খাদ্য গণবণ্টন বিভাগের তিন আধিকারিককে হন্যে হয়ে খুঁজছেন দুর্নীতিদমন বিভাগের (অ্য়ান্টি-কোরাপশন ব্যুরো বা এসিবি) গোয়েন্দারা। অভিযোগ, ওই তিন আধিকারিক নাকি এক রেশন দোকানের মালিকের কাছে ঘুষ নিয়েছেন। সেই ঘুষ শুধুমাত্র নগদ টাকার দাবি নয়। জানা গিয়েছে, ঘুষ হিসবে ওই রেশন দোকানের মালিকের কাছে অ্যাপল সংস্থার তৈরি দামি স্মার্টফোন এবং ততোধিক দামি গৃহস্থালীর সরঞ্জাম - যেমন - এয়ার কন্ডিশনার প্রভৃতি চাওয়া হয়!এই ঘটনা তখন সামনে আসে, যখন আর কোনও উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়েই ওই তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রূপেশ কুমার নামে ওই রেশন দোকানের মালিক। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর গ্রাহকের সংখ্য়া হাজার খানেক।অভিযোগ, ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বিনিময়ে ওই তিন রেশন আধিকারিক তাঁর কাছ থেকে তাঁর প্রাপ্য কমিশনের ১০ শতাংশ দাবি করেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে উপহার হিসাবে ওই তিন আধিকারিককে একটি আইফোন ১৫প্রো, একটি অ্যাপল ঘড়ি এবং একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পর্যন্ত কিনে দিতে হয়!অভিযোগকারী জানিয়েছেন, ওই তিন আধিকারিকের দাবি মেটাতে মেটাতে তাঁর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। তাই বাধ্য হয়েই অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।টাইমস অফ ইন্ডিয়া অনুসারে - গত বছরের (২০২৪) জুলাই মাসে এসিবি-র কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেন রূপেশ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তিন আধিকারিক হলেন - ফুড ইন্সপেক্টর প্রেমপূর্ণ সিং, অ্যাসিসট্যান্ট ফুড সেফটি অফিসার বিজয় এবং ডেপুটি ফুড সেফটি অফিসার অনিল কুমার।অভিযোগ, এই তিনজন রূপেশের প্রাপ্য কমিশনের যে ১০ শতাংশ হাতিয়ে নিতেন, তা নিজেদের মধ্যে যথাক্রমে - ২ শতাংশ, ৩ শতাংশ এবং ৫ শতাংশের হিসাবে ভাগ করে নিতেন!রূপেশ কুমারের অভিযোগ, '২০২৪ সালের মার্চ মাসে অনিল কুমার আমাকে একটি আইফোন ১৫ প্রো কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। যার দাম ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সেই বিল আমার নামে কাটা হয়েছে। তিনি আমার কাছ থেকে একটি অ্য়াপল ঘড়িও নেন। তার দাম ৯০,০০০ টাকা। প্রেম পূর্ণ সিং আমাকে দিয়ে তাঁর বাড়িতে একটি এসি বসিয়েছেন। সেটির দাম ৫৬,০০০ টাকা।'রূপেশের অভিযোগ, তাঁর এলাকায় সমস্ত রেশন দোকানের মালিককেই এই অত্য়াচার সহ্য করতে হয়। এমনকী, রেশন বণ্টনের ক্ষেত্রেও কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, এই তিন আধিকারিক সমস্ত রেশন ডিলারের কাছ থেকে ১০ শতাংশ করে কমিশন আদায় করেনে। সব মিলিয়ে তাঁরা কোটি কোটি টাকা এভাবেই কার্যত তোলাবাজি করে রোজগার করেন।জানা গিয়েছে, ইতিমধ্য়েই ঘটনার তদন্ত করে তার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করেছে এসিবি। সেই পর্ব সারা হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। তারপরই তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। অন্যদিকে, অভিযুক্তরা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়।