বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > Exclusive Swastika: সৃজিত এত্ত প্রেম করেছে যে অস্কার পেতে পারে, তবে ওঁর সঙ্গে সম্পর্কে থেকে কাজ পাওয়া যায় না: স্বস্তিকা
পরবর্তী খবর

Exclusive Swastika: সৃজিত এত্ত প্রেম করেছে যে অস্কার পেতে পারে, তবে ওঁর সঙ্গে সম্পর্কে থেকে কাজ পাওয়া যায় না: স্বস্তিকা

এক্সক্লুসিভ স্বস্তিকা

'উনি চাইলে প্রযোজক, পরিচালকের সঙ্গে এটা নিয়ে বলতে পারেন। আর দেব তো ওনার দলেরই সাংসদ। তাই নিজেরা কথা বলে নিন না। আমাকে কেন মাঝখান থেকে কচুকাটা করছেন সেটাই বুঝতে পারছি না। হয়ত যে মেয়েরা সুন্দর, তাঁদের হয়ত কুণাল ঘোষ বেশি করে আক্রমণ করতে ভালোবাসেন। I'm very Beautiful, So It'S oK।'

আরজি কর নিয়ে প্রতি মুহূর্তে পথে নেমেছেন। মানুষের সঙ্গে পা মিলিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। নাহ সেলিব্রিটি নয়, এক্কেবারে সাধারণ নাগরিক হয়েই নির্যাতিতার বিচার চেয়ে চলেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তবে এবার পুজোয় মুক্তি পেতে চলেছে ‘টেক্কা’। অগত্যা তাই মন খারাপটা কিছুক্ষণ চাপা রেখে অভিনেত্রী হিসাবে ছবি নিয়ে কথা বলতেই হচ্ছে স্বস্তিকাকে। তবু আরজি কর প্রসঙ্গ কি এড়ানো যায়? আর তাই 'টেক্কা' নিয়ে Hindustan Times বাংলার সঙ্গে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের একান্ত আলাপচারিতায় একাধিকবার উঠে এল আরজি কর প্রসঙ্গ…।

কেমন আছো? প্রশ্ন করতেই স্বস্তিকা বললেন, ‘আর এই পরিস্থিতিতে যেমন থাকা যায় আরকি…! নিজেকে ভালো রাখারই তো যুদ্ধ চলছে। বাইরে একটা বৃহত্তর যুদ্ধ চলছে।’

টেক্কা আসছে, তবে এই ছবিটা কেন বেছে নিয়েছিলেন?

স্বস্তিকা: ছবিটা আমি বেছে নিইনি। আসলে পরিচালকই আমায় বেছেছিলেন। আর যদি বলেন, আমি কেন 'হ্যাঁ' বলেছিলাম, তাহলে বলব আমার মায়ের চরিত্র করতে খুব ভালো লাগে। কারণ, আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে আমায় কম খাটতে হয়। ৭০ভাগটা খুব ন্য়াচারালি হয়ে যায়। বাকি ৩০ভাগ চরিত্রের কাঠামো অনুযায়ী, সেই চরিত্রের ঘর সংসারের অবস্থা কেমন, অর্থনৈতিক অবস্থান কেমন, সে বিধবা না সধবা, তার আরও সন্তানেরা আছে কি নেই, তার বরের বিবাহ-বহির্ভূত প্রেম আছে কি নেই, তার sexual orientation, চরিত্রের এসব নানান পরিধি থাকে, সেটা হল বাকি ৩০ ভাগ। তবে ৭০ভাগ না খেটেই করে নিতে পারি। সেজন্যই মা হতে আমার খুবই ভালো লাগে।

'টেক্কা'র মা ঠিক কেমন?

