হাতে আর বেশি সময় নেই। তাই জোরদার প্রচার করতে শুরু করেছে শাসক–বিরোধী দলগুলি। আগামী ৮ জুলাই গ্রামবাংলা জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। এবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে বেরিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। জনতার ঢল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সমর্থনও উঠে আসে। ফলে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বিজেপি সাংসদকে। যদিও তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ওখান থেকে সরে পড়েন।
ঠিক কী ঘটেছে সিঙ্গুরে? পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাতে মানুষ বিজেপিকে ভোট দেন তাই আবেদন করতে আজ, রবিবার সিঙ্গুরে আসেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তখন সেখানে উপস্থিত আমজনতা প্রশ্ন করেন, ‘শুধু ভোটের সময়ই কেন আসেন সাংসদ? অন্য সময় কেন এলাকায় দেখা মেলে না? আপনারা আগে কেন মানুষের খোঁজ নেননি?’ এইসব প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে যান লকেট। তিনি বুঝতে পারেন তৃণমূলের নবজোয়ারের এবং সরকারের সামাজিক প্রকল্প পেয়ে মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তিনি সব দোষ তৃণমূল কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।
কেমন কথোপকথন হয় সাংসদ–জনতার? বিজেপি প্রার্থীদের জন্য ভোট চাইতে আজ সিঙ্গুরের আথালিয়া গ্রামে যান সাংসদ লকেট। তখন সেখানে ভিড় করেন আমজনতা। একশো দিনের টাকা থেকে আবাস যোজনার টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। বিস্তর অভিযোগ শুনে লকেট সুকৌশলে দায়ী করেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। তখনই এক বৃদ্ধ সাংসদকে চোখা চোখা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘নির্বাচনের সময় এসে এসব বললে তো হবে না। আগে থেকে এসব খোঁজখবর নিতে হয়। শুধু ভোটের সময় এলে হয় না।’ তখন লকেট আবার বলেন, ‘এখন তৃণমূলের সরকার চলছে।’ এই কথা বলা মাত্রই তেতে ওঠেন বৃদ্ধ। আর সাংসদকে পাল্টা বলেন, ‘হাজার বার তৃণমূল কংগ্রেস সরকার চালাক। কিন্তু বিজেপি, সিপিএমের তো এগুলি দেখার দরকার ছিল। শুধু ভোটের সময় খোঁজ নিয়ে কী হবে?’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকে নবান্ন–রাজ্য নির্বাচন কমিশন, চিঠি জেলাশাসকদের
আর কী জানা যাচ্ছে? এখানের বিধায়ক বেচারাম মান্না। তিনি আবার রাজ্যের মন্ত্রী। এখানের সব মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী থেকে সব সামাজিক প্রকল্প বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। সুতরাং এখানের মানুষ রাজ্য সরকারের কাজে খুশি। তাই এই ক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই ক্ষোভের বিষয়ে লকেট বলেন, ‘এটাই স্বাভাবিক। ওঁরা ভাবছেন, সাংসদ আছে সব পেয়ে যাবে। কিন্তু তাঁরা জানেন না যে, সব কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আসে। গ্রামবাসীদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। আমাদের দল সরকারে না আসা পর্যন্ত বিজেপি সাংসদরা কাজ করতে পারছি না। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আসলে আমাদের উপর নয়। ক্ষোভের কারণ, এখানে উন্নয়ন হয়নি।’