ফের নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেশে। আর এই আবহেই মাস্কের অর্ডার বাড়ছে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে। সম্প্রতি একাধিক মাস্ক প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল থেকে মাস্কের অর্ডার আসতে শুরু করেছে। বাইপাস সংলগ্ন একটি সংস্থার কর্তার কথায়, গত মাসেও এত অর্ডার ছিল না মাস্কের। তাই উৎপাদন বাড়াতে হয়েছে। ইউনিটগুলি বেশি সময় ধরে কাজ করছে।
কী বলছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি?
মাস্কের ব্যবহার যে বেড়েছে তা স্বীকার করে নিচ্ছে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালও। অফিসিয়ালি কোনও বিজ্ঞপ্তি এখনও ডাক্তার বা নার্সদের দেওয়া হয়নি হাসপাতাল থেকে। কিন্তু কোভিডকালের কথা স্মরণ করেই মাস্কের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। ফিরিয়ে আনা হচ্ছে পুরনো অভ্যাস। আনন্দপুরের এক হাসপাতালের চিফ নার্স জানাচ্ছেন, মাস্কের ব্যবহার নিয়ে এখনই রোগীদের বা রোগীর আত্মীয়দের কিছু বলা হচ্ছে না। তবে ডাক্তার ও নার্সরা নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন - ‘তুমি না তুই’ কোন ডাকে প্রেম জমে ক্ষীর হয়? কী বলছেন মনোবিদ থেকে তরুণ প্রজন্ম, শুনল HT বাংলা
অশনি সংকেত?
সোমবারে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছিল হাজারের কোঠা। রোজই নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার খবর আসছে। এই অবস্থায় মাস্কের বিক্রি বেড়ে যাওয়া কি অশনি সংকেত? চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে বলেন, ‘এখনই তেমনটা বলা যাবে না। তবে মাস্ক ব্যবহার করার অভ্যাসটা বজায় রাখা দরকার। কারণ করোনা ছাড়াও আরও বেশ কিছু রোগ হাঁচিকাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেমন টিবি ও অন্যান্য ভাইরাল অসুখবিসুখ।’
আরও পড়ুন - কাঁদিয়ে ছেড়েছেন রীতিমতো, পুলিশ ডাকলে যাবেন? HT বাংলাকে বললেন বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসেওয়ের ভাইরাল ঘটনার পিঙ্কু
পরিস্থিতি কি গুরুতর?
সুবর্ণবাবুর কথায়, ‘২০২০ সালের মতো পরিস্থিতি এখন নয়। তখন নতুন ভাইরাসটি সম্পর্কে চিকিৎসক, বিজ্ঞানীরা কিছুই জানতেন না। কীভাবে চিকিৎসা করতে হবে, কী কী প্রোটিন রয়েছে এই ভাইরাসের, কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায় এগুলো ধীরে ধীরে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখন এই ভাইরাসের সবটাই আমাদের পরিচিত। ফলে ততটা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’
‘সরকারের যে বিষয়ে মনোযোগ হওয়া উচিত…’
সুবর্ণবাবুর কথায়, ‘কেন্দ্রের তরফে আক্রান্তের সংখ্যাটা শুধু প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু কতজনের টেস্ট করা হচ্ছে, তা কিন্তু বলা হচ্ছে না। তাই ইনফেকশন রেট বা সংক্রমণের হার বোঝা যাচ্ছে না। ধরা যাক ১০০ জনের টেস্ট করা হল। তার মধ্যে ১০ আক্রান্ত। তাহলে সংক্রমণের হার হবে ১০ শতাংশ। এই সংক্রমণের হারই বলে দেয় ভাইরাস কতটা মারাত্মক হতে পারে। হার যত বেশি, তত বেশি মারাত্মক হয় ভাইরাস। সরকারের উচিত, আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি কতজনের টেস্ট হচ্ছে, সেই সংখ্যাটাও প্রকাশ্যে আনা।’
‘মর্টালিটি রেটও দেখতে হবে’
ভাইরাসটি আদতে ভয়ের কি না, তা জানতে মর্টালিটি রেটের উপর জোর দেওয়ার কথা বললেন সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর কথায়, ‘নির্দিষ্ট একটি সংক্রমণে মৃত্যুর হারও দেখা জরুরি। বর্তমানে ১০০০ জন আক্রান্ত হলেও সেভাবে মৃত্যু বেশিজনের হয়নি। ফলে মর্টালিটি রেট কম। তাই এখনই এই ভাইরাস নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।’