দাদাগিরির মঞ্চে প্রতি দিনই কোনও না কোনও অনন্য ব্যক্তিত্ব গল্প উঠে আসে। তেমনই একজন দক্ষিণ ২৪ পরগণার মেয়ে মধুরিমা সেনগুপ্ত। পেশায় মনোবিজ্ঞানী এবং স্পেশাল এডুকেটর। তাঁর একটি আলাদা পরিচয়ও রয়েছে। আদিবাসী জনজাতি উন্নতি এবং শিক্ষার জন্য কাজ করছেন মধুরিমা। ইতিমধ্যে উপজাতীয় মানুষদের শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন। তাঁর জীবনের এই অজানা গল্প উঠে এসেছে দাদাগিরির মঞ্চে।
সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত মধুরিমা। দাদাগিরির মঞ্চে জানান, আদিবাসী জনজাতি উন্নতি এবং শিক্ষার জন্য কাজ করছেন তিনি। তাঁর টার্গেট আগামী দশ বছরের মধ্যে ১০০টি আদিবাসী স্কুল তৈরি করা। ২০২০ থেকে এই চিন্তাভাবনা মাথায় রেখেছিলেন, স্কুল গড়বেন তিনি। কারণ স্কুল থেকে মাইলস্টোনের শুরু। যে কোনও উন্নতি স্কুলকে কেন্দ্র করে আসে। এরপরই একা উদ্যোগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ৪৫টি গ্রাম সার্ভে করেছিলেন নিজে, দাদাগিরির মঞ্চে দাবি করেন মধুরিমা।
আরও পড়ুন: ৮ কোটির নতুন গাড়িতে আলিয়ার সঙ্গে লং ড্রাইভে রণবীর, গ্যারেজে আর কী কী গাড়ি আছে অভিনেতার
আরও পড়ুন: ওয়েট স্কোয়াড দেখে অবাক! ‘গো দিদি’, ৫২-র সুনয়নার ফিটনেস দেখে আর কী বললেন হৃতিক
এরপরই সেখান থেকে সিদ্ধান্ত, আদিবাসী সমাজে কাজ করবেন। ছত্তিশগড়ের ১২ জন মাওবাদীর আত্মসমর্পনের গল্প জড়িয়ে রয়েছে মধুরিমার জীবনের সঙ্গে। ছত্তিশগড়ের বস্তারের মতো জায়গা, যেখানে এখনও মাওবাদীদের বাস রয়েছে বলে জানা যায়, সেখানে কিছু বন্ধুর সহায়তার যোগাযোগ করে CRPF-কে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিয়ে তিনি বস্তারে, দান্তবরা, সুকমা, বিজাপুর চারটি জায়গায় তিনটি ব্যাটেলিয়ানের (৮০,২২৯ এবং ১৯৮) সঙ্গে কাজ করেন। তাঁদের উদ্যোগ এবং CRPF-এর সহযোগীতায় সেখানে দুটি স্কুল চলে। ৫৯২ জন বাচ্চা সেই স্কুলে পড়েন। যদের সম্পূর্ণ শিক্ষা এবং নিউট্রিশনের দায়িত্ব তারা চালান।
মধুরিমার সাহসীকতার জন্য বদলাচ্ছে আদিবাসীদের জীবন। এত কম বয়সে তাঁকে এত সামাজিক কাজ করতে দেখে রীতিমতো অবাক দাদা সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়। মাত্র ২০ বছর বয়স থেকেই সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত মধুরিমা। তিনি জানান, বিএসসি ফাইনাল ইয়ার পড়ার সময় ২০১৯ সালে একটা ঘটনার সম্মুখীন হন তিনি। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্রী ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই সাইকোলজি অনার্স পাস আউট করেছেন।
আরও পড়ুন: এক মাস আগে ছেলের জন্ম দেন, কেন এত দিন অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর লুকিয়ে রাখেন, মুখ খুললে আরতি
মাত্র ২৫ টাকার চিকেন ললিপপ কিনে, সেটা খারাপ দেখে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর দোকানদারের সঙ্গে বচসার সময় মধুরিমা খেয়াল করেন, একজন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি সেই ললিপপটি মাটি থেকে তুলে খেতে খেতে চলে যান। এরপরই মধুরিমার মনে হয়, যার কাছে আর ২৫ টাকা থাকবে না, সে তো সারা দিনে আর খাবারই খেতে পাবে না। এরপরই মধুরিমা অনুভব করেন, কত মানুষ খাবারের অভাব রয়েছে জীবনে, যার জন্য তারা ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলতে বাধ্য হয়। এরপরই সেখান থেকে তাঁর সামাজিক কাজের ভাবনা শুরু। একসময় কলেজে পড়াতেন তিনি। প্রথমে পাশে কাউকে না পেলেন পরে বন্ধুবান্ধব নিয়ে বাইশ জনের টিম তৈরি হয়। আর সেখান থেকে তৈরি হয় ‘আমরা সবাই রাজা’।