বিগ বস ১৩-র ঘরে হাজির হওয়া অভিনেত্রী শেফালি জরিওয়ালার অকাল মৃত্য়ুর খবর নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। এই বছরের ২৭ জুন মারা যান বলিউডের ‘কাঁটা লাগা’ গার্ল। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই ভেঙে পড়েছেন অভিনেতা পরাগ ত্যাগী। ভালোবেসে পরস্পরের হাত ধরেছিলেন শেফালি-পরাগ। এটা ছিল নায়িকার দ্বিতীয় বিয়ে। দাম্পত্যের ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সকলকে ফাঁকি দিয়ে চলে গিয়েছেন শেফালি।
তবে বিয়ের ১৫ বছর পূর্তিতে প্রয়াত স্ত্রীকে বিশেষ উপহার দিয়েছেন পরাগ। পরীকে হৃদ-মাঝারে খোদাই করলে অভিনেতা। নিজের বুকে শেফালির মুখ ট্যাটু করালেন ‘পবিত্র রিসতা’ খ্যাত অভিনেতা। পরাগ ত্যাগী তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। এই ভিডিওতে পরাগ ত্যাগীকে তাঁর স্ত্রীর মুখের ট্যাটু বুকে খোদাই করাতে দেখল নেটপাড়া। পরাগ ত্যাগী ভিডিওর ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বন্ধুরা, অবশেষে অপেক্ষার অবসান হলো। পঞ্চদশ বিবাহবার্ষিকীতে পরীকে দেওয়া আমার উপহার। ওহ (শেফালি) সর্বদা আমার হৃদয়ে, আমার শরীরের সমস্ত কোষে বিরাজমান আছে। এখন সবাই তা দেখতে পাবে’।
এই ভিডিওতে দেখা যায়, পরাগ ত্যাগী ট্যাটু স্টুডিওতে যান। সেখানে তিনি প্রথমে শেফালির ছবি সিলেক্ট করেন। এরপর ট্যাটু আর্টিস্ট মনদীপকে শেফালির মুখ বুকে আঁকতে দেখা যায়। ট্যাটু করার পর পরাগকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শেফালির মুখ নিজের বুকে দেখে আবেগপ্রবণ হতে দেখা গেল।
এই ভিডিয়ো দেখে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরাও আবেগঘন। একজন নেটিদেন লিখেছেন – পরাগের মতো পুরুষ খুব কমই আছে। আরেকজন অনুরাগী লেখেন- আমি যদি আমার জীবনে এমন একজন মানুষকে খুঁজে পেতাম। তৃতীয় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন- এই ভিডিওটি দেখার পর চোখে জল চলে এসেছে।
এই দম্পতির প্রথম দেখা হয়েছিল ২০১০ সালের ১২ অগস্ট এবং ঠিক তিন বছর পরে ২০১৪ সালে একই তারিখে গাঁটছড়া বাঁধেন দুজনে। চলতি মাসে বিবাহবার্ষিকীর দিন এক বিশেষ পোস্টে শেফালির সঙ্গে কাটানো বিশেষ মুহূর্তের ঝলক ভাগ করে নিয়েছিলেন পরাগ। একটি ছবিতে পরাগ ও শেফালিকে তাদের বিয়ের আংটি প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। তিনি লেখেন, ‘আমার ভালবাসা, আমার জান, আমার পরী….. ১৫ বছর আগে যখন আমি তোমাকে প্রথমবার দেখেছিলাম, আমি জানতাম যে তুমি একমাত্র এবং ১১ বছর আগে তুমি আমাকে একই তারিখে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে। আমার জীবনে আসার জন্য তোমাকে যথেষ্ট ধন্যবাদ জানাতে পারিনি এবং (তুমি) আমাকে নিঃশর্তভাবে অপরিসীম ভালবাসা দিয়েছিলে আমি হয়তো তার যোগ্য ছিলাম না’।
শেফালির স্বামী আরও লেখেন, ‘আপনি আমার জীবনকে এত সুন্দর এবং রঙিন করে তুলেছেন, আনন্দে কীভাবে জীবন কাটাতে হয় তা শিখিয়েছিলে… আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তোমাকে ভালবাসি পরী আর তার পরেও। ২০১০ সালের ১২ অগস্ট থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত। চিরকাল একসাথে’।
রিমিক্স ট্র্যাক ‘কাঁটা লাগা’ মিউজিক অ্যালবামে কোমর দুলিয়ে খ্যাতি অর্জন করা শেফালি গত ২৭ জুন মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান। পরাগ তাঁকে বেলভিউ মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। চর্চা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রীর। তবে মৃত্যুর কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছিল মুম্বই পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মৃত্যুর কারণ 'সংরক্ষিত' রয়েছে। শোনা যায় অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট চলছিল শেফালির। তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবেই নাকি বিকল হয় নায়িকার হৃদযন্ত্র, তবে সেই নিয়ে পরিবার বা পুলিশের তরফে কিছু প্রকাশ্যে আনা হয়নি।