Paracetamol Side Effects: জ্বর হোক বা সর্দি কাশি, অনেকের কাছেই সমস্যার সমাধান প্যারাসিটামল। কিছু হলেই প্রথমেই এই গ্যাসের ওষুধ ও এই ওষুধটার কথা মনে পড়ে অনেকের। কিন্তু প্যারাসিটামল নিয়ে নানা সময় বিতর্কও কম হয়নি। কোভিডের সময় অনেকে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্যারাসিটামল খাওয়া শুরু করেন। ঘরে একগাদা ওষুধের পাতা জমাতেও শুরু করেন অনেকে। কিন্তু মুড়ি মুড়কির মতো প্যারাসিটামল যে বিপজ্জনক হতে পারে, সে কথা তখনও চিকিৎসকদের মুখে শোনা গিয়েছিল। আদৌ প্যারাসিটামল কতটা ঝুঁকির, এই নিয়েই HT বাংলার সঙ্গে বিশদে আলোচনা করলেন ফর্টিস হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়দীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন - ‘রবীন্দ্রনাথকে ২ টাকা দেন…’ পৌষ মেলাই আশ্রমিকদের কাছে দুর্গাপুজো: শুভলক্ষ্মী
প্যারাসিটামল থেকে হার্ট অ্যাটাক?
সম্প্রতি একটি গবেষণা বলছে, বয়স্কদের প্যারাসিটামল খাওয়ার প্রবণতা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও, বাড়ে অস্টিয়োপোরোসিসের আশঙ্কা। এই প্রসঙ্গে জয়দীপ জানাচ্ছেন, ‘জ্বর সর্দি-কাশি আর গায়ে ব্যথায় প্যারাসিটামলকে আমরা অনেকটাই নিরাপদ বলে মনে করি। ওষুধটা খেলে হার্টের ক্ষেত্রে পালস রেট বাড়তেও পারে, কমতেও পারে। দুটোই দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেটা মাত্র ১-২ শতাংশ ক্ষেত্রে হয়। ফলে হার্ট অ্যাটাকের খুব কম ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি প্যারাসিটামল থেকে কিডনির ক্ষতির আশঙ্কাও খুব কম।’
হাড় ক্ষয়ে যায় সত্যিই?
ওই একই গবেষণায় দাবি অস্টিয়োপোরোসিস বাড়িয়ে দেয় প্যারাসিটামল। অর্থাৎ হাড়ের ক্ষয় বেড়ে যায়। এই ব্যাপারে জয়দীপের মন্তব্য, ‘এখানে আরেকটা ব্যাপার হল, জ্বর, সর্দি কাশি কোনওটাই দীর্ঘদিন ধরে চলে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল খাওয়ার ব্য়াপারও নেই। হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণ কমে গেলে অস্টিয়োপোরোসিস হয়। তাই অনেক দিন যাবৎ প্যারাসিটামল না খেলে ক্যালসিয়াম শোষণ কমে যাওয়ার কোনও কারণ নেই।’
আরও পড়ুন - যুগ বুঝে আধুনিক হবে পৌষ মেলা, শৈশব স্মৃতিতে ফিরলেন মেলার অন্যতম আয়োজক অনিল কোনার
লিভারের রোগ থাকলে…
তাহলে কোন অঙ্গের আদতে বিপদ বেশি? এই ব্যাপারে চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ‘মূলত যে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল আমরা দিতে চাই না, তা হল লিভারের সমস্যা। বর্তমানে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার জন্য় অনেকে লিভারের রোগে ভুগতে থাকেন। প্যারাসিটামল খেলে তাদের লিভারের রিপোর্টে একটু সমস্যা দেখা দেয়। তাই চিকিৎসকরা ওষুধ দেওয়ার সময় কিছুটা সতর্কতা মেনে চলেন। যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে, তাদেরও পরামর্শ নিয়ে তবেই খাওয়া উচিত।’
কখন প্যারাসিটামল বিপজ্জনক?
কখন এই ওষুধটি বিপজ্জনক হতে পারে? ডাক্তারবাবুর কথায়, ‘শীত পড়তেই অনেকের সর্দি কাশি হচ্ছে। এই সময় রেসপিরেটরি সিংসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি-র সংক্রমণ বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে অনেকে প্যারাসিটামল খান।তবে নির্দিষ্ট ডোজের বেশি যেকোনও ওষুধই বিপজ্জনক। প্যারাসিটামল তার ব্যতিক্রম নয়। প্যারাসিটামল অনেকই মুড়ি মুড়কির মতো খান। হয়তো একটা খেয়েছেন, জ্বর কমল না বলে দুই ঘন্টা পর ফের আরেকটা খেলেন। তাতেও কমল না বলে আবার এক ঘন্টা পর আরেকটা। এই প্রবণতাই শরীরের পক্ষে মারাত্মক বলে জানালেন চিকিৎসক। নয়তো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে রোগের ঝুঁকি খুব কম।’