অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে অতিশির নাম ঘোষণা করতেই কার্যত তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন আম আদমি পার্টির নেত্রী তথা দলের রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল। অতিশিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করার পাশাপাশি তাঁর বাবা-মাকেও আক্রমণ করতে ছাড়লেন না তিনি। নেপথ্য কারণ, আফজল গুরুর প্রতি অতিশির বাবা-মায়ের পুরোনো সমবেদনা!
গোটা ঘটনায় রীতিমতো তিতিবিরক্ত আপ নেতৃত্ব কড়া ভাষায় জবাব দেয় স্বাতীকেও। তাদের স্পষ্ট বার্তা, দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এত সমস্যা থাকলে স্বাতী রাজ্যসভা থেকে আপ-এর সাংসদ পদ ছেড়ে বিজেপির কাছে টিকিট চাইতে পারেন।
উল্লেখ্য, জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বেরোতেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপর জল্পনা মতোই সেই পদে নিযুক্ত করা হয় কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী অতিশিকে।
দলের এই সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষুব্ধ স্বাতী এরপরই নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে 'ডামি মুখ্যমন্ত্রী' বলে কটাক্ষ করেন। তাঁর মতে, অতিশিকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করার এই দিনটি জাতীয় রাজধানীর জন্য একটি 'দুঃখের দিন' হয়ে থাকবে।
তবে, দলীয় সহকর্মীকে নিশানা করেই থামেননি স্বাতী। আক্রমণ করেছেন তাঁর প্রবীণ বাবা-মাকেও। স্বাতীর বক্তব্য, অতিশির বাবা-মা ২০০১ সালের সংসদ হামলায় দোষী আফজল গুরুর ফাঁসি আটকাতে তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে লিখিত আবেদনপত্র দাখিল করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টও করেন স্বাতী।
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে সেই পোস্টে একটি পুরোনো ভিডিয়োর অংশ জুড়ে দেন স্বাতী। তাঁর আশঙ্কা, এহেন পরিবারের মেয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় দেশের রাজধানীর সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই নিরাপত্তার প্রশ্নে ঈশ্বরের উপরেই ভরসা রেখেছেন তিনি!
দলীয় সাংসদের এহেন আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ আপ শীর্ষ নেতৃত্ব। তাদের তরফে কড়া ভাষায় স্বাতীকে জবাব দেওয়া হয়।
আপ নেতা দিলীপ পাণ্ডে যেমন বলেন, 'এতটুকুও যদি লজ্জা-শরম থাকে...' তাহলে স্বাতীর অবিলম্বে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। বদলে তিনি 'বিজেপির কাছে টিকিট চাইতে পারেন।'
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দিলীপ বলেন, 'একটি বিষয় বুঝতে হবে। স্বাতী মালিওয়াল হলেন এমন একজন, যিনি আপ-এর টিকিটে সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু, বিজেপির কথা মতো চলছেন। ওঁর যদি আর একটুও লজ্জা-শরম বাকি থাকে, তাহলে রাজ্যসভার সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপির কাছে টিকিট চাওয়া উচিত।'