প্রায় ৩০ বছর ধরে যে মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, ২০২৪ সালের ২৯ জুন সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এল রাহুল দ্রাবিড়ের জীবনে। নিজের দীর্ঘ ক্রিকেট কেরিয়ারে তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছিলেন, ভারতের কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপে (২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে না ধরে) দায়িত্ব পালন করেছিলেন - কিন্তু বিশ্বকাপজয়ীর পদকটা এতদিন অধরা ছিল। ছুঁতে পারেননি বিশ্বকাপের ট্রফিটা। আর শনিবার বার্বাডোজে সেই বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে পাওয়ার পরে বাঁধনছাড়া উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলেন রাহুল দ্রাবিড়। জীবনে কখনও এরকমভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। এমনভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, যে তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল, এটা সত্যিই রাহুল দ্রাবিড় তো? নাকি এই মানুষটা আসলে বিরাট কোহলি? মানুষটা সত্যিই ভারতীয় দলের হেড কোচ দ্রাবিড়। যিনি ৩০ বছরের প্রতীক্ষার পরে বিশ্বকাপটা ছুঁতে পারলেন। নিজেকে বলতে পারছেন, ‘আমি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।’
দ্রাবিড়ের সেলিব্রেশনটা কেমন ছিল?
শনিবার (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার হাতে বিশ্বকাপের ট্রফি তুলে দেওয়ার পরে টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফরা উচ্ছ্বাসে ভেসে যান। তারইমধ্যে বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে দ্রাবিড়ের দিকে এগিয়ে আসেন বিরাট। তিনি দ্রাবিড়ের হাতে ট্রফিটা তুলে দেন। তারপরই দ্রাবিড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আবেগের বিস্ফোরণ ঘটে। দু'হাতে ট্রফিটা তুলে নিয়েই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। ট্রফিটা উপরের দিকে তুলে সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন।
নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়ে যেন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন দ্রাবিড়। চিৎকার করতে থাকেন। তারপর এক হাতে ট্রফি ধরেন। অন্য হাতটা মুষ্টিবুদ্ধ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। মুখের অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল যে তিনি বলছেন ‘কাম অন’। তারপর পাশে থাকা কোনও একজন সাপোর্ট স্টাফকে জড়িয়ে ধরেন। জড়িয়ে ধরেন বিরাটকেও। তারপর ট্রফিটা অন্যদের হাতে দিয়ে দেন।
ভারতের হেড কোচ হিসেবে শেষ ‘মিশন’ ছিল দ্রাবিড়ের
২০২৩ সালের বিশ্বকাপের পরই ভারতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে দ্রাবিড়ের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে তাঁকে বুঝিয়ে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের হেড কোচ থাকতে রাজি করিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কর্তারা।
‘আমি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ বলতে পারবেন দ্রাবিড়
আর নিজের ‘লাস্ট ড্যান্সে’ (আপাতত অবশ্যই) বিশ্বকাপ জিতে ভারতীয় দলের হেড কোচের পদকে বিদায় জানালেন দ্রাবিড়। যিনি এবার সম্ভবত ক্রিকেট মাঠ থেকে দূরে থাকবেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন। ছেলে শমিতের খেলা দেখার জন্য হয়ত কোনও অনামী মাঠে যাবেন। কিন্তু যেখানেই যান না কেন, দ্রাবিড় সেই দুটি ‘ম্যাজিকাল’ শব্দ বলতে পারবেন, ‘আমি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’