স্বস্তিকা: টেক্কার মা বেশ অন্যরকম। যখন আমরা ইরাকে ছবিটাতে দেখি, যাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে, সেটাও জানতে পারি। তখন থেকেই চরিত্রটা লড়াকু। সে জানে না, তাঁর মেয়েকে কে কিডন্যাপ করেছে, মেয়ে কোথায় আছে, সুস্থ আছে নাকি অসুস্থ? এই এত্ত প্রশ্ন। মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে শুনলেই একটা মায়ের মনে হাজারো প্রশ্ন ভর করে। আর এখানে ইরা-র জীবনটা পুরোটাই টানাপোড়নের। এধরনের চরিত্র করতে ভালো লাগে। চরিত্র যত শক্ত হবে, ততই সেটা করতে আমি আগ্রহী। যত জটলিতা, ততই আমার মনে হয়, 'দারুণ বিষয়'। তাই ইরার চরিত্রটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং ছিল, যে এই মাকে আমরা অন্য মায়ের থেকে কতটা আলাদা করে তুলতে পারি।

অনেকদিন পর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে…

স্বস্তিকা: অবশ্যই এটা পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি। অনেক নামী-দামি পরিচালক উনি। ওনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত জায়গাটা যাই হোক না কেন, পরিচালক হিসাবে তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্য়িই ভালো। এছাড়াও সুপারস্টার দেবের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। দেব প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গেও প্রথম কাজ এমনকি রুক্মিণীর সঙ্গেও। তাই এখানে অনেকগুলো ভালোলাগা একসঙ্গে কাজ করেছিল। কত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের স্বপ্ন থাকে, যে তাঁরা সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে কাজ করবেন, সুপারস্টার দেবের সঙ্গে কাজ করবেন। তাই এটা আমারও একটা স্বপ্নপূরণ বলতে পারেন।

দেব নাকি রুক্মিণী ফ্লোরে কাকে কত নম্বর দেবেন?

স্বস্তিকা: আমি আসলে রুক্মিণীর সঙ্গে বেশি সময় কাটিয়েছি টেক্কার সময়। ছবিতেও রুক্মিণীর সঙ্গেই অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছি। সেকারণে, আমি দেবের থেকে ওকে একটু বেশিই নম্বর দেব। (হাসি)

দেব অভিনেতা হিসাবে কতটা পরিণত হয়েছেন?

স্বস্তিকা: বিশাল…। মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখলে এত গ্রোথ হয় না, অভিনেতা দেবের এত গ্রোথ হয়েছে (হাসি)। ও সুপারস্টার ইমেজ থেকে বের হয়ে অভিনেতা হিসাবে নিজেকে ভাঙছে। অন্য ধরনের ছবি করার রিস্ক নিচ্ছে। সব ছবি হয়ত বক্স অফিসে দারুণ বিজনেজ করছে না। তবে তাতে দেবকে দমানো যাচ্ছে না। সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

পরিচালক সৃজিতকে কতটা বদলাতে দেখলেন?

স্বস্তিকা: শান্ত হয়ে গেছে খুব। (মৃদু স্বরে) ৬ বছর পর ওর সঙ্গে কাজ করলাম। ৬ বছর আগে যখন ওর সঙ্গে কাজ করেছি, তখন সেটে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ আবহাওয়া থাকত। ও তো বড় ক্যানভাসে ছবি করে। ওর সঙ্গে আমি আগে যে ছবিগুলো করেছিলেন শাহজাহান রিজেন্সি, জাতিস্মর, মিশর রহস্য, সবগুলোই বড় ক্যানভাস ছিল। তবে এবার আর সেটে গিয়ে মনে হয়নি যে যুদ্ধ চলছে। আর এত বছর সৃজিত কাজ করছে, এত ছবি করেছে, টেকনিক্যালি ও খুবই পাওয়ার ফুল। ক্যামেরাও এবার মাঝেমধ্যে করছে দেখলাম, বেশ ভালো লেগেছে সেটা। আমার মনে হল আমরা সবাই বড় হয়ে গিয়েছি, শিল্পী হিসাবে।

মাঝে ৬ বছর সৃজিতের সঙ্গে কাজ করেননি, এমন কখনও হয়েছে উনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আপনি না করেছেন?

