উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তার মধ্যেই ছড়াল অশান্তির আগুন। পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সূত্রের। ঘটনাস্থল, সম্ভল।কী ঘটেছিল?স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার উত্তরপ্রদেশের সম্ভল এলাকায় নতুন করে শাহি জামা মসজিদের সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়। এদিন সকাল ৬টা নাগাদ এলাকায় পৌঁছে যান সমীক্ষক দলের সদস্যরা।সেই দলে ছিলেন - জেলাশাসক রাজেন্দ্র পানসিয়া, পুলিশ সুপার কৃষ্ণ বিষ্ণোই, মহকুমাশাসক বন্দনা মিশ্রা, সার্কেল অফিসার অনুজ চৌধুরী এবং তহসিলদার রবি সোনকার।সমীক্ষা চলাকালীন যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিরাট বাহিনী এবং ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্যদেরও আগে থেকেই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল।কিন্তু, তা সত্ত্বেও সমীক্ষকরা এলাকায় পৌঁছতেই পরিবেশ অশান্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের একটি সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, মুহূর্তে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উন্মত্ত ও মারমুখী জনতার একাংশ পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। এমনকী, সেই সময় হামলাকারীদের কেউ কেউ গুলিও চালায় বলে অভিযোগ।পুলিশের দাবি, হামলাকারীদের রুখতে পালটা অভিযানে নামতে হয় তাদেরও। পুলিশের বিরুদ্ধে জনতাকে লাঠিপেটা করার অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে, পুলিশের দাবি, ক্ষুব্ধ জনতা একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগাতে শুরু করে। যার ফলে একটা সময় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়।এরপর পাশের জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মোরাদাবাদের ডিআইজি মুনিরাজ জি।এইভাবেই অশান্তির মধ্যে প্রায় দু'ঘণ্টা সময় কেটে যায়। তারপর শুরু হয় সমীক্ষার কাজ। কিন্তু, তখনও সেখানে কিছু বিক্ষোভকারী জমায়েত করে পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে থাকেন বলে অভিযোগ। তাতে বেশ কয়েকজন আহত হন।আহত এক পুলিশকর্মী এবং জনতার মধ্যে আহত দু'জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।পরবর্তীতে, আরও পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারা ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। তাতে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ইতিমধ্যেই সেই সংঘর্ষের ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।একইসঙ্গে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করে লাগাতার গুলি ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে। তাতে এখনও পর্যন্ত তিন যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।মসজিদের সমীক্ষা কেন করা হচ্ছে?স্থানীয় একটি আদালতের নির্দেশ অনুসারে সম্ভলের ওই মসজিদে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর কেলা দেবী মন্দির কমিটির তরফ থেকে চনদৌসির একটি আদালতে মামলা রুজু করা হয়।মামলাকারীদের দাবি, সম্ভলের শাহি জামা মসদিজ আসলে শ্রী হরিনাথ মন্দির। যা সম্রাট বাবরের শাসনকালে, ১৫২৯ সালে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছিল।এই আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিচারক আদিত্য সিং ওই দিনই মসজিদের ভিডিয়োগ্রাফি সমীক্ষা করার নির্দেশ দেন।