ো করেছেন, তাতে অতুল অভিযোগ করেছেন, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মিথ্যে অভিযোগ করেছিলেন নিকিতা। প্রতি মাসে দু'লাখ টাকা খোরপোষ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের এক বিচারকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন অতুল। তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন বিচারক। অতুল অভিযোগ করেন, একটা সময় নিকিতা তাঁকে বলেছিলেন যে কেন আত্মহত্যা করছেন না ৩৪ বছরের ইঞ্জিনিয়ার। আর সেই কথা শুনে বিচারকও হেসেছিলেন। আর নিকিতাকে আদালতকক্ষ ছেড়ে যেতে বলেছিলেন। তারপর একই কথা বলেছিলেন তাঁর শাশুড়ি। পরবর্তীতে যখন শাশুড়িকে প্রশ্ন করেছিলেন যে তিনি আত্মহত্যা করলে খোরপোষ কে দেবেন, টাকা কে মেটাবেন। তখন শাশুড়ি বলেছিলেন যে অতুলের পরিবারের থেকে টাকা আদায় করবেন। আর তাঁদের আদালতের চক্কর কাটিয়ে ছাড়বেন।