স্বস্তিকা: আমি চেয়েছি, উনি দেননি, এটা ১কোটিবার হয়েছে। আমি এটা গলা ফাটিয়ে বলব। আমি ওঁর একাধিক ছবিতে কাজ করতে চেয়েছি, বলেছি, ওই চরিত্রটা প্লিজ আমাকে দাও, সেটা বহুবার ঘটেছে। তবে একটা-দুটো ছবিতে হয়ত ও আমাকে গেস্ট অ্যাপিয়ারেস্ট করতে বলেছিল, সেটা আমি করিনি। মোটামুটি ওকে জুতো মেরেছিলাম, যে তোমার সাহস কী করে হয় যে আমায় তুমি এটা করতে বলছো! তারপর ভেবেছিলাম, ওর সঙ্গে কোনওদিনও আমার মুখ দেখাদেখি হবে না। এত ঝগড়া হয়েছিল। তবে ও বেশ তাড়াতাড়ি ঝগড়া-টগড়া সব ভুলে যায়। সেটা ওর একটা ভালো দিক। আমি কিন্তু ভুলি না।

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একসময় সম্পর্কে ছিলেন, এখন সেটা নেই, তাতে কি কাজের ক্ষেত্রে কখনও কোনও প্রভাব পড়ে বলে মনে হয়?

স্বস্তিকা: সম্পর্কে এখনও আছি। তবে হ্য়াঁ, পরিধিটা পাল্টেছে। যখন সম্পর্ক ছিল, তখন আমি ওকে বারবার বলতাম, আমাকে এই চরিত্রটা দাও। ভাবতাম, আমরা একে অপরকে ভালোবাসি তাই এই কথাটা ও ফেলবে না। তবে প্রতিবারই ও নাকচ করে দিত। সৃজিতের সঙ্গে যখন আমার ওইরকম প্রেম ছিল, মানে ডেট করছি, তখন ও আমার কোনও কথা শুনে কোনও চরিত্র দেয়নি।

সৃজিতের এটা একটা গুণ। ওর তো অগণিত সম্পর্ক। এত্ত প্রেম করেছে মোটামুটি ও অস্কার পেতে পারে। তবে ওই প্রেমের সঙ্গে ওর কাজের কোনও সম্পর্ক ছিল না। এটা কখনওই হয়নি যে সৃজিতের সঙ্গে প্রেম করলেই ওর ছবিতে কাজ করা যায়। আমাকে যদি ও না বলে থাকে, তাহলে ও অন্যদেরও না-ই বলবে।

দেবের সঙ্গে আবার কাজ করতে চাইবেন?

স্বস্তিকা: নিশ্চয় করব। আমি তো ছবির প্রচারে প্রত্যেকদিন ওকে এটা বলছি যে দেখো, টেক্কা তো একসঙ্গে করলাম। তবে তোমার সঙ্গে স্ক্রিনে আমি বেশি নেই। এরপরে এমন ছবি করতেই হবে যেখানে তোমার ১০০টা দৃশ্যের মধ্যে যেন ৯৮টা দৃশ্যেই আমি থাকি। ওকে রোজ মনে করাচ্ছি এটা। কারণ, কাজ শেষ হলে ওকে তো ফোন করে বলতে পারব না যে, হ্যালো দেব গুডমর্নিং লেটস ওয়ার্ক টুগেদার (হাসি)। তাই যতক্ষণ ও কাছে থাকে, ততক্ষণ টং টং টং করে মনে করাতেই থাকি।

টেক্কা-র একটা পোস্টার নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, কুণাল ঘোষ আপনার বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছেন।

স্বস্তিকা: ওনার অনেক সময় জীবনে। উনি যা ইচ্ছে বলুন। উনি হয়ত ছোট থেকেই এই শিক্ষাই পেয়েছেন যে মহিলাদের কীভাবে আক্রমণ করতে হয়। ওনার বাবা-মা হয়ত ওটাই শিখিয়েছেন। আর আমার বাবা-মা শিখিয়েছেন এগুলোতে গা না করতে। আর আমি অত বড় কেউ নই, যে ডিরেক্টার, প্রডিউসারদের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাব। জিগ্গেস করব যে এই পোস্টার কেন দিলে? এটা আমার কাজও নয়। যদি ঘোষ মহাশয়, ওনার পদবীটাও আবার সন্দীপ ঘোষেরই মতোই আর কি। বড়ই অদ্ভুত বিষয়…।

