ইউরিক অ্যাসিড বা কিডনির সমস্যা আছে শুনলেই পালংশাক, ডাল, টমেটো খাওয়া বন্ধ করে দেন অনেকেই। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই কারণে কষ্ট পাচ্ছেন। সম্প্রতি সেলেব্রিটি নিউট্রিশনিস্ট ঋতুজা দিবাকর নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউরিক অ্যাসিড নিয়ে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। যাতে তিনি ইউরিক অ্যাসিড কী, কেন হয়-এর পাশাপাশি কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়, তা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য শেয়ার করেছেন।
ইউরিক অ্যাসিড কী?
ইউরিক অ্যাসিড হল শরীরে থাকা এক ধরণের রাসায়নিক যা খাবার হজম করার সময় শরীরে উৎপন্ন হয়। ইউরিক অ্যাসিডে 'পিউরিনস' নামে এক ধরণের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কিছু কিছু খাবারের মধ্যে পাওয়া যায়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে কিডনিতে যায়, এবং সেখান থেকে পরিশ্রুত হয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। কিন্তু শরীর যখন ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন কিডনি তাঁকে পরিশ্রুত করতে পারে না পুরোপুরি। ফলে দেখা দেয় একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার ঝুঁকি বেশি। তবে, মহিলাদের থেকে পুরুষরা এই রোগের শিকার বেশি হন। যার কারণ, তাঁদের মদ ও সিগারেটের মতো নেশার অভ্যাস। তাই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নেশা ছেড়ে দেওয়া উচিত। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রার উপস্থিতির ফলে গেঁটে বাত বা গিঁটে গিঁটে ব্যথার মতো একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আবার বংশগত।
কী করবেন?
- মদ-সিগারেট-সহ যে কোনও নেশা একেবারে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ এগুলো শরীরে টক্সিন বাড়ায়, যার ফলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
- নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখুন। যাঁরা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তাঁরা প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন। শরীরচর্চা করুন।
- খুব বেশি প্রাণিজ প্রোটিন খাওয়া যাবে না ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে। দিনে ৫০ গ্রামের বেশি নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাছ বা চিকেন খাওয়া গেলেও, মাছের মুড়ো, চিকেন বা মাটনের মেটে বাদ দিতে হবে। সামুদ্রিক মাছও এড়িয়ে চলুন। হ্যাম এবং বিফ একদম খাবেন না। রান্নায় তেল মশলা কম দিন।
- বেশি করে জল খান। দিনে ৪-৫ লিটার জল খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করে ফেলুন।
- ফ্যাট ফ্রি দুধ বা স্কিম মিল্ক খাওয়া শুরু করুন। এছাড়া পিনাট বাটার, ফল, শাকসবজি খান বেশি পরিমাণে। শস্যদানা, রুটি, আলু-ও চলতে পারে। দুধ ও চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করে ফেলুন।
- ঘুম যেন ভালো হয়। সময়মতো ঘুমোতে যান, ও সকালে সময়মতো ঘুম থেকে উঠুন।