বিশ্বকাপ চলাকালীনই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সভাপতি তথা বিসিসিআই সচিব জয় শাহকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গা। একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তিনি এমনও বলেছিলেন, জয় শাহই নাকি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনা করছেন। এই আবহে এবার খোদ বিসিসিআই সচিবকে ফোন করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমসিংহে। জয় শাহের বিরুদ্ধে ওঠা বিতর্কিত সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে 'দুঃখ প্রকাশ' করলেন রণিল। দ্য হিন্দুর রিপোর্ট অনুযীয়, গত ১৭ নভেম্বর জয় শাহকে ফোন করেছিলেন রণিল বিক্রমসিংহে। জানা যায়, জয় শাহকে রণিল জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে লঙ্কার সংসদে ক্ষমা চেয়েছেন রণিল নিজে এবং তাঁর মন্ত্রী কাঞ্চনা বীজশেখরা। উল্লেখ্য, বর্তমানে অর্জুন রণতুঙ্গা নিজে শ্রীলঙ্কার একজন সাংসদ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার সংসদে দাঁড়িয়ে সেদেশের মন্ত্রী বীজশেখরা বলেন, 'আমরা সরকার হিসেবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান জয় শাহের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের ত্রুটির জন্য তাঁকে বা অন্য কোনও দেশের দিকে আঙুল তুলতে পারি না। এই কাজটা অত্যন্ত অন্যায়ের।' উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে বাজে খেলার পরপরই দেশের ক্রিকেট বোর্ড ভেঙে দিয়েছিল সেদেশের সরকার। এদিকে ক্রিকেট দলের বাজে খেলার নেপথ্য কারণ খুঁজে বের করতে অর্জুন রণতুঙ্গার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন সেদেশের ক্রীড়ামন্ত্রী রশান রাণাসিংহে। তবে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্ট বোর্ডকে পুনর্বহাল করে এবং বশানের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়। এরপরই ভারতীয় বোর্ড সচিব জয় শাহকে আক্রমণ শানান রণতুঙ্গা।
১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দাবি করেছিলেন, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট আসলে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। এর জন্য যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ। শ্রীলঙ্কার এক সাংবাদিক সমরাবিক্রমাকে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বিস্ফোরক এই দাবি করেন অর্জুন। প্রাক্তন ক্রিকেটার দাবি করেন, 'শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে জয় শাহ নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বিসিসিআই-এর সভাপতি করেছিলেন এবং রাজনীতিতে যোগ দিতে বলেছিলেন। সৌরভ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাই ওঁকে সরিয়ে দেন জয় শাহ। জয় শাহ এমন একজন, আপনি যদি এসব কথা ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন, তাহলে তিনি ওঁর বাবার প্রভাব খাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সর্বনাশ করে ছাড়বেন। শুধু বাবা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার কারণেই ওঁর এত ক্ষমতা। লঙ্কান বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে জয় শাহের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে বিসিসিআই-এর ধারণা, ওরা এসএলসি-কে চাইলেই পদদলিত এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ভারতের এক ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। ওঁর চাপে এসএলসি তছনছ হয়ে যাচ্ছে।'