উনি মৌসুমী ভট্টচার্যকে নিয়েও সম্প্রতি বিতর্কিত কিছু কথা বলেছেন…

স্বস্তিকা: বললাম না, ওনার বাবা-মা ওঁকে হয়ত এটাই শিখিয়ে গিয়েছেন যে মেয়েদের দেখলেই কুরুচিকর মন্তব্য করবে। তাই উনি সেটাই করছেন। এবার উনি যদি ওনার ছেলেপুলেকেও এটাই শেখান, তাহলে ওঁরাও এটাই করবেন। তবে আমার বাবা-মা এটা শিক্ষা দেননি। আমিও এটা আমার সন্তানকে শেখাব না। উনি চাইলে প্রযোজক, পরিচালকের সঙ্গে এটা নিয়ে বলতে পারেন। আর দেব তো ওনার দলেরই সাংসদ। তাই নিজেরা কথা বলে নিননা। আমাকে কেন মাঝখান থেকে কচুকাটা করছেন সেটাই বুঝতে পারছি না।

হয়ত যে মেয়েরা সুন্দর, তাঁদের হয়ত কুণাল ঘোষ বেশি করে আক্রমণ করতে ভালোবাসেন। I'm very Beautiful, So It's oK।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

ঘটনার সাফাই দিতে দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছিলেন, 'কালীঘাটের ময়না' বলে যথন ট্রোল করা হয়, তার বেলা?

স্বস্তিকা: অবশ্যই অন্যায় হয়। সেটাও অন্যায়। আমি একদমই এটাকে সমর্থন করি না। প্রতিবাদ করতে গিয়ে যাঁরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করছেন। সেটাও সমর্থন করি না। তারও প্রতিবাদ করছি। আমি বিশ্বাস করি না যে একজন মেয়ের জন্য লড়াই করতে গিয়ে আরেকজন মেয়েকে অপদস্থ করতে হবে। সেটা যেই হোন না কেন, আমার কলাকুশলী, যাকে সহ্য করতে পারি না, সেই মেয়েটি, কিংবা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আমার যদি মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করার হয়, তাহলে ওনার সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করব। উনি কেন মেয়েদের সুরক্ষার জন্য সঠিক পরিকাঠামো তৈরি করছেন না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলব। তবে উনি মহিলা বলে, উনি কীভাবে হাঁটেন, কথা বলেন, ওনার জামাকাপড় নিয়ে সমলোচনা একেবারেই করব না।

আপনি যাঁদের নাম নিলেন, ওনাদেরও যদি আমাদের সমালোচনা করতে হয়, তাহলে আমাদের শিক্ষা, কথাবলার ভঙ্গী, আমদের বুদ্ধ, ঠিক করে ইংরাজি বা বাংলা না বলতে পারা এসব নিয়ে উনি সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু সমালোচনা শরীর কেন্দ্রীক কেন হবে? মেয়েদের বুক-পেট-পাছার বাইরে কি আর কিছু নেই! আমার অসুবিধা সেখানেই। ওনাদের সমালোচনা শুধুই শরীর সর্বস্ব কেন? উনি তো মৌসুমী একটা গাধা, মৌসুমী বোকা, বা উনি ঠিক বলেননি, এসব বলে সমালোচনা করতেই পারতেন। তা নাহলে শরীর টেনে কেন সমালোচনা! শরীর নিয়ে কূটকাচালি, যেটা আগে পাড়ার কিছু মহিলারা করতেন। পাড়ার সেই কূটকাচালি এখন শিফট হয়ে ফেসবুকে চলে গেছে। ফেসবুক তো এখন একটা পাড়া।

ট্রোলিং-এর কথাই যদি আসে, তাহলে আপনি তো এখন এটার কেন্দ্রবিন্দুতে…

স্বস্তিকা: হ্যাঁ, আমি এই ক্লাসে একদম ফার্স্ট হই। আমি খুব ইমপর্টেন্ট। যে যা খুশি বলুক আমি শুধু বলতে চাই ‘বেশ করেছি’। আমার বাবা আমাকে বলেছিল, বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আয়নার সামনে একবার বলতে যে ‘বেশ করেছি’। তাই আমি এটাই বলি। আমি জানতাম আমি খুবই ক্ষুদ্র একজন ব্যক্তি। তবে আমি যে এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তা সত্য়িই জানতাম না। আরজি করের ঘটনার পর বুঝেছি।

প্রতিবাদে যখন নেমেছেন, রাস্তায় নেমেছেন, তখন আপনি বারবার বলেছেন সাধারণ নাগরিক হিসাবই গিয়েছেন। তবে মানুষের কী আলাদা কোনও প্রতিক্রিয়া দেখেছেন আপনার মতো শিল্পী তাঁদের মধ্যে দেখে?

স্বস্তিকা: জনসাধরাণের সঙ্গে সাধারণের মতো মিশে যখন রাস্তায় নেমেছি, সেখানে হয়ত অনেকেই আমাকে চেনেন। তাই অনেকে আমার প্রশংসা করেছেন, হয়ত বলেছেন আপনার শিরদাঁড়া সোজা। অনেকে হয়ত বলেছেন আপনাকে ভীষণ ভালোলাগে। আপনার কথা বলা ভালো লাগে, আপনি সাহসী সেটা হয়ত অনেকে বলেছেন। অনেকে হয়ত রাতের শেষে ভোর ৪টের সময় বলেছেন বাড়ি চলে যাব দিদি, একটা ছবি তুলতে পারি? এগুলো হয়েছে। তবে আমি সিনেমা করি বলে, আমায় রাস্তায় দেখে কেউ আদেখলাপনা করেছেন, বা আমার ঘাড়ে পড়েছেন, এমনটা হয়নি। কারণ, তাঁরাও যে মানসিকতা থেকে রাস্তায় নেমেছিলেন, আমি সেই মানসিকতা নিয়েই নেমেছি। আমি তো কম করে ১০-১৫ দিন রাস্তায় থেকেছি, আমার কখনওই মনে হয়নি, আমার নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজন, বা বাউন্সারের প্রয়োজন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে বরং অনেক অপরিত পরিচিত হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আমার এখন রোজই প্রায় যোগযোগ আছে।

ফেসবুকে লিখেছিলেন, একদিন প্রতিবাদ থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রিক্সাওয়ালার সঙ্গেও এটা নিয়ে কথা হয়েছে…

স্বস্তিকা: পরিস্থিতিই তো এমন। এখন সকলের সঙ্গে এই একই বিষয়ে কথা হচ্ছে। সে রিক্সাওয়ালা হোক,দারোয়ান হোক বা চা বিক্রেতা । কত মানুষ আমাদের রাতে রুটি-তরকারি দিয়ে গিয়েছেন, ছোলারডাল-লুচি দিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের থ্য়াংইউ বলে খেয়ে নিয়েছি। ঠিক পাত্রে দিয়ে গেল কিনা, আমি তো এটা খাই না, বা রাস্তার জিনিস, অন্যসময় যেসব ভাবনা থাকে, সেটা এবার একেবারেই ছিল না। আমার যেমন নিজেকে সাধারণ মনে হয়েছে, আমার পাশের মহিলারও নিশ্চয় আমায় সাধারণই মনে হয়েছে। তাই কোনও ভেদাভেদ ছিল না। খুশি ছিলাম যে সকলের সঙ্গে মিশে যেতে পেরেছি।

জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকের পর CP-কে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে, বরখাস্ত করা হয়নি। এবিষয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। কী বলবেন?

স্বস্তিকা: এই সিদ্ধান্তটা কারোরই বিশেষ পছন্দ হয়নি। কারণ, কেউ ভুল করলে তো তাকে বোঝতে হবে যে সে ভুল করেছে। কেউ ভুল করলে উল্টে যদি লজেন্স এনে দি, তাহলে কি তার সেই উপলব্ধি হবে যে সে ভুল করেছে বা তাঁরই গাফিলতিতে একটা বড় অঘটন হয়েছে? তাহলে কী লাভ হল! তবs জুনিয়র ডাক্তাররা যেটা করছেন, সেটা আমি সমর্থন করি। আমার মতো অনেকেই সমর্থন করেন। কারণ, আমরা যাঁরা রাস্তায় নেমেছি তাঁরা অনেকটা নিজেদের জন্যও নেমেছি। আপনার বা আমার কী সুরক্ষার দরকার নেই? বেশি রাত্রি হলেই যদি কেউ আমায় মলেস্ট করে, এই ভয় নিয়ে নিশ্চয় কেউ সারাজীবন বাঁচতে পারেন না।

সুরক্ষা দেওয়ার বদলে রাতে মহিলাদের কাজ না করার কথা বলা হয়েছে..

স্বস্তিকা: এটা তো কখনওই হতে পারে না। সেটা সুপ্রিম কোর্টও বলেছে। আমরা তো সকলে জেন্ডার ইকুয়ালিটির জন্য লড়ছি। আর এই সিদ্ধান্ত আমাদের অনেক বছর পিছনে ফেলে দেবে। ডাক্তারদের নাহয় শিফট আছে। ডাক্তার ছাড়া আরও তো অনেক পেশা আছে।

আরজি করের পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও যৌন হেনস্থা নিয়ে অনেকে সরব হচ্ছেন, কোথাও একটা কি পরিবর্তন আসছে?

স্বস্তিকা: কোথাও একটা জোর তো নিশ্চয় আসছে। কিছু বললেই কাজ থেকে বাদ পড়ে যাব, সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে অনেকেই পেরেছেন।

অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ, অথচ উনি বলছেন উনি নির্দোষ…

স্বস্তিকা: উনি তো রিপিট অফেন্ডার। আমার যতদিনের কেরিয়ার, ততদিন ধরেই শুনছি। শুধু ক্ষমতা আর পরিচিতি দেখিয়ে পার পেয়ে যান। সময় বদলেছে। উইমেন্স ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কার্স++ নামে যে ফোরামটা আমরা তৈরি করেছি। সেখান থেকে আমরা নিশ্চয় তাঁদেরকে সাপোর্ট দেব, যাঁরা মুখ খুলেছেন। শুধু অরিন্দম শীল নয়, এমন অনেকে আছেন। যাঁদের সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। তবে ওই যে কাজ চলে যাওয়ার ভয়, একঘরে হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে এতদিন মুখ খুলতেন না। এখন খুলছেন।

আরজি কর আবহে টেক্কা মুক্তি পাচ্ছে, দর্শক হলে গিয়ে ছবি দেখবেন বলে মনে হয়?

স্বস্তিকা: কারোর ইচ্ছে হলে দেখবেন। পরিস্থিতি এমন যে বিশাল কিছু আশা কেউই করতে পারছি না। আমরা সকলেই নিজেদের মতো চেষ্টা করছি কাজ-সংসার সামলে সকলেই যাতে সুরক্ষা নিয়ে সোচ্চার হতে পারি। তবে আমরা সকল কলাকুশীলারা যাঁরা টেক্কার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা নিশ্চয় চাইব, ছবিটা মানুষ দেখুন। তাঁদের ভালো লাগলে আমাদের জানান। একটা কাজের সঙ্গে তো শুধু অভিনেতারা যুক্ত থাকেন না, এখানে কম করে ১০০ জন লোক কাজ করেন। সকলেরই পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। তাই মানুষের যদি মনে হয় মন ভালো করতে একটা সিনেমা দেখি, তাহলে চাইব তাঁরা যেন টেক্কা দেখেন। আপনিও চাইবেন আপনার ইন্টারভিউটা মানুষ পড়ুন, আরও বেশি শেয়ার হোক তাই আমিও তেমন চাইব। কারণ এটা আমার কাজ।

পুজোতে কী করছেন?

স্বস্তিকা: অঞ্জলি দেব। যে বন্ধুদের বাড়ি যাই প্রত্যেক বছর, সেখানে যাব। টেক্কা নিয়েও নিশ্চয় অনেক জায়গায় যওয়ার পরিকল্পনা থাকবে, সেখানে সামিল হব দেব-রুক্মিণীদের সঙ্গে। আমার বাড়িতেও পুজো হয়, সেটাও হবে। এর বাইরে আর কিছু পরিকল্পনা নেই।

 

 

 

 

 

 

 

Latest News

মহিলা টেনিসে আসতে পারে ৫ সেটের লড়াই? নয়া ভাবনায় খুশি নন সাবালেঙ্কা!চোটের আশঙ্কা ভবিষ্যতে ফের ধর্ষণের জন্যে ভিডিয়ো করতে বলা হয়, কসবা কাণ্ডে 'দাদার কীর্তি' ফাঁস এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো বদলাতে পারে ভাগ্য, সেই সঙ্গে দূর করে বাস্তু সমস্যাও গৌড়বঙ্গের সমাবর্তন ঘিরে জট, সমস্যার সমাধানে উচ্চশিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ উপাচার্য হয়ে গেল 'রোশনাই'-এর শেষ দিনের শ্যুটিং! মনখারাপ করা পোস্ট পর্দার 'সুরঙ্গমা' উষসীর ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের FIR খারিজের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে কার্তিক মহারাজ ভারতের বিরুদ্ধে ২য় টেস্টের প্লেয়িং ইলেভেন জানাল ইংল্যান্ড, মাঠে নামছেন কারা? কংগ্রেসম্যানের কটাক্ষের মুখে মামদানি, সমর্থন ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রীর বাংলা সহ ১২ রাজ্যের সভাপতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল BJP? অঙ্ক কষে কী ঠিক করল? অপেক্ষা শুধু চূড়ান্ত শিলমোহরের, রাজ্য বিজেপির পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন শমীক

Latest entertainment News in Bangla

হয়ে গেল 'রোশনাই'-এর শেষ দিনের শ্যুটিং! মনখারাপ করা পোস্ট পর্দার 'সুরঙ্গমা' উষসীর সায়ক চক্রবর্তীর দাদা ও 'কুটনি বৌদি’র ডিভোর্স! বিয়ে ভাঙছে অভিনেত্রী সুস্মিতার বিগ বস ১৯-এ বিশেষ চমক, এবার প্রতিযোগী হয়ে আসছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের AI পুতুল সপ্তাহের ছুটি শেষে সোমবার ধস নামল কাজলের 'মা-এর আয়ে, ছবির আয় কত হল? মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই ওষুধটাই খেয়েছিলেন শেফালি জারিওয়ালা, কী সেই ওষুধ? কলকাতায় শেহনাজ-গিপ্পি, এবার এসভিএফ -এর ছবিতে দেখা মিলবে তাঁদের? 'স্পষ্ট করে বললেও লোকে ভুল ব্যাখ্যা করে…', ডিভোর্সের খবরে নীরবতা ভাঙলেন অভিষেক বাড়ি থেকে লুকিয়ে আমিরকে বিয়ে করার খবরে হার্ট অ্যাটাক হয় রিনার বাবার! তারপর? 'আমাকে যাঁরা পাকিস্তানে পাঠাতে চান, তাঁরা কৈলাসে যান…',দিলজিতের পাশে নাসিরউদ্দিন মিমির পর ওপার বাংলায় অলিভিয়া, ছবি না গান, কীসের শ্যুটিং করলেন তিনি?

IPL 2025 News in Bangla

রাজ কুন্দ্রা ব্ল্যাকমেল করছে! আদালতে দাবি রাজস্থান রয়্যালস কর্ণধার গোষ্ঠীর! সামনে নেই T20! তবু কেন টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই ইংল্যান্ডে গেলেন সূর্যকুমার যাদব? আইপিএল ২০২৫-এ সাফল্যের পর ওজন বেড়েছে বৈভব সূর্যবংশীর! কী বললেন রাহুল দ্রাবিড়? আমি Royal Challenge খাই না! RCBকে নিয়ে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রীর মজাদার মন্তব্য বেঙ্গালুরুতে RCB সমর্থকদের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুললেন রাহুল দ্রাবিড়! বিক্রি হতে পারে আইপিএল ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন RCB-র ফ্র্যাঞ্চাইজি: রিপোর্ট প্রীতি জিন্টার প্রশ্ন শুনে অবাক রিকি পন্টিং! কী বললেন পঞ্জাব কিংসের হেড স্যার? চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন সুনীল গাভাসকর বিরাট কোহলির জন্য ক্যাপ্টেনের প্রচলিত রীতি ভাঙলেন RCB-র অধিনায়ক রজত পতিদার অধিনায়ক হিসেবে রোহিত-গিলকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া শুরু শ্রেয়সের! বলছেন BCCI কর্তারাই

Copyright © 2025 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.