একসময় 'উনিশ-কুড়ি'র প্রচ্ছদের মডেল হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, পরবর্তী সময় তিনি বাংলা ছবির জনপ্রিয় নায়িকা। রাজ চক্রবর্তী, রাজা চন্দ, অরিন্দম শীল, বিরসা দাশগুপ্ত থেকে রবি কিনাগী, অভিজিৎ গুহ সহ বহু পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন পায়েল সরকার। আবার অনুরাগ বসুর পরিচালনায় হিন্দি ধারাবাহিকেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাজনীতিতেও যোগ দেন, ভোটে লড়েন আবার রাজনীতি থেকে সরেও দাঁড়ান। খুব শীঘ্রই 'ভোরের আলো' এবং শিশির ভাদুড়ির বায়োপিক 'বড়বাবু' ছবিতে দেখা যাবে পায়েলকে। ছবি, রাজনীতি সবকিছু নিয়েই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে কথা বললেন পায়েল সরকার।
'ভোরের আলো'-তে একজন প্যারালাইজড যুবতীর চরিত্রে। চরিত্রটা কতটা কঠিন?
পায়েল : কঠিন বলতে যেহেতু এখানে যেহেতু আমার একদিকটা প্যারালাইজড তাই ফিজিক্যালি চরিত্রটিতে আমার খুব বেশি কিছু করার নেই। সবটাই এক্সপ্রেশনে ফুটিয়ে তুলতে হবে। এটার জন্য আমি খুববেশি আলাদা করে যে প্রিপারেশন নিচ্ছি তা না, তবে চিত্রনাট্য পড়ছি, পরিচালক ঠিক কী চাইছেন, সেটা বুঝে নিচ্ছি, কিছু জিনিসের কনটিনিউটি বজায় রাখার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
এখানে আপনি আর সোমরাজ জুটি?
পায়েল : হ্যাঁ, আমার চরিত্রের নাম রূপসা, আর সোমরাজ হল অজয়। ছোটবেলায় একটি দুর্ঘটনার পর রূপসা প্যারালাইজড। ওঁর বাবা মারা গিয়েছেন, ওঁর খেয়াল রাখে অজয়। ওরা একে অপরকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

'ভোরের আলো'-তে পায়েল
আপনি একটা পিরিয়ড ফিল্মেও অভিনয় করছেন, যেটা কিনা শিশির ভাদুড়ির বায়োপিক…
পায়েল : 'বড়বাবু', রেশমি মিত্রের পরিচালনা। এটা শিশির ভাদুড়ির বায়োপিক, আর আমার চরিত্রের নাম কঙ্কাবতী। এটা অবশ্যই আমার কেরিয়ারে একটা গুরুত্বপূর্ণ ছবি। সেসময় কঙ্কাবতী প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট যিনি অভিনয়ে এসেছিলেন। তখন শিক্ষিত মহিলারা অভিনয়ে বিশেষ আসতেন না। কঙ্কাবতী ভীষণ ভালো গানও গাইতেন। যিনি কিনা রবীন্দ্রনাথকে গান শুনিয়েছিলেন। যেটা শুনে রবীন্দ্রনাথ নিজে গানের তালিম দেন। কঙ্কাবতীর সঙ্গে শিশির ভাদুড়ির আলাপ হয়, তিনি তাঁর নাটকের দলে যোগ দেন। শিশির ভাদুড়ির সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্কও গড়ে ওঠে কঙ্কাবতীর। বলা ভালো ইন্টেলেকচুয়াল বন্ডিং গড়ে ওঠে। যদি ও বয়সের অনেক ফারাক ছিল। এসবই ছবিতে উঠে আসবে। (হাসি)

'কঙ্কাবতী' পায়েল
একেবারে ভরপুর বাণিজ্যিক ছবি নাকি অন্যধারার ছবি, নাকি OTT কোনটা পছন্দ?
পায়েল : সবটাই। আমার মনে হয় একজন শিল্পীর সব ধরনের ছবি করা উচিত। তবে সে আরও পরিণত হবে। বাদ বিচারের দরকার নেই। আজকাল বিভিন্ন ধরনের ছবি হচ্ছে, ছবিতে মহিলা চরিত্রগুলির গুরুত্ব বাড়ছে এটা একটা ভালো দিক। আর সিনেমা নাকি ওটিটি যদি বলেন, তাহলেও বলব, দুটো দু'ধরনের। সিনেমাহলে ছবি দেখতে আসুক, সিটি, হাততালি পড়ুক এটা কার না ভালো লাগে। সিনেমা এখনও সকলে পরিবারের সঙ্গে বসেই দেখেন। আর ওটিটি-তে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা যায়। এটাই পার্থক্য। তবে আবার ওটিটি-র জন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসে যেকোনও ভাষার ছবিও দেখা যায়।
রাজনীতিতে এলেন আবার সরেও গেলেন কেন? কাজ পেতে সমস্যা?
পায়েল: সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে। লোকে বলছে কেরিয়ারে ক্ষতি, তবে সেটা একেবারেই নয়। বরং রাজনীতিতে আসার পর আরও বেশি কাজ করেছি।
‘পাঠান’-এর মতো হিন্দি ছবির জন্য বাংলা ছবি দর্শক পাচ্ছে না! কী মত?
পায়েল: আমি মনে করি না। আমিও পাঠান দেখেছি, শাহরুখের ভীষণ ভক্ত আমি। কোনও ছবির জন্য কোনও ছবির ক্ষতি হয় না। ভালো কনটেন্ট হলে সবাই দেখবে। সব ছবিরই আলাদা দর্শক আছে। আর শিল্পী হিসাবে যেকোনও ভাষার ছবি সাফল্য পেলেই আমার আনন্দ হয়। এত বিভাজন থাকা উচিত নয়। বলিউডে যখন খারাপ সময় এল, তখন জন খলনায়ক, সলমন ক্যামিও করছেন, পাঠান-এর মতো ছবি সুপারহিটও হচ্ছে। বলিউডে যখন সকলে একসঙ্গে হাত ধরছেন আমরা কেন পারি না!
সম্প্রতি জন্মদিন গিয়েছে, কীভাবে কাটালেন?
পায়েল: শো ছিল। উত্তরবঙ্গে কেটেছে। আলাদা করে কিছুই হয়নি এবার। (হাসি)