
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
Shantiniketan Poush Mela Memories: ছোট থেকেই শান্তিনিকেতন তাঁর ঘর, পাঠশালা। বিশ্বভারতীই শিক্ষাক্ষেত্র আবার বিশ্বভারতীই কর্মক্ষেত্র। শান্তিনিকেতনে ‘আশ্রমিক’ বলতে আক্ষরিক অর্থে যা বোঝানো হয়, অনিলবাবু ঠিক তা-ই। একদা পাঠভবনের পড়ুয়া জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমানে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক। পৌষমেলার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা। চার বছর পর ট্রাস্টের প্রচেষ্টায় সফলভাবে আয়োজিত হল পৌষ মেলা। ঐতিহ্য মেনে চিরাচরিত আদলে। আয়োজনের ব্যস্ততার ফাঁকেই HT বাংলার সঙ্গে একান্ত কথোপকথনে শৈশবের স্মৃতিতে ফিরলেন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার। ফিরে এল পুরনো পৌষ মেলার নস্টালজিক কথা-দৃশ্য। শ্রোতা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
আরও পড়ুন - ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ শান্তিনিকেতনের প্রথম পৌষ মেলা, ভিন্ন আবেগের সাক্ষী হল HT বাংলা
১৯৫১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার অধিগ্রহণ করে বিশ্বভারতীকে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায় রবীন্দ্রনাথের প্রাণের প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৩ সালে স্কুলে ভর্তি হন অনিল। পাঠভবনে, ক্লাস টুয়ে। প্রায় ৭২ বছর আগের কথা। সে সময় পৌষ মেলার আয়োজন হত পুরনো মেলার মাঠে। ছাতিমতলার কাছে ওই মাঠে দোকান যে খুব বেশি বসত, তা নয়। অল্প সংখ্যক কিছু মণিহারির দোকান, গ্রামীণ কুটির শিল্পের জিনিসই বেশি। এছাড়া দু-একটা মিষ্টির দোকান, একটা রেঁস্তরার স্টল। ছোটদের কাছে মেলা মানেই এক বাঁধভাঙা আনন্দ। কথায় কথায় বললেন, ছোটবেলার পছন্দের খেলনাগুলির কথা। ‘মার্বেলের খেলার খুব চল ছিল তখন। মেলায় গেলে প্রথমেই খোঁজ পড়ত ওগুলি। এছাড়াও প্রিয় ছিল একধরনের স্প্রিংয়ের মতো খেলনা। নাম না জানা ওই খেলনাটি প্রায়ই কেনার তালিকায় থাকত।’
আরও পড়ুন - কেন ৭ পৌষেই শুরু হয় শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা ? নেপথ্যে দেবেন্দ্রনাথের এই কাহিনি
‘মেলায় তখনকার দিনে বিভিন্ন ঘরোয়া দ্রব্য, রান্নার জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসত আশেপাশের গ্রাম থেকে। অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসপত্র তখনও বাজারে ঠিকমতো ওঠেনি। ফলে লোহার হাড়ি, খুন্তি খুব বিকোত। এখনকার ছেলেমেয়েরা শুনলে অবশ্য হাসবে।’ মেলার চেহারা যে দিন দিন পাল্টাচ্ছে সে কথা মেনে নিলেন রসায়নের প্রাক্তন অধ্যাপক। এই বদলকে সমর্থন করেন বলেই জানালেন তিনি।
বিশ্বভারতীতে বিজ্ঞানের পড়ুয়া ছিলেন অনিল। কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা। পরবর্তীকালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনা। তাঁর কথায় যুক্তি স্পষ্ট। যুগের চাহিদা মেনেই মেলার চেহারা পাল্টে যাবে। বর্তমানে মেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক স্টল দিচ্ছে। স্টল দিচ্ছে তৃণমূল, সিপিএম-এর মতো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। শহর থেকে আসা বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ড জায়গা করে নিচ্ছে পৌষ মেলায়। আশ্রমিকদের কারও কারও খেদ, গ্রামীণ কুটির শিল্প, বাউলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল পৌষমেলা। এই চিরাচরিত ছবিটা ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে শহুরে ব্র্যান্ড সংস্কৃতি। কিন্তু যুগের প্রয়োজনকে অস্বীকার করতে নারাজ অনিল কোনার। উদ্যোক্তা হিসেবে অনিলবাবুর বক্তব্য, ‘বর্তমানে বহু মানুষ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেন। তাদের বিভিন্ন স্কিম, সুবিধা সম্পর্কে জানাতেই স্টলগুলি বসে। অন্যদিকে ব্র্যান্ডেড জিনিসের চাহিদাও বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাই তাদের প্রয়োজনের দিকটাও দেখতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও সেই কথা ভেবে সুযোগ করে দেওয়া হয়। সকলের দরকার মাথায় রেখেই পৌষ মেলা আয়োজিত হয়।’
সব অর্থনৈতিক শ্রেণির কথা ভেবেই মেলার দোকানগুলিকে সাজানো হয় পূর্বপল্লীর মাঠে। অনিলবাবুর কথায়, ‘নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য মেলায় যেমন কিছু দোকান রয়েছে, তেমন মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্যও রয়েছে। আবার উচ্চবিত্ত শ্রেণির জন্য়ও কিছু দোকান আছে মেলায়। খাবারের স্টল একদিকে মণিহারি আরেকদিকে, পোশাক-আশাক একদিকে, ছোটদের নাগরদোলনা ইত্যাদি আরেকদিকে — এভাবে গোটা মেলাকে সাজানো হয়েছে। মানুষের দরকার বুঝে আগামী দিনেও মেলা এভাবেই আয়োজিত হবে আশা রাখি।’
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports