২০২৪ সালের টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা শিশু অর্থাৎ 'কিড অফ দ্যা ইয়ার' নির্বাচিত হয়েছেন হেমান বেকেলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা এই শিশুটি। পনেরো বছরের এই শিশু এটি সাবান আবিষ্কার করেছেন, যা ক্যানসার চিকিৎসায় অনবদ্য একটি উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিতে গিয়ে তিনি প্রায় তিন বছর ধরে বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন। বাড়িতে যা কিছু পেতেন তাই মিশ্রিত করে দেখতেন। নতুন কিছু তৈরি করার আশা সব সময় ছিল তাঁর মনে। এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েই একদিন হয়ে গেল সেই চমৎপ্রদ আবিষ্কারটি।
গত ১৭ আগস্ট ২০২৪ টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশেষ সংস্করণের শিরোনাম এবং তার প্রচ্ছদে এই শিশুটির ছবি ছাপা হয়। ত্বকের ক্যানসার চিকিৎসায় খুব সস্তা সাবান আবিষ্কার করার জন্য এই সম্মান দেওয়া হয় তাঁকে। শুধু তাই নয়, এই সাবানটি আবিষ্কার করার জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে আমেরিকার সেরা তরুণ বিজ্ঞানী হিসেবেও নির্বাচিত করা হয়েছিল।
(আরও পড়ুন: বর্ষায় শরীরের পাশাপাশি চোখেও দেখা যায় সংক্রমণ, কীভাবে আটকাবেন এটি)
এই প্রসঙ্গে হেমান বলেন, ‘এগুলো ছিল কেবল ডিশ সাবান, লন্ড্রি ডিটারজেন্ট এবং সাধারণ গৃহস্থালির রাসায়নিক উপাদান। আমি এই সমস্ত মিশ্রণ বিছানার নিচে লুকিয়ে রাখতাম। দেখতাম রেখে দিলে কী হয়। এলোমেলো ভাবে একসঙ্গে অনেকগুলি রাসায়নিকের মিশ্রণ এইভাবে রেখে দিয়েছিলাম একসঙ্গে। তারপরেই এই আবিষ্কারটি করে ফেলি।’
গত অক্টোবর মাসে ৩ - এম নামক একটি কোম্পানি এবং ডিসকভারি এডুকেশন ভার্জিনিয়ার ফেয়ার ফ্যাক্স কাউন্টির উডসন হাই স্কুলের ১০ তম শ্রেণীর ছাত্র হেমনকে তরুণ বিজ্ঞানী বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করেছে। শুধু তাই নয়, তাঁকে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এই সাবানটি এখনই হয়তো বাজারে আসবে না, আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। তবে যে আবিষ্কারটি হেমান করেছে, তা সত্যি বহু মানুষের জীবনে নতুন আলোর দিশা দেখাবে। হেমানের এই স্বপ্ন যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বহু মানুষের জীবন বেঁচে যাবে ত্বক ক্যানসার থেকে।
(আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নাকি সচেতনতা, কীভাবে আপনি কমাতে পারবেন সারভাইকাল ক্যানসারের ঝুঁকি)
উচ্ছাসিত হেমান এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি ত্বক ক্যানসার গবেষণার বিষয় সত্যি উৎসাহী, সেটা আমার নিজস্ব গবেষণা হোক বা অন্য ক্ষেত্র থেকে হোক। একদিন আমার তৈরি করা সাবান অন্য কারোর জীবনে প্রভাব ফেলতে পারবে, এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে। এতদিনে মনে হচ্ছে, আমার সমস্ত চেষ্টা সফল হয়েছে।’