মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (MCA)-এর প্রতি রবি শাস্ত্রীকে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সম্মান জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। গত মাসে প্রাক্তন ক্রিকেটার ও ক্রিকেট কর্তাদের নামে এমসিএ ওয়াংখেড়ের গ্যালারির কিছু অংশের নামকরণ করা হয়েছিল। ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক রোহিত শর্মা, প্রাক্তন অধিনায়ক অজিত ওয়াদেকর এবং প্রাক্তন বিসিসিআই সভাপতি শরদ পওয়ারের নামে নামকরণ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এই আইকনিক স্টেডিয়ামে গ্যালারির অংশ রয়েছে সুনীল গাভাসকর, সচিন তেন্ডুলকর এবং দিলীপ বেঙ্গসরকারের নামেও। এবার প্রাক্তন মুম্বই অধিনায়ক শিশির হাতাঙ্গাডি এমসিএকে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছেন, রবি শাস্ত্রীর নামে কিছু একটি অংশের নাম রাখার জন্য। তাঁর মতে, শাস্ত্রীকে সম্মান না দেওয়া এক ‘বড় রকমের বিস্ময়’ এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ অবদানের অস্বীকৃতি।’
‘এই ভুল শুধরে নিন’
চিঠিতে হাতাঙ্গাডি লিখেছেন, ‘আমি বিস্মিত এবং উদ্বিগ্ন, যেভাবে রবি শাস্ত্রী—ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক, অলরাউন্ডার এবং কোচ—এর নাম কোনও অংশে রাখা হয়নি। তাঁর কৃতিত্ব তো সুবিদিত। ছয় বলে ছয় ছক্কার সেই প্রথম-শ্রেণির ম্যাচ হোক, বা একজন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে তাঁর অবদান—সবটাই ভারতের আধুনিক ক্রিকেটকে গড়ার ক্ষেত্রে অনন্য।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এই বাদ দেওয়া, ইচ্ছাকৃত হোক বা না হোক, মুম্বই ও ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে অস্বীকার করার শামিল। আমি পরিসংখ্যান টানতে চাই না, কারণ শাস্ত্রীর অবদান শুধু সংখ্যায় নয়, তাঁর প্রভাবেও প্রতিফলিত।’
‘শুধু পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক বক্তব্য নয়’
চিঠিতে MCA-কে অনুরোধ জানিয়ে হাতাঙ্গাডি লেখেন, ‘ক্রিকেটের ইতিহাস ও ব্যক্তিত্বদের সম্মান জানানো আমাদের ভবিষ্যতের ভিতকে আরও মজবুত করবে। এমসিএ যেন এই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে। আমি প্রশাসনের ভূমিকা ও সম্মান বজায় রেখে অনুরোধ করছি।’ তিনি শেষে উল্লেখ করেন, ‘এটা একটি পর্যবেক্ষণমাত্র, কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য নয়।’
রবি শাস্ত্রীর অবদান-
৮০টি টেস্ট ও ১৫০টি ওয়ানডে খেলেছেন ভারতের হয়ে।
৬৯৩৮ রান ও ২৮০ উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন।
১৯৮৫ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অব ক্রিকেটে ভারতকে জেতাতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ও টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এক ওভারে ছয়টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন রানজি ট্রফির এক ম্যাচে, স্যার গ্যারি সোবার্সের রেকর্ড স্পর্শ করে।
ভারতের কোচ হিসেবে দুইবার অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিতেছেন (২০১৮–১৯ ও ২০২০–২১)।
২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে সেমিফাইনালে তুলেছিলেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর নাম ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে জায়গা না পাওয়া নিঃসন্দেহে অনেকে ‘অবিচার’ বলেই মনে করছেন।