আর মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধান। শিয়রে এসে পড়েছে বিধানসভা নির্বাচন।গড় বাঁচাতে পারলেন না ‘ভাইজান’। প্রার্থী তো দিতে পারলেনই না—উলটে বরাদ্দ চারটি আসনও বামেদের ফিরিয়ে দিল আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)! পর্বতের মূষিক প্রসব হল কিনা, তা নিয়েই ইতিমধ্যেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সোমবার ২০ জনের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছেন আব্বাস সিদ্দিকি।এই প্রসঙ্গে এক ভিডিয়োবার্তায় আব্বাস সাফাই দিযে বলেন, ‘এই চারটি আসনে আমরা হয়ত জয়ী হতে পারতাম। কিন্তু বামেরা দাঁড়ালে হয়ত ফলাফল অনেক ভালো হবে। আমরা চাই সমস্ত আসনে সংযুক্ত মোর্চাকে বিপুল ভোটে জেতাতে।’ তবে ভোটের আগেই হঠাৎ তাঁর এই আসন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে পর্বতের মূষিক প্রসব বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।বিগত কয়েকমাস ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ফুরফুরা শরিফের এই পীরজাদা। উল্কার গতিতে তাঁর রাজনীতিতে আগমন নজর কেড়েছিল পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদদের।এবারের ভোটে তিনিই যে 'কিং মেকার' হতে চলেছেন, তা প্রায় ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন তিনি।ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রণহুঙ্কার দিয়ে আব্বাস জানিয়েছিলেন, বামেদের কাছ থেকে তাঁরা ৩০টি আসন চেয়ে নিয়েছেন। অন্য দিকে, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে।তবে সম্প্রতি এবিপি আনন্দের এক সাক্ষাৎকারে আব্বাস জানান, পরিবারের যে সব সদস্যদের তিনি প্রার্থী হিসেবে ধরেছিলেন, শেষ মুহূর্তে তাদের মধ্যে অনেকেই সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছেন। সেই কারণেই আইএসএফ প্রার্থী দিতে পারেননি বলে মত দলের একাংশের। শেষ মুহূর্তে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, ‘আমরা চারটি আসন ফিরিয়ে দিচ্ছি বামেদের।'অন্যদিকে, ২৬টি আসনের মধ্যে এখনও ২০টি আসনের নামের তালিকা প্রকাশ করেত পেরেছে আইএসএফ। রবিবার আইএসএফের তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ২৬টি আসনে প্রার্থী থাকলেও ছ'টি আসনের নামের জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। ফাঁকা আসনগুলির মধ্যে হল - ক্যানিং পূর্ব, জাঙ্গিপাড়া, মধ্যমগ্রাম, হাড়োয়া, ময়ূরেশ্বর ইত্যাদি। তাছাড়াও বামেদের তরফে আইএসএফকে ভাঙড় আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সেখানে কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি আব্বাসের দল। এ ব্যাপারে অবশ্য আব্বাস বলেছেন, ‘বাকি ছ'টি আসনে শীঘ্রই প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নব্য গড়া এই দলের জেলাস্তরের সংগঠন এখনও অতটা মজবুত হয়নি। কোনওরকমে প্রার্থী দাঁড় করাতে পারলেও বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠনের ক্ষমতা ভাইজানের দলের এখনও হয়নি